ভয়াবহ ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

  • ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক
  • ২০২১-০৭-২৭ ০৯:৫৬:৫০
popular bangla newspaper, daily news paper, breaking news, current news, online bangla newspaper, online paper, bd news, bangladeshi potrika, bangladeshi news portal, all bangla newspaper, bangla news, bd newspaper, bangla news 24, live, sports, polities, entertainment, lifestyle, country news, Breaking News, Crime protidin. Crime News, Online news portal, Crime News 24, Crime bangla news, National, International, Live news, daily Crime news, Online news portal, bangladeshi newspaper, bangladesh news, bengali news paper, news 24, bangladesh newspaper, latest bangla news, Deshe Bideshe, News portal, Bangla News online, bangladeshi news online, bdnews online, 24 news online, English News online, World news service, daily news bangla, Top bangla news, latest news, Bangla news, online news, bangla news website, bangladeshi online news site, bangla news web site, all bangla newspaper, newspaper, all bangla news, newspaper bd, online newspapers bangladesh, bangla potrika, bangladesh newspaper online, all news paper, news paper, all online bangla newspaper, bangla news paper, all newspaper bangladesh, bangladesh news papers, online bangla newspaper, news paper bangla, all bangla online newspaper, bdnewspapers, bd bangla news paper, bangla newspaper com, bangla newspaper all, all bangla newspaper bd, bangladesh newspapers online, daily news paper in bangladesh, bd all news paper, daily newspaper in bangladesh, Bangladesh pratidin, crime pratidin, অনলাইন, পত্রিