রাজধানীর গোপীবাগে নির্বাচনী প্রচারণায় চলাকালে দক্ষিণ সিটির আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই মেয়রপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সাংবাদিককে দেয়া এক পুলিশ সদস্যের বির্তকিত জবাবের বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
তিনি বলেছেন, ‘সংঘর্ষের দিন ‘আমাদের পার্টি’ বলতে ওই পুলিশ সদস্য নিজ বাহিনীকেই বুঝিয়েছেন।’
গোপীবাগে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে ইভিএমে ভোটদান পদ্ধতি প্রদর্শন কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে এসব বলেন সিইসি কে এম নুরুল হুদা।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি দুপুরে গোপীবাগে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আধাঘণ্টাব্যাপী চলা ওই সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
ওই সংঘর্ষের পরপরই একজন সাংবাদিক সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশের কাছে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে কিনা জানতে চান।
জবাবে ওই পুলিশ সাংবাদিককে বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন নরমাল। ইশরাকের পার্টি চলে গেছে মতিঝিল এলাকায়। আমাদের যে পার্টি আছে ওরা সেন্ট্রাল উইমেন্সের সামনে আছে।’
সাংবাদিককে বলা পুলিশের ওই জবাবটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এ নিয়ে বির্তক চলে। ওই পুলিশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসের দলকে পুলিশের দল বলেছেন জানিয়ে মন্তব্য করেন অনেকে।
এবার সেই মন্তব্যের বিষয়ে সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ‘পুলিশ ‘আমাদের পার্টি’ বলতে তাদের পুলিশ বাহিনীকেই বুঝিয়েছেন। পুলিশের সঙ্গে যে লোকজন থাকে তাদেরকে পুলিশের পার্টি বলে। তিনি ইংরেজিতে বলেছেন। তিনি পুলিশের পার্টিকে বুঝিয়েছেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া কোনো রাজনৈতিক দলের কথা বোঝাননি।’
সিইসি আরো বলেন, ‘ইভিএমে সুষ্ঠু ভোট হবে। এতে জাল ভোট কিংবা ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটবে না। ইভিএমের কারণে নিজের ভোট নিজেই দেবে। অন্য কেউ দিতে পারবে না। ’
প্রসঙ্গত রোববার সকালে মতিঝিল থেকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন জনসংযোগ শুরু করেন। দিলকুশা-ইত্তেফাক মোড় হয়ে টিকাটুলি আসার পর সেখানে একটি নির্মাণাধীন ভবনের নীচে নৌকার প্রতীক প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসের সমর্থকদের সঙ্গে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। একপর্যায়ে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
মুহূর্তেই লাঠিসোটা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়াপাল্টা-ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাংচুর শুরু হয়। শোনা যায় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও। ২৫ মিনিট পর পুলিশের একটি দল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় গণমাধ্যমকর্মীসহ দুই দলের অন্তত ১০ জন আহত হন।
সংঘর্ষের পর ইশরাক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, বিএনপির জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন বিনা উসকানিতে হামলা করেছে।
পরদিন সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আহমেদ বাদী হয়ে ওয়ারি থানায় মামলাটি করেছিলেন। মামলায় বিএনপির ৪০-৫০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ শতাধিক লোককে আসামি করা হয়।