হেফাজতে ইসলাম আসলে কারা? এর উৎস কোথায়?

  • ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক
  • ২০২১-০৫-০১ ১৬:৫৯:২৭
popular bangla newspaper, daily news paper, breaking news, current news, online bangla newspaper, online paper, bd news, bangladeshi potrika, bangladeshi news portal, all bangla newspaper, bangla news, bd newspaper, bangla news 24, live, sports, polities, entertainment, lifestyle, country news, Breaking News, Crime protidin. Crime News, Online news portal, Crime News 24, Crime bangla news, National, International, Live news, daily Crime news, Online news portal, bangladeshi newspaper, bangladesh news, bengali news paper, news 24, bangladesh newspaper, latest bangla news, Deshe Bideshe, News portal, Bangla News online, bangladeshi news online, bdnews online, 24 news online, English News online, World news service, daily news bangla, Top bangla news, latest news, Bangla news, online news, bangla news website, bangladeshi online news site, bangla news web site, all bangla newspaper, newspaper, all bangla news, newspaper bd, online newspapers bangladesh, bangla potrika, bangladesh newspaper online, all news paper, news paper, all online bangla newspaper, bangla news paper, all newspaper bangladesh, bangladesh news papers, online bangla newspaper, news paper bangla, all bangla online newspaper, bdnewspapers, bd bangla news paper, bangla newspaper com, bangla newspaper all, all bangla newspaper bd, bangladesh newspapers online, daily news paper in bangladesh, bd all news paper, daily newspaper in bangladesh, Bangladesh pratidin, crime pratidin, অনলাইন, পত্রিকা, বাংলাদেশ, আজকের পত্রিকা, আন্তর্জাতিক, অর্থনীতি, খেলা, বিনোদন, ফিচার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চলচ্চিত্র, ঢালিউড, বলিউড, হলিউড, বাংলা গান, মঞ্চ, টেলিভিশন, নকশা, ছুটির দিনে, আনন্দ, অন্য আলো, সাহিত্য, বন্ধুসভা,কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, অটোমোবাইল, মহাকাশ, গেমস, মাল্টিমিডিয়া, রাজনীতি, সরকার, অপরাধ, আইন ও বিচার, পরিবেশ, দুর্ঘটনা, সংসদ, রাজধানী, শেয়ার বাজার, বাণিজ্য, পোশাক শিল্প, ক্রিকেট, ফুটবল, লাইভ স্কোর, Editor, সম্পাদক, এ জেড এম মাইনুল ইসলাম পলাশ, A Z M Mainul Islam Palash, Brahmanbaria, Brahmanbaria Protidin, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিদিন, Bandarban, Bandarban Protidin, বান্দরবন, বান্দরবন প্রতিদিন, Barguna, Barguna Protidin, বরগুনা, বরগুনা প্রতিদিন, Barisal, Barisal Protidin, বরিশাল, বরিশাল প্রতিদিন, Bagerhat, Bagerhat Protidin, বাগেরহাট, বাগেরহাট প্রতিদিন, Bhola, Bhola Protidin, ভোলা, ভোলা প্রতিদিন, Bogra, Bogra Protidin, বগুড়া, বগুড়া প্রতিদিন, Chandpur, Chandpur Protidin, চাঁদপুর, চাঁদপুর প্রতিদিন, Chittagong, Chittagong Protidin, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম প্রতিদিন, Chuadanga, Chuadanga Protidin, চুয়াডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা প্রতিদিন, Comilla, Comilla Protidin, কুমিল্লা, কুমিল্লা প্রতিদিন, Cox's Bazar, Cox's Bazar Protidin, কক্সবাজার, কক্সবাজার প্রতিদিন, Dhaka, Dhaka Protidin, ঢাকা, ঢাকা প্রতিদিন, Dinajpur, Dinajpur Protidin, দিনাজপুর, দিনাজপুর প্রতিদিন, Faridpur , Faridpur Protidin, ফরিদপুর, ফরিদপুর প্রতিদিন, Feni, Feni Protidin, ফেনী, ফেনী প্রতিদিন, Gaibandha, Gaibandha Protidin, গাইবান্ধা, গাইবান্ধা প্রতিদিন, Gazipur, Gazipur Protidin, গাজীপুর, গাজীপুর প্রতিদিন, Gopalganj, Gopalganj Protidin, গোপালগঞ্জ, গোপালগঞ্জ প্রতিদিন, Habiganj, Habiganj Protidin, হবিগঞ্জ, হবিগঞ্জ প্রতিদিন, Jaipurhat, Jaipurhat Protidin, জয়পুরহাট, জয়পুরহাট প্রতিদিন, Jamalpur, Jamalpur Protidin, জামালপুর, জামালপুর প্রতিদিন, Jessore, Jessore Protidin, যশোর, যশোর প্রতিদিন, Jhalakathi, Jhalakathi Protidin, ঝালকাঠী, ঝালকাঠী প্রতিদিন, Jhinaidah, Jhinaidah Protidin, ঝিনাইদাহ, ঝিনাইদাহ প্রতিদিন, Khagrachari, Khagrachari Protidin, খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি প্রতিদিন, Khulna, Khulna Protidin, খুলনা, খুলনা প্রতিদিন, Kishoreganj, Kishoreganj Protidin, কিশোরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ প্রতিদিন, Kurigram, Kurigram Protidin, কুড়িগ্রাম, কুড়িগ্রাম প্রতিদিন, Kushtia, Kushtia Protidin, কুষ্টিয়া, কুষ্টিয়া প্রতিদিন, Lakshmipur, Lakshmipur Protidin, লক্ষ্মীপুর, লক্ষ্মীপুর প্রতিদিন, Lalmonirhat, Lalmonirhat Protidin, লালমনিরহাট, লালমনিরহাট প্রতিদিন, Madaripur, Madaripur Protidin, মাদারীপুর, মাদারীপুর প্রতিদিন, Magura, Magura Protidin, মাগুরা, মাগুরা প্রতিদিন, Manikganj, Manikganj Protidin, মানিকগঞ্জ, মানিকগঞ্জ প্রতিদিন, Meherpur, Meherpur Protidin, মেহেরপুর, মেহেরপুর প্রতিদিন, Moulvibazar, Moulvibazar Protidin, মৌলভীবাজার, মৌলভীবাজার প্রতিদিন, Munshiganj, Munshiganj Protidin, মুন্সীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ প্রতিদিন, Mymensingh, Mymensingh Protidin, ময়মনসিংহ, ময়মনসিংহ প্রতিদিন, Naogaon, Naogaon Protidin, নওগাঁ, নওগাঁ প্রতিদিন, Narayanganj, Narayanganj Protidin, নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন, Narsingdi, Narsingdi Protidin, নরসিংদী, নরসিংদী প্রতিদিন, Natore , Natore Protidin, নাটোর, নাটোর প্রতিদিন, Nawabgonj, Nawabgonj Protidin, নওয়াবগঞ্জ, নওয়াবগঞ্জ প্রতিদিন, Netrokona, Netrokona Protidin, নেত্রকোনা, নেত্রকোনা প্রতিদিন, Nilphamari, Nilphamari Protidin, নীলফামারী, নীলফামারী প্রতিদিন, Noakhali, Noakhali Protidin, নোয়াখালী, নোয়াখালী প্রতিদিন, Norai, Norai Protidin, নড়াইল, নড়াইল প্রতিদিন, Pabna, Pabna Protidin, পাবনা, পাবনা প্রতিদিন, Panchagarh, Panchagarh Protidin, পঞ্চগড়, পঞ্চগড় প্রতিদিন, Patuakhali, Patuakhali Protidin, পটুয়াখালী, পটুয়াখালী প্রতিদিন, Pirojpur, Pirojpur Protidin, পিরোজপুর, পিরোজপুর প্রতিদিন, Rajbari, Rajbari Protidin, রাজবাড়ী, রাজবাড়ী প্রতিদিন, Rajshahi , Rajshahi Protidin, রাজশাহী, রাজশাহী প্রতিদিন, Rangamati, Rangamati Protidin, রাঙ্গামাটি, রাঙ্গামাটি প্রতিদিন, Rangpur, Rangpur Protidin, রংপুর, রংপুর প্রতিদিন, Satkhira, Satkhira Protidin, সাতক্ষীরা, সাতক্ষীরা প্রতিদিন, Shariyatpur, Shariyatpur Protidin, শরীয়তপুর, শরীয়তপুর প্রতিদিন, Sherpur, Sherpur Protidin, শেরপুর, শেরপুর প্রতিদিন, Sirajgonj, Sirajgonj Protidin, সিরাজগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ প্রতিদিন, Sunamganj, Sunamganj Protidin, সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ প্রতিদিন, Sylhet, Sylhet Protidin, সিলেট, সিলেট প্রতিদিন, Tangail, Tangail Protidin, টাঙ্গাইল, টাঙ্গাইল প্রতিদিন, Thakurgaon, Thakurgaon Protidin, ঠাকুরগাঁও, ঠাকুরগাঁও প্রতিদিন, ক্রাইম প্রতিদিন, ক্রাইম, প্রতিদিন, Crime, Protidin, অপরাধ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, অমুবাচা, crimeprotidin

