একটা সময় এই উপমহাদেশে ‘স্বয়ংবরা’ প্রথার প্রচলন ছিল। অবশ্য সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ধরণের রীতির প্রচলন ছিল না। বর বাছাই করে নেওয়ার এই রীতি শুধু রাজকুমারিদের ছিল। মহাভারতেও এই রকম কাহিনী রয়েছে। তখন কন্যা বিবাহের উপযুক্ত হলে পতি বরণের আয়োজন করা হতো।
আর পিতা হিসেবে স্বয়ং রাজা নিজে এই রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। আর এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন প্রতিবেশী রাজ্যের আগ্রহী রাজকুমাররা। আর এভাবেই নিজেদের জীবনসঙ্গী বেছে নিতেন রাজকুমারিরা। কিন্তু এখন আর সেই রাজকন্যাও নেই! আর নেই সেই স্বয়ংবরা প্রথা! সেইসাথে নেই জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার জটিলটা!
নারী কিংবা পুরুষ, যে কেউ চাইলেই এখন নিজেদের জীবনসঙ্গী বেছে নিতে পারছে। শিক্ষার সাথে সাথে বিস্তৃত হয়েছে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের ধারণা। সেইসাথে প্রেম, ভালোবাসা, বিয়ে এসবও বিবেচিত হচ্ছে একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে। আর এভাবেই ধীরে ধীরে বাড়ছে প্রেম ঘটিত বিয়ে।
ভালো দিক
বিয়ের ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে প্রেম করে বিয়ে করা ভালো। এটা নিঃসংকোচে বলা যায়। কারণ অপরিচিত কাউকে বিয়ে করলে নানা রকম বিড়ম্বনা রয়েছে। কারণ একজন মানুষ সম্পর্কে ভালো করে না জেনে, চাইলেই তাকে বিয়ে করা যায় না। এতে বিপত্তি অনেক বেশি। তাই বিয়ে করলে ভালোবেসেই বিয়ে করা ভালো।
এখানে একজন আরেক জনের সাথে দীর্ঘদিন থেকে পরিচিত থাকে। নিজেদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া থাকে। সবচেয়ে বড় বিষয় হল একটা আস্থা, গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাস থেকেই একে অন্যের প্রেমে পড়ে। একে অন্যকে ভালোবাসে। একে অন্যের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়। গড়ে উঠে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আর এসবের কারণে দাম্পত্য জীবনেও সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কারণ একে অন্যের সম্পর্কে বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারে।
সেইসাথে এই ধরণের সম্পর্কে পারস্পরিক সন্দেহ থাকে না। তাছাড়া, সাংসারিক দায় দায়িত্ব বণ্টন বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতেও সুবিধা রয়েছে। কারণ প্রেম, ভালোবাসার আড্ডায় দিতে গিয়েই এসব করা হয়ে যায়। ফলে বিয়ের ক্ষেত্রে প্রেম করে বিয়ে করাকে এক কথায় অসাধারণ বলা যায়।
নেতিবাচকতা
প্রেম করে বিয়ে করা নিয়েও অনেক সময় নানা রকম অভিযোগ শোনা যায়। তবে সত্যি বলতে কি, এই সমস্ত অভিযোগ অনেক ঠুনকো। আর সবচেয়ে বড় বিষয় অভিযোগ গুলো শুনলে খুব সহজেই বোঝা যায় যে, তাদের মধ্যে আসলে আর ভালোবাসা নেই। কারণ ভালোবাসা থাকলে এই সমস্ত অভিযোগ উঠার কথা না। তবে জীবন সঙ্গী বাছাই বা প্রেমের ক্ষেত্রে বয়সের একটা ব্যবধান থাকা ভালো। এমন পরামর্শ দিয়ে থাকেন অভিজ্ঞদের অনেকেই।
তাদের মতে, বয়সের ব্যবধান থাকলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের বিষয়টা সবসময় থাকে। আর তা না হলে যে কোন দাম্পত্য কলহে এটা নিয়ে সমস্যা হতে পারে। আর এই রকমটা আচরণগত সামঞ্জস্যতার জন্যও দরকারি বলে মনে করেন অনেকে।