চরম খাদ্য সংকটে ভুগছেন ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের শতাধিক রিকশা চালক, অটো চালক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের পরিবারগুলোতে খাদ্যভাব দেখা দিয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোনো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি তাদের ঘরে। ফলে তাদের আগামী দিনগুলো নিয়ে শঙ্কিত তারা।
আরও পড়ুন: দেশে আরও ৫ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ১৮২
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার রাম দিয়া নালী ইউনিয়নের নালী বাজারে মোট দোকান রয়েছে ৮৬টি। এর মধ্যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছে ১৬ জন। যারা দিন এনে দিন খায়। এসব ব্যবসায়ীর মধ্যে চা বিক্রেতা ৯ জন, নরসুন্দর ৩ জন, টেইলার্স ব্যবসায়ী ৪ জন।
এ ছাড়াও রিকশা, ভ্যান ও অটো চালক রয়েছেন প্রায় ৩৮ জন। এদের মধ্যে দুজন সরকারি সহায়তা পেয়েছেন। বাকিরা এখনো অনিশ্চত তারা আদৌ কোনো সহায়তা পাবেন কিনা। আর না পেলে সামনের দিনগুলো তাদের কিভাবে চলবে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে চাল আত্মসাত : স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার
ইউনিয়নের বাঠইমুড়ি বাজারে ৬ জন চা বিক্রেতাসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছে প্রায় ২০ জন। এছাড়া রিকশা, ভ্যান ও অটো চালক আছেন অর্ধ শতাধিক। যদিও এদের মধ্যে প্রায় ৩০ জন সরকারি-বেসরকারিভাবে সহায়তা পেয়েছেন। কিন্তু সেগুলোও পর্যাপ্ত নয়।
উভাজানী গ্রামের অটো চালক সোনাই বলেন, তার ঘরে কিছু চাল আছে। হয়ত আরও ১৫ দিন চলবে। কিন্তু তার কাছে কোনো নগদ টাকা না থাকায় তিনি কাঁচা মরিচ পর্যন্তও কিনতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: এবার জঙ্গল থেকে সরকারি চাল উদ্ধার, খাদ্য নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন!
বাঠইমুড়ি বাজারের চা বিক্রেতা রজব আলীর ঘরে কোনো খাবার নেই। বিষয়টি তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন। তবে এখনো পর্যন্ত তার ঘরে কোনো খাদ্য সামগ্রী পৌঁছেনি। ফলে বাধ্য হয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তার স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করতে গেছেন।
খাদ্য সংকটে চরম কষ্টে দিন কাটছে নালী বাজারের চা বিক্রেতা রাধু সরকার ও রঞ্জিতের। প্রতিবন্ধী রিকশা চালক ঈমান, বাঠইমুড়ির রিকশা চালক আসরুদ্দিনের কষ্টের যেন শেষ নেই।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মধু বলেন, রোববার উপজেলা অফিসের মিটিংয়ে আমি বিষয়টি উত্থাপন করেছি। যদি সরকারি সহায়তা আসে, তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব।
এ বিষয়ে জানতে মানিকগঞ্জ জেলার জন্য জরুরি খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য ও সেবার জন্য খোলা হট লাইনে ফোন করা হলে রোবার স্কাউটসের সদস্য অনিক হোসেন জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারি ২২৬ বস্তা চালসহ ৭ জন আটক
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসকে পর্যায়ক্রমে একাধিকবার কল করা হলে তার ফোন ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরে কথা হয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইরিন আক্তার বলেন, দু’একদিনের মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ত্রাণ সামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। তবে কতজনকে দেওয়া হবে তা বলতে পারেন নি তিনি।