সাত বছর আগে ঢাকায় শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের এই বিশাল সমাবেশ অনেককেই বিস্মিত করেছিল কারণ মাদ্রাসা কিংবা ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক ঘরানার বাইরে হেফাজতে ইসলামের এমন শক্তি সম্পর্কে তখনো বহু মানুষের মধ্যে কোন ধারণাই ছিল না।

উন্নয়ন কর্মী সানজিদা রিপা তাদেরই একজন। তিনি বলছেন, ''২০১৩ সালের ৫ই মে শাপলা চত্বরে যা ঘটেছিল তার আগে হেফাজত ইসলামের নামে ইসলামি সংগঠন আছে তা শুনিনি। অন্যান্য ইসলামি সংগঠন বা ধর্মভিত্তিক সংগঠন আছে বা কার্যকলাপ আছে দেখেছি কিন্তু হেফাজত ইসলামের নাম শুনিনি। এরপর থেকেই দেখলাম তারা রাজনৈতিক অঙ্গনে বা মাঠে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে।"

অথচ এই হেফাজতে ইসলামই গত প্রায় আট বছর ধরে নানা ঘটনায় আলোচিত। সংগঠনটির ঘোষণা করা তের দফা কর্মসূচিও রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা সময়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় তুলেছে।

এসব দাবির মধ্যে ছিল ধর্ম অবমাননার জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে আইন করা, নারীদের পোশাকে বিশেষ করে হিজাব উদ্বুদ্ধ করা, নারী নীতি ও শিক্ষা নীতির কথিত ইসলাম বিরোধী ধারাগুলো বাদ দেয়া, উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলামি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, ভাস্কর্য বা মঙ্গল প্রদীপের মতো বিষয়গুলোর বিরোধিতা, নাটক সিনেমায় ধর্মীয় লেবাসের লোকজনের নেতিবাচক চরিত্র বন্ধ কিংবা কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবির মতো বিষয়গুলো।

তাদের তের দফার একটিতে বলা হয়েছে তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কতিপয় ব্লগার, নাস্তিক-মুরতাদ ও ইসলাম বিদ্বেষীদের সকল অপতৎপরতা ও প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। আর এটি এমন সময় করা হয়েছিলো যখন শাহবাগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচি চলছিল।

এরপর থেকে গত প্রায় আট বছর ধরে নানা ঘটনায় নানাভাবে আলোচনায় থাকা হেফাজত আসলে এল কোথা থেকে বা এর উৎস কোথায়?

