লক্ষ্মীপুরে ১০ বছরের এক মাদরাসা ছাত্রকে যৌন নির্যাতনের বিচার চাওয়ায় পিটুনির ঘটনায় দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ মোহাম্মদ ইউসুফ ও যৌন নির্যাতনকারী মাসুম বিল্লাহ।
গতকাল সোমবার (১ মার্চ) রাতে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজার এলাকার আৎ-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফজুল কোরআন মাদরাসা থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। এরআগে শিশুর মা বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তার আব্দুর রশিদ ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ ও ভোলার বোরহান উদ্দিন থানার কাচিয়া ইউনিয়নের চকডোষ গ্রামের ক্বারী সিরাজুল হকের ছেলে। মাসুম বিল্লাহ মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক ও কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের ফেনুয়া গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে।
শিশুটি আৎ-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফজুল কোরআন মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। মাদরাসায় আবাসিকে থেকে সে পড়ালেখা করত। এ সুযোগে ঘুম থেকে উঠিয়ে রাতের অন্ধকারে খাওয়ার রুমে ডেকে নিয়ে শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ কয়েকদিন তাকে যৌন নির্যাতন করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
সম্প্রতি মাদরাসা ৭ দিনের জন্য ছুটি দিলে শিশুটি অন্যদের মতো বাড়িতে যায়। পরবর্তীতে মাদরাসা খোলা হলেও সে বাড়ি থেকে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু মাদরাসায় যেতে মা তাকে বাধ্য করছিল। এসময় শিশুটি তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা মাকে জানায়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে শিশুর মা ও আত্মীয়-স্বজন মাদরাসায় এসে অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদকে ঘটনাটি অবহিত করে। এটি তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ পরবর্তীকালে এমন ঘটনা যেন না ঘটে এজন্য প্রতিশ্রুতি চান।
এদিকে অধ্যক্ষ ওই ঘটনার কোনো তদন্ত না করেই ঘটনা প্রকাশ করে মাদরাসার সুনাম ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে পরদিন শিশুটিকে বেদম পিটিয়ে আটকে রাখে। সোমবার মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে শিশুর মা ও আত্মীয়-স্বজন মাদরাসায় এসে তাকে আহত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। শিশুটির শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশ এসে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আব্দুর রশিদ ও মাসুম বিল্লাহকে আটক করে।
পরে এ ঘটনায় শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
শিশুটির মা বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে শিক্ষকরা খুব খারাপ কাজ করেছে। আমি অধ্যক্ষের কাছে বিচার চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমার ছেলেকে পিটিয়ে জখম করেছে। আমি তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।
এ ব্যাপারে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে ফজলুল হক বলেন, শিশুর মায়ের দায়ের করা মামলায় আটক দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।