বাগেরহাটে এক মাদ্রাসা ছাত্রী (১১) কে ধর্ষণের মামলায় মাদ্রাসার সুপার ইলিয়াছ জোমাদ্দারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মামলার একমাত্র আসামি মাদ্রাসার সুপার ইলিয়াছ জোমাদ্দারের (৪৮) উপস্থিতিতে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. নূরে আলম জনাকৃর্ণ আদালতে এ রায় প্রদান করেন। আসামি ইলিয়াছ জোমাদ্দার শরণখোলা উপজেলার উত্তর খোন্তাকাটা রাশিদিয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসার সুপার ও একই উপজেলার পূর্ব রাজাপুর গ্রামের আব্দুল গফফার জোমাদ্দারের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৮ই আগস্ট সকালে ওই ছাত্রী প্রতিদিনের মত মাদ্রাসার সুপারের কাছে পড়তে যায়। পড়া শেষে মাদ্রাসার সুপার ওই ছাত্রীকে রেখে অন্য ৩ জনকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে তিনি ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসার লাইব্রেরী কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্সণের কথা কাউকে না জানাতে ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় মাদ্রাসা সুপার। কিন্তু মেয়েটি বাড়ি গিয়ে তার মাকে সব জানিয়ে দেয়।
এরপর মা অসুস্থ মেয়েকে গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। এই ঘটনার ১১ দিন পর ১৯শে আগস্ট মেয়েটির পিতা বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় মাদ্রাসা সুপার ইলিয়াস জোমাদ্দারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপরই এলাকা থেকে চম্পট দেয় মাদ্রাসা সুপার। ঘটনার ২মাস পর ১৭ অক্টোবর বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই এর উপ পরিদর্শক আবু সাইয়েদ। গ্রেপ্তারের ৩দিন পর মাদ্রাসা সুপার ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। চিকিৎসক, পুলিশ, বাদী ও বিবাদীসহ মোট ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও বাদী-বিবাদী পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালত এ মামালার রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সহকারি কৌসুলি (এপিপি) রনজিৎ কুমার মন্ডল। আসামি পক্ষের আইনজীবী হিসাবে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড. মো. আলী আকবার।