সংগঠনটির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস বলছেন নিতান্ত ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই সংগঠনটি গঠন করেছিলেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত আহমদ শফী, যার উদ্দেশ্য ছিল ইসলামের স্বার্থ দেখা।

"২০১০ সালের দিকে দেশে ইসলামকে নিয়ে, আল্লাহ রাসুলকে নিয়ে কটূক্তিসহ বিভিন্ন লেখালেখি হচ্ছিলো অনলাইনে। তখন ওলামায়ে কেরামরা বললেন যে ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম করা দরকার যাতে ইসলাম বিরোধী কাজ একসাথে প্রতিরোধ করতে পারি। এটা অরাজনৈতিক থাকবে এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছিল।"

মি. ইদ্রিস অনলাইনে ইসলাম বিদ্বেষী লেখালেখির পাল্টা প্রতিক্রিয়াকে হেফাজতের আগমনের কারণ বা উৎস হিসেবে উল্লেখ করলেও ইসলাম বিষয়ক লেখক ও বিশ্লেষক শরীফ মোহাম্মদ অবশ্য বলছেন ২০১০ সালে বর্তমান হেফাজত যাত্রা শুরু করলেও ভিন্ন ভিন্ন নামে এই ধারার সূচনা হয়েছে আরও অনেক আগেই।

"কওমি মাদ্রাসার আলেমদের প্রধান স্রোত-বিভিন্ন ইস্যুতে তারা নানা প্লাটফর্ম করেছে। আশি ও নব্বইয়ের দশকে ছিল। তাসলিমা নাসরিন ইস্যুতে হয়েছে। বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পরেও হয়েছে। একইভাবে ২০০১ সালে ফতোয়া-বিরোধী রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য ইসলামি আইন বাস্তবায়ন কমিটি হয়েছিল। ২০১১ সালে নারী নীতি প্রণয়নের বিরুদ্ধে হরতাল আন্দোলন ছিল। ওই সময় হেফাজতের আত্মপ্রকাশ ঘটলেও তারা জাতীয়ভাবে ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে ২০১৩ সালে।"

মূলত এনজিও, নারী বিষয়ক বিভিন্ন ইস্যু কিংবা ধর্ম অবমাননার ইস্যুতে নানা নামে কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের এ ধারাটি অনেক কাল ধরেই সামনে এসেছে বিভিন্ন ভাবে। ১৯৯৪ সালে তাসলিমা নাসরিন ইস্যুতে বড় ভাবে সংগঠিত হয়ে ব্যাপক শক্তি প্রদর্শন করলেও তা পরে বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি তারা।

যদিও মূলত এ ঘটনার জের ধরেই তাসলিমা নাসরিনকে দেশ ছাড়তে হয়। এছাড়া লেখক সালমান রুশদীর লেখায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে এবং পরে ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার ঘটনায় পুরো বাংলাদেশ জুড়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনগুলো।

পরবর্তীতে ফতোয়ার মাধ্যমে নারী নির্যাতনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে নারী সংগঠনগুলোর সোচ্চার হওয়ার বিপরীতে সারাদেশে নতুন করে সংগঠিত হয়েছিলো কওমি ধারার সংগঠনগুলো।

বিশেষ করে ফতোয়া নিয়ে আদালতের রায় নিয়ে বেশ সোচ্চার হয়েছিল খতমে নবুয়ত আন্দোলনের মতো সংগঠনগুলো। ধর্ম অবমাননার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করে তারা মাদ্রাসাগুলোকে এক জায়গায় নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছিল নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু করে গত দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত।

তবে ইসলামপন্থী এ ধারাটির এমন সক্রিয় কর্মকাণ্ডের ইতিহাস আরও অনেক প্রাচীন। বিভিন্ন সময়ে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নানা ইস্যুতে সোচ্চার হওয়ার এ ধারা সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই চলে আসছে যার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ খেলাফত আন্দোলন, স্বদেশী আন্দোলন কিংবা পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনালগ্ন থেকেই ধর্ম অবমাননা বিরোধী আন্দোলন।

বাংলাদেশের ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও সংগঠন বিষয়ের একজন গবেষক ডঃ মোবাশ্বর হাসান বলছেন অরাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য নিয়েই এ ধারাটি বারবারই নানা ইস্যুতে বা ঘটনায় সোচ্চার হয়েছে যার ধারাবাহিকতায় তৈরি হয়েছে আজকের হেফাজতে ইসলাম।

