বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যায় হঠাৎ করে উল্লম্ফন হয়েছে। গতকাল একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ জন, যা এখন পর্যন্ত একদিনে আক্রান্ত হওয়া সংখ্যার হিসেবে সবচেয়ে বেশি।
৩৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এই পরিমান রোগী শনাক্ত হলো।
আক্রান্ত আঠারো জনের মধ্যে বারো জনই ঢাকার বাসিন্দা।
এর আগে একদিনে সবচেয়ে বেশি ৯ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন।
গত কয়েকদিন ধরে পরীক্ষা সংখ্যা বাড়ানোর পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
গত ২৪ ঘন্টায় নুতন একজন মারাও গেছেন। এনিয়ে কোভিড-১৯এ মোট ৯ জন মারা গেলেন বাংলাদেশে।
মৃত এই ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জের। তিনি ৫৫ বছর বয়সী একজন পুরুষ।
এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৩ জন সুস্থ হয়েছেন বলেও জানানো হয়। এনিয়ে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হলেন ৩৩ জন।
বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ৪৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে।
এই ৪৬ জনের মধ্যে ৩২ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং বাকি ১৪ জন বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আইইডিসিআরের পরিচালক জানান, বর্তমানে দেশের ১৪টি কেন্দ্রে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় মোট ৩৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
৮ই মার্চ বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার কথা জানায়।
এখন পর্যন্ত ২৮ দিনে নিশ্চিত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৮৮ জন।
১৮ই মার্চ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে প্রথম ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
২৫শে মার্চ প্রথমবারের মত রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগ জানায় যে বাংলাদেশে সীমিত আকারে কম্যুনিটি ট্রান্সমিশন বা সামাজিকভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে।
রবিবার মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান নতুন করে আক্রান্ত ১৮ জনই আগে থেকে আক্রান্ত কোনো না কোনো ক্লাস্টার থেকে আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১৮ জনের মধ্যে ১২ জনই ঢাকার বাসিন্দা।
এখন আইইডিসিআর বলছে, অন্ততঃ পাঁচটি ক্লাস্টারে এই কম্যুনিটি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।
এগুলো হচ্ছে মাদারীপুরের শিবচর, গাইবান্ধা, নারায়নগঞ্জ, ঢাকার বাসাবো, টোলারবাগ।
এসব এলাকায় আগে থেকে বিদ্যমান লকডাউন বা বিধিনিষেধ আরো জোরদার করা হয়েছে।
ঢাকার মধ্যে বাসাবোতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৯ জন রোগী পাওয়া গেছে।
টোলারবাগে পাওয়া গেছে ৬ জন রোগী।
আর বৃহত্তর মিরপুর এলাকায় পাওয়া গেছে ৫ জন রোগী।
মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, জনসমাগম এড়িয়ে না চললে এই কম্যুনিটি সংক্রমণ বৃহত্তর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।