দিন যতই যাচ্ছে, ততই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বন্যা পরিস্থিতি। তবে সে হারে বাড়ছে না ত্রাণ বরাদ্দ। সরকারি হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় অর্ধকোটি মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে মাথাপিছু বরাদ্দ মাত্র ৮ টাকা। তবে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বললেন, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের বেশি মানুষের ত্রাণ প্রয়োজন হয় না।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বন্যা দীর্ঘমেয়াদি হবে, এমনটি মাথায় রেখেই সরকারের প্রস্তুতি ও বরাদ্দ বাড়ানো উচিত।
গ্রামের পর গ্রাম, জনপদের পর জনপদ, চারদিকেই শুধু পানি। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নেমে আসা ঢলের পানিতে উত্তরাঞ্চলের পর এখন ডুবে আছে মধ্যাঞ্চলও। বানের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে কাঁচাঘর থেকে বহুতল ভবন। সব হারিয়ে লাখ লাখ মানুষ মাথা গুঁজেছে বাঁধ কিংবা সড়কের পাশে। বানভাসি মানুষ বলছেন, ত্রাণের দেখা পাচ্ছেন না তারা।
এক বানভাসি বলেন, কোনো কাউন্সিলর, কোনো মন্ত্রী ও এমপি আজ পর্যন্ত এখানে আসেনি।
আরেকজন বলেন, ত্রাণ নিতে এসেছিলাম, দিল না, ফিরে যাচ্ছি।
জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরাও স্বীকার করলেন বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়।
এই ইউপি মেম্বার বলেন, খাবার, শিশুখাদ্য এ পর্যন্ত কিছুই বিতরণ করা হয়নি। মাত্র ১৩ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের যে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে, তা মাথাপিছু ৮ টাকারও কম। আর চাল পাচ্ছেন পৌনে ৩ কেজির মতো। তারপরও প্রতিমন্ত্রীর দাবি, বরাদ্দ যথেষ্ট।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ত্রাণ সহায়তাটা দেয়া হয় দরিদ্র-অতিদরিদ্র মানুষদের। এটা ১০ শতাংশ। যারা ঘর হারিয়েছে তাদের প্রত্যেককে টিন এবং নগদ টাকা দেয়ার মতো পর্যাপ্ত টাকা আমাদের আছে। এটা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর দেব।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির কারণে ত্রাণের ধরণ পাল্টানোর পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
সিপিডি-র সিনিয়র রিসার্স ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, তালিকা প্রণয়ন পরিকল্পনার ভেতরে আমরা অনিয়ম দেখেছি, বন্যার সময় কিন্তু এটা চিন্তা করতে হবে যে স্থানীয় সরবরাহ ব্যবস্থা কিন্তু অনেকাংশে ভেঙে পড়ে, এসময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলো পণ্য সরবরাহ করা।
বন্যায় এখন পর্যন্ত ৩৩টি জেলা প্লাবিত। আর মারা গেছেন ৪০ জন।