"তাদের এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই কিন্তু কবি দাউদ হায়দার ধর্ম অবমাননার দায়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। এই আলোচনাগুলো বাংলাদেশে শুরু হয়েছিল ১৯৭৪ সালে, যখন বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ছিল। তখন অন্য জায়গাগুলো থেকেও তারা সমর্থন পেয়েছে। এখন আজকের দিনে যেসব দাবি ইসলাম বা ধর্ম বিরোধী লেখকদের ফাঁসি দিতে হবে- এগুলোর সাথেই কিন্তু তখনকার দাবিরও মিল দেখা যায়।"

অর্থাৎ হেফাজত নামটি ৮/১০ বছর শোনা গেলেও এ ধারাটি মোটেও নতুন কিছু নয়। মোবাশ্বর হাসান বলছেন আগের এই ধারার সাথে অনলাইনসহ নানা কিছু যুক্ত হয়ে হেফাজত নামের আন্দোলনে রূপ নেয়।

যদিও ধর্ম ও মাদ্রাসা ভিত্তিক এ আন্দোলন শুরু থেকেই সুনির্দিষ্ট কোন কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে দাঁড়ায়নি। তবে মানুষের দৈনন্দিন জীবনাচরণের সাথে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকায় সেটিকে ভিত্তি করেই এ ধারা চলে এসেছে এবং এটিকে কাজে লাগিয়েই আজকের হেফাজতের ভিত শক্ত হয়েছে বলে বলছেন মি. হাসান।

"তারা কিন্তু বাংলাদেশে সমাজের প্রাত্যহিক জীবনের নানা কাজে মানুষকে উনাদের অর্থাৎ মাদ্রাসার লোকদের কাছ যেতে হয়। সেটাকে ভিত্তি করেই হেফাজত গড়ে ওঠায় তাদের আরও বেশি শক্তিশালী মনে হয়।"

বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠনগুলোর নেতৃস্থানীয়রা প্রায় সবাই ভারতের দেওবন্দ অনুসারী। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তান আমলে ও পরে বাংলাদেশে এসেও তারাই এ ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

নিজেদের মধ্যে নানা কারণে দ্বন্দ্ব বিভেদ হলেও দেওবন্দই তাদের আদি উৎস বলে বলছেন তাবলীগ জামায়াতসহ ইসলামপন্থী সংগঠনের কার্যক্রমের আরেকজন গবেষক ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ বুলবুল আশরাফ সিদ্দিকী।

"কওমি মাদ্রাসার কারিকুলামও বিকাশ দেওবন্দ মাদ্রাসা কেন্দ্রিক। হেফাজত ও কওমি মাদ্রাসার যেসব কার্যক্রম এখানে তারা দেওবন্দ প্রভাবিত। কমিউনিটির যে অংশগ্রহণ তার মধ্যে দিয়েই কওমি মাদ্রাসা পরিচালিত হয় এবং তারা ইস্যু ভিত্তিক নানা আন্দোলন গড়ে তোলে, যার কোন কোনটিতে তারা সফলও হয়।"

মি. সিদ্দিকী বলছেন রাজনীতির বাইরে থেকেও কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি আদায়সহ বেশ কিছু বিষয় তারা আন্দোলন করেই অর্জন করেছে যা তাদের আরও শক্ত ভিত্তি দিয়েছে।

অর্থাৎ ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তোলার পর অনেক ক্ষেত্রে কবি বা সাহিত্যিকদের বিরুদ্ধে যেমন সরকারই ব্যবস্থা নিয়েছে বা কেউ কেউ দেশ ছেড়েছে, তেমনি দেশের মধ্যেও নিজেদের স্বীকৃতি আদায় কিংবা তাদের দাবি মতো স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনার মতো নানা ঘটনা তাদের উৎসাহিত করেছে।

তবে নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি করলেও হেফাজতে ইসলাম যাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে তাদের অনেকেই নানা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত।

কাদিয়ানীদের অমুসলিমদের ঘোষণার মতো দাবিগুলোর প্রশ্নে তারা রাজনীতিতে জড়িত ইসলামপন্থী সংগঠনগুলোর সমর্থনও পেয়েছে। তাদের কমিটিতেও জায়গা পেয়েছিলেন বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা।

