মুসলমান রোগীদের ভর্তি নিষিদ্ধ করার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিপাকে ভারতের উত্তরপ্রদেশের এক বেসরকারি হাসপাতাল। ইতিমধ্যেই ওই হাসপাতালের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
যে হাসপাতালটি নিয়ে এই বিতর্ক, সেটি হচ্ছে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মীরাটের ভ্যালেন্টিস ক্যান্সার হাসপাতাল। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি স্থানীয় সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞাপন দেয়। তাতে বলা হয়, মুসলমান রোগীদের করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হলেই তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে।
একই বিজ্ঞাপনে হিন্দু এবং জৈন সম্প্রদায়ের বিত্তবানদের ‘কঞ্জুস’ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর করোনা মোকাবিলায় গঠিত তহবিলে অনুদান দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে হাসপাতালে ভর্তির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে অনুদান দেওয়ার সম্পর্ক কী তা স্পষ্ট নয়।
এই বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার পরে তুমুল সমালোচনার মুখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও একটি বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে। তবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে ওই বেসরকারি হাসপাতালের মালিকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের হয়েছে।
ভারতের অন্যতম জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ প্রায় ২০ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯৭০ এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। রাজ্যের অন্তত ১৫০ এলাকাকে হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মীরাটে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৭০ জন করোনা রোগী পাওয়া গিয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। সেই মীরাটের হাসপাতালের বিরুদ্ধেই ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
ভ্যালেন্টিস হাসপাতালের বিজ্ঞাপনে দিল্লির তাবলিগ ই জামাতের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক আগেই বলেছে, দেশের করোনা আক্রান্তদের ৩০ শতাংশই দিল্লির নিজামুদ্দিনের জমায়েতের সঙ্গে যুক্ত। ওই জমায়েতে অংশ নেন কমপক্ষে ৯ হাজার মানুষ। এর মধ্যে আবার কয়েক হাজার মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সফর করেছেন।