করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে খাদ্যের সংকট হবে না বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমাদের খাদ্যের অভাব নেই, অভাবও হবে না। সেই সাথে বলব আমরা কৃষির জন্য, কৃষি উৎপাদন যাতে অব্যাহত থাকে প্রথমে আমরা পাঁচ পার্সেন্ট সুদে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলাম ওটাকে কমিয়ে চার পার্সেন্ট ইন্টারেস্টে আমরা ঋণটা দেব।’
তিনি বলেন, ‘তাছাড়াও আপনারা জানেন যে বর্গাচাষীদের আমরা বিনা জামানতে ঋণ দিয়ে থাকি। কৃষকদের আমরা ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছি, ভর্তুকির টাকাটা সরাসরি সেখানে গিয়ে পৌঁছায়, প্রায় দুই কোটি কৃষক এই সুযোগ সুবিধাগুলি পায়। তাছাড়া সার, বীজ যেগুলো দরকার তা সময় মতো পৌঁছে দেওয়া।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন যেহেতু ধান কাটার মৌসুম, আমাদের যারা দিনমজুর কাজ পাচ্ছেন না তাদের জন্য একটা সুযোগ। তারা কিন্তু অনেকেই ধান কাটতে যেতে পারেন বা সকলেরই যাওয়া উচিত। এখানে উচু-নিচুর ব্যাপার না, কাজ ঠিক করা আমি মনে করি এটা সকলেরই দায়িত্ব। ছাত্র-শিক্ষক বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আমি বলব তারাও যেন একটু এগিয়ে আসে। সকলে মিলে এই ধানটা যদি আমরা তুলতে পারি, আল্লাহর রহমতে আমাদের খাবারের কোনো অভাব হবে না।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া ইতিমধ্যে আমি ঘোষণা দিয়েছি এক খণ্ড জমিও যে অনাবাদী না থাকে কারণ বিশ্বব্যাপী যে অবস্থাটার সৃষ্টি হচ্ছে তাতে ইতিমধ্যেই আপনারা জানেন জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল থেকে শুরু করে অনেকেই বলছেন বিশ্বে ব্যাপক হারে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কিন্তু আমাদের তো মাটি আছে, উর্বর মাটি। আমাদের মানুষ আছে। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ কাজেই আমাদের এই মাটিতে যদি আমরা ফসল ফলাই, তরি-তরকারি, ফলমূল যে যা পারেন সে টবে করেন, ছাদে করেন বা জমিতে করেন। সবাই কিছু না কিছু করেন, আমাদের দেশে যেন খাদ্যের অভাব না হয়।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা যেন মানুষকে দিতে পারি। ইতিমধ্যে আপনারা জানেন মালদ্বীপে আমরা কিছু খাবার পাঠিয়েছি, কুয়েতে আমরা কিছু ওষুধ পাঠিয়ে দিয়েছি।’
কেউ যাতে খাদ্য সংকটে না থাকেন সেজন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি আমাদের পরিবারে কেউ যেন খাদ্যে কষ্ট না পায়, কারণ আমি নিজেও জানি, অনেক সময় আমার কাছে এসএমএস করে যে আপা আমার ঘরে খাবার নাই। সাথে সাথে আমরা কিন্তু উদ্যোগ নেই। শুধু ওই ঘরটাই নয়, আশেপাশেও কেউ কষ্টে আছে কিনা- হয়তো হাত পেতে পারবে না কিন্তু তাদের ঘরে খাবার নেই, চাইতে পারছে না, তো তোদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া- এবং সেই ব্যবস্থাটাও কিন্তু আমরা নিয়েছি এবং নিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রীর সাথে আজকেই আমি কথা বলেছি যে ৩৩৩ বা এই ধরনের যে হটলাইনগুলি আছে তাদের সাথে একটা সংযোগ রেখে এই ধরনের পরিস্থিতিতে যারা পড়বে তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার যে ব্যবস্থা সেটা ইনশাল্লাহ আমরা করব।’