রংপুর মহানগরীর দুটি ওয়ার্ডের শত শত বাড়ি, স্থাপনা, কারখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বাঁশের খুঁটির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে করে ঝুঁকির মুখে রয়েছে হাজারও মানুষের জীবন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থার কথা কর্তৃপক্ষকে জানালেও এখন পর্যন্ত তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ও ১৯নং ওয়ার্ডের সংযোগ স্থল খটখটিয়ার টাইগার পাড়া লালপুল ব্রিজ মোড় এলাকার অনেক বাড়িতে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বিদ্যুৎসরবরাহ করেছে নেসকো। জানা গেছে, গত পাঁচ-ছয় বছর এভাবেই চলছে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ।
বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, একশ গজের বেশি দূরত্বে সার্ভিস লাইন দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। একশ গজের অতিরিক্ত দূরত্ব হলে অবশ্যই খুঁটি দিতে হবে, অন্যথায় সংযোগ দেওয়া যাবে না। অথচ এ এলাকায় এক কিলোমিটারের বেশি দূরে গিয়ে খুঁটি বসানো হয়েছে। মাঝের স্থানগুলোতে বসানো হয়েছে বাঁশের খুঁটি। এছাড়াও এই এলাকায় দুইশ কেভি ট্যান্সারফারমার দেওয়া হয়েছে। যেখানে একশটি মিটার চলার কথা সেখানে ওই দুইশ কেভি ট্যান্সাফারমার দিয়ে তিনশ মিটারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় প্রতি নিয়ত লোড শোডিং হয়ে থাকে। অনেক সময় লো-ভোল্টোজের কারণে অনেক বাড়ি ফ্রিজ এসি, ইলেকট্রিকের দামি জিনিস পত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এলাকাটির ওই দুই ওয়ার্ডের পাঁচ শতাধিক পরিবারে বিদ্যুতের সংযোগের চাহিদা থাকলেও এভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় ঝুঁকির কথা বিবেচনায় অনেকেই সংযোগ নেননি। তাই তিন শতাধিক বাড়িতে রয়েছে বিদ্যুতের সংযোগ। বছরের পর বছর বাকি পরিবারগুলো বঞ্চিত হয়ে চললেও খুঁটি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, গ্রামের কিছু বাড়িতে বিদ্যুৎ আছে, কিছু বাড়িতে নেই এটা ভাবাই যায় না। এলাকার সবাই বিদ্যুৎ পাওয়ার চেষ্টা করেছে। কর্তৃপক্ষ অপেক্ষা করতে বলেছে। জানিয়েছে, দ্রুতই খুঁটি স্থাপন করা হবে। কিন্তু আজও হয়নি।
আশরাফুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ, আনিছুর রহমান, ফরহাদ হোসেন, আইয়ুব আলী নামের কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, তারা জানেন এভাবে বিদ্যুৎ নেওয়াটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ, তবু কিছু করার নেই। ঝুঁকি নিয়েই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে। আমরা চাই যে কোন দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এই সংযোগ গুলোর নিরাপদ ব্যবস্থা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী-৩ আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সংযোগ গুলো নানা সময় দেওয়া হয়েছে। এলাকার মানুষের তদবিরে সংযোগ গুলো দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তবে ঝুঁকিমুক্ত করতে তারা ওই স্থানে দ্রুত খুঁটি বসানো হবে।