বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, করোনার পরীক্ষা ও চিকিৎসাকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্য খাতে সীমাহীন চুরি, দুর্নীতি, প্রতারণা, জালিয়াতি ও অব্যবস্থাপনা গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার লাগামহীন নৈরাজ্যকেই বারবার সামনে নিয়ে আসছে। দুর্নীতি আর প্রতারণার এসব ঘটনা দেশের মানুষকে চরমভাবে হতাশ ও বিক্ষুব্ধ করে তুলছে। গোটা স্বাস্থ্য খাত এখন দুর্নীতির বড় ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কতিপয় চিহ্নিত দুর্নীতিবাজরা মহামারির দুর্যোগকে তাদের জন্য সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে।
আজ রোববার (১২ জুলাই) রাজনৈতিক পরিষদের অনলাইন মিটিংয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদেই গত চার-পাঁচ মাসে অবিশ্বাস্য সব দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা ভুয়া সার্টিফিকেট ও প্রতারণার সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি জানলেও সে ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেয়া, জিকেজি’র নজিরবিহীন প্রতারণা, স্বাস্থ্য খাতে এক ঠিকাদার মিঠুরই ৯০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ করোনার পরীক্ষা ও চিকিৎসা সামগ্রী কেনাকাটায় অবিশ্বাস্য চুরি, দুর্নীতি ও জালিয়াতির অসংখ্য ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও এসবের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত সরকারের কার্যকর কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
অনলাইন সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, নজিরবিহীন এসব জালিয়াতি, প্রতারণা, করোনার পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্টের কারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তলানিতে ঠেকেছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী অভিবাসী বাংলাদেশিদেরকে ‘মানববোমা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বিমান যাত্রী বাংলাদেশিদেরকে ইতালিতে নামতেই দেয়া হয়নি। ইতালির পথ অনুসরণ করে জাপানসহ আরও কয়েকটি দেশ বাংলাদেশিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এর মধ্যে কুয়েতে সরকারদলীয় সাংসদ পাপুলকে মানব পাচারসহ নানা অভিযোগে গ্রেফতার ও জেলে প্রেরণের ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ গুরুতর ভাবমূর্তি সংকটে নিপতিত হয়েছে। এসব ঘটনা বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় নিয়ে আসবে।
অনলাইন সভায় নেতৃবৃন্দ স্বাস্থ্য খাতসহ সকল চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও জালিয়াতদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার, উপযুক্ত বিচার ও আত্মসাৎকৃত অর্থ উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদেরও অবিলম্বে অপসারণ করে সমগ্র স্বাস্থ্য খাত পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাস করার আহ্বান জানান।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে এ অনলাইন মিটিংয়ে রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু ও আনছার আলী দুলাল অংশগ্রহণ করেন। নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।