বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৭টি পণ্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পণ্যের মান প্রণয়ন এবং নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)।
আজ শনিবার (২৫ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসটিআই জানিয়েছে, খোলাবাজার থেকে নজরদারি অভিযান পরিচালনা করে পণ্য কিনে বিএসটিআই ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে বাংলাদেশ মানের (বিডিএস) চেয়ে নিম্নমানের এসব পণ্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং মান উন্নয়নের পর পুনরোনমোদনের ছাড়া বিক্রিয় বিতরণ ও বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি বাজার থেকে পণ্যগুলো প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রমজান উপলক্ষে নজরদারির মাধ্যমে সংগৃহীত নিম্নমানের পণ্যের প্রতিষ্ঠান, পণ্য এবং ব্র্যান্ডের নাম:
এতে বলা হয়, রমজান উপলক্ষে সার্ভিলেন্সের মাধ্যমে পরীক্ষায় যেসব পণ্য নিম্নমানের প্রমাণ হয়েছে সেগুলো হলো- চট্টগ্রামের কল্পনা কমোডিটিস কোম্পানির এপি-১ ব্র্যান্ডের ঘি, চট্টগ্রামের চিটাগাং ফ্লাওয়ার মিলসের এ্যাংকর ব্র্যান্ডের সুজি, যশোরের আল আমিন বেকারি অ্যান্ড কনফেকশনারির আল আমিন ব্র্যান্ডের লজেন্স, ঢাকার মি. বেকার অ্যান্ড পেস্ট্রি শপের মি. বেকার ব্র্যান্ডের বিস্কুট, ফরিদপুরের সেফ ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবা ব্র্যান্ডের চিপস (পটেটো), কক্সবাজারের রিয়াদ সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বঙ্গ ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ, রাজশাহী মিষ্টান্ন ভান্ডারের আর এম ব্র্যান্ডের ঘি, বগুড়ার জিনিয়াস সেফ ফুড অ্যান্ড কনজ্যুমারের জিনিয়াস স্পেশাল ব্র্যান্ডের ঘি, সয়াবিন তেল ও হলুদের গুঁড়া; বগুড়ার সীমা ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেডের সীমা ব্র্যান্ডের সুজি, গাজীপুরের জি এম ফুড প্রোডাক্টসের এবি-১ ব্র্যান্ডের বাটার অয়েল ও রাজা ব্র্যান্ডের ঘি, গাজীপুরের শাহ ইন্টারন্যাশনাল ফুড প্রোডাক্টসের নুরজাহান ব্র্যান্ডের বাটার, শরীয়তপুরের মাদার ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টসের বেস্ট-১ ব্র্যান্ডের ঘি, মৌলভীবাজারের শাহী ফুড প্রোডাক্টসের শমসের নগর শাহী ব্র্যান্ডের ঘি এবং একটি নাম ঠিকানাবিহীন ড্রামের লুজ সয়াবিন তেল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএসটিআই পণ্যের মান সনদ প্রদানের পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানগুলো মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করছে কি-না তা যাচাই করার জন্য বছরব্যাপী নিয়মিত সার্ভিলেন্স অভিযান চালানোর মাধ্যমে খোলাবাজার থেকে পণ্য সংগ্রহ করে বিএসটিআই ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে থাকে। রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় অসাধু ব্যবসায়ী-বিক্রেতারা যেন ভেজাল বা নিম্নমানের খাদ্যপণ্য ও পানীয় প্রস্তুত এবং বিপণন থেকে বিরত থাকে সে লক্ষ্যে আগে থেকেই সার্ভিলেন্স জোরদার করা হয়। এ বছর রমজান মাসে ভেজালমুক্ত পণ্য সরবরাহ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত দুই মাসে ইফতার ও সেহরির সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ধরনের খাদ্য পণ্য সার্ভিলেন্স টিমের মাধ্যমে খোলাবাজার থেকে সংগ্রহপূর্বক বিএসটিআইয়ের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়েছে। ৫২১টি নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা করা হয় ২৫৩টি। এর মধ্যে ২৩৬টি নমুনা মানসম্মত প্রমাণ হয় এবং ১৭টি নমুনা নিম্নমানের সাব্যস্ত হয়। পরীক্ষাধীন রয়েছে আরও ২৬৮টি নমুনা।
উল্লেখ্য যে, দেশে উৎপাদিত পণ্য ও সেবার মান প্রণয়ন এবং মানোন্নয়নের পাশাপাশি আমদানিকৃত পণ্যের মান সংরক্ষণও বিএসটিআইয়ের অন্যতম দায়িত্ব। প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম কাজ হচ্ছে, প্রসেসড ফুড এবং শিল্পজাত পণ্যের মান প্রণয়ন, পরীক্ষণ ও মানসনদ প্রদান। সরকার বিভিন্ন সময়ে এসআরও জারির মাধ্যমে ১৮১টি পণ্যকে বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক মানসনদের আওতাভুক্ত করেছে। এসব পণ্যের মানসনদ প্রদানের পাশাপাশি ক্রেতা-ভোক্তার বৃহত্তর স্বার্থে এ প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে পণ্য ও সেবার গুণগতমান বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করে আসছে।