দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আরোগ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মাহফিল করেছে বিএনপি। শনিবার রজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ দোয়ার অনুষ্ঠান হয়।
কার্যালয়ের ভেতরে দলের কয়েকশ’ নেতাকর্মী এই দোয়া মাহফিলে শরিক হন। কার্যালয়ের নিচতলার কক্ষের বাইরে ফুটপাতে দাঁড়িয়েও অনেকে মোনাজাতে অংশ নেন। ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন উপলক্ষ্যে এ মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
তবে আয়োজিদ দোয়ার অনুষ্ঠানের ব্যানারে লেখা ছিল- ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য ও সুস্থতা কামনা, দেশবাসী ও দলের নেতা-কর্মীদের করোনা ও অন্যান্য রোগে মৃত্যুবরণে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুদর্শা থেকে রেহাই পেতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল’।
দোয়া মাহফলি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, শোক- দুঃখ-বেদনায় যিনি জনগণকে ছেড়ে যাননি, জনগণের পাশে থেকেছেন। দুই বছর অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে জে্লে রাখা হয়েছে, তবুও তিনি অক্ষয়-অব্যয় গণতন্ত্রের প্রশ্নে মাথা নত করেননি।
তিনি বলেন, আমি তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আল্লাহতালা তার দীর্ঘজীবন দান করবেন। আমরা যে দুঃসময়, অন্ধকার, এই অন্ধকার থেকে আমরা মুক্তি পাব, দেশনেত্রীকে যখন আমরা আমাদের সাথে পাব।
দোয়া মাহফিলে মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী উলামা দলের সদস্য সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার।
দলের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেলও বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, শামীমুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, হায়দার আলী খান লেলিন, কাজী আবুল বাশার, রফিক শিকদার, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল,ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, জাহাঙ্গীর আলম রিপন উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একটা মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হলো শুধু প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য। সেখানে তার স্বাক্ষর নাই, কোনো ধরনের তার কোনো সম্পর্ক নাই। গণতন্ত্রের জন্যে বার বার নিজের জীবনকে বিপন্ন করছেন তিনি। তিনি কারাগারের বাইরে কিন্তু সম্পূর্ণভাবে মুক্ত নয়।
‘আজকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তাকে যেভাবে ক্ষত-বিক্ষত করেছে। আজকে অসুস্থ, সুদূর ইংল্যান্ড থেকে দল তিনি পরিচালনা করছেন এই দুর্দিনের মধ্যে, এই গণতন্ত্রহীনতার মধ্যে।’
দেশের অবস্থা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘আমরা একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি, ঘোর দুর্দিন অতিক্রম করছি। কথা বলতে হয় ভয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এটা তো একেবারে জাদুঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
‘যদি কেউ কোথাও কোনো মন্তব্য করেন ফেসবুকে, সেখানে কেউ শেয়ার দিলে রাত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর তার কপালে তিনটা জিনিস ঘটতে পারে। একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে অথবা তাকে গুম করে দেওয়া অথবা তার লাশ কোনো জায়গায় রেখে দেওয়া। এই হচ্ছে প্রকাশের স্বাধীনতার অবস্থা।’
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মানে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি, আওয়ামী লীগ সরকার মানে হল-মার্কের দুর্নীতি। এই আওয়ামী লীগ মানে ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পর্কিত একটি রাজনৈতিক দল কারণ তাদের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা এর সাথে জড়িত। আওয়ামী লীগ মানে হচ্ছে জিকেজি-রিজেন্ট হাসপাতাল একটা হাসপাতালের লাইসেন্স দেয়া। আওয়ামী লীগ মানে হচ্ছে করোনার মিথ্যা-ভুয়া সার্টিফিকেট দেয়া।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন যে, বিএনপি আর দুর্নীতি সমার্থক। তাহলে করোনার এই মিথ্যা সার্টিফিকেট কী বিএনপির আমলে দেয়া হয়েছিল? পদ্মা সেতুর কেলেঙ্কারি কি বিএনপির আমলে হয়েছিল? হল-মার্কের কেলেঙ্কারি কি বিএনপির আমলে হয়েছিল? ক্যাসিনো, রিজেন্ট-জিকেজি হাসপাতালে জাল করোনার সার্টিফিকেট কি বিএনপির আমলে হয়েছিল?