বরাবরই ধর্ম কেন্দ্রিক ইস্যুগুলোতে প্রেশার গ্রুপ হিসেবে সক্রিয় থাকা মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠনগুলো কখনো কখনো ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলনে সোচ্চার হলেও বরাবরই সরকারের সঙ্গেও সু সম্পর্ক বজায় রেখে আসছিল।

দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবর বলছেন বিচ্ছিন্নভাবে রাজনৈতিক কিছু নেতা হেফাজতে থাকলেও তা সংগঠনটির অরাজনৈতিক চরিত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি বরং বিভিন্ন সময়ে সরকারসহ নানা গোষ্ঠীর সহায়তা পেয়েই এ ধারাটি বিকশিত হয়েছে।

"তাদের ভূমিকা যা ছিলো বা যেসব প্রশ্নে তারা সোচ্চার হয়েছে সেটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই। বিচ্ছিন্ন কোন ব্যক্তি রাজনীতিতে থাকতে পারে কিন্তু হেফাজত কোন দলের সাথে এক প্ল্যাটফর্মে ওঠে বা রাজনীতি করে এটা ঘটেনি কখনো।"

কিন্তু হেফাজত রাজনীতি করেনি বা রাজনৈতিক সংগঠন নয় এমন মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জিনাত হুদা। তিনি বলছেন হেফাজতের রাজনৈতিক লক্ষ্য ও বৈশিষ্ট্য তাদের কার্যকলাপেই পরিষ্কার হয়ে গেছে।

"বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে তছনছ করবেন এবং নাশকতায় জড়িত হবেন আর বলবেন যে সেটা রাজনৈতিক নয় সেটি তো হতে পারে না। পহেলা বৈশাখ নিয়েও তো তাদের বক্তব্য কম দেখিনি। বাঙালির শাশ্বত সংস্কৃতির বিরুদ্ধেও এরা ফতোয়া দিয়েছে। ফতোয়া দেয় তারাই যারা ধর্মকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করে।"

তার দাবি হেফাজতের দাবি দাওয়া এবং কর্মসূচির মধ্যে স্পষ্ট ছিলো রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা। তারা সরকারকে বিপদে ফেলতে চেয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সময়ে সহিংসতার মাধ্যমেও।

তিনি বলেন তের দফা দাবি আর ক্রমাগত সহিংসতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করে বাংলাদেশকে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের চরিত্র দিতে চেয়েছিলো হেফাজত।

অর্থাৎ হেফাজত রাজনৈতিক কি-না এ নিয়ে যেমন বিতর্ক তেমনি তাদের যে তের দফা বা দাবি আদায়ে তাদের যে কর্মপন্থা সেটি কোন বাংলাদেশের ইঙ্গিত দেয় বা হেফাজত নিজেই কোন ধরণের সমাজ নির্মাণ করতে চায় তা নিয়েও আছে বড় প্রশ্ন ।

যদিও হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মইনুদ্দিন রুহি বলছেন তাদের চাওয়া একটিই- তাহলো ইসলামি সমাজ ব্যবস্থা।

"বাংলাদেশের মানুষ হানাফি মাজহাব ও আহলে সুন্নতে বিশ্বাসী। এর ভিত্তিতে ইসলামের বিকাশ ও আধুনিক সমাজের যে রূপরেখা আছে তাতেই হেফাজতে ইসলাম বিশ্বাসী," বলছেন মইনুদ্দিন রুহি।

যদিও হেফাজতের সমালোচকরা বলেন হেফাজতের দাবি দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিবে। অন্যদিকে নানা সহিংসতায় জড়িয়ে সংগঠনটির নেতাদের অনেকেই এখন কারাগারে। এমন পরিস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক এ সংগঠনটির ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

কিন্তু সংগঠনটির ভবিষ্যৎ যাই হোক গত কয়েক বছরে এ সংগঠনটির কর্মসূচি ও কর্মকাণ্ডের জের ধরে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে যেমন প্রভাবিত করেছে, তেমনি প্রভাবিত করছে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজজীবনকেও।

নিউজটি শেয়ার করুন

 
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
-->

Shotoborshe Mujib, A Z M Mainul Islam Palash, Crime Protidin Media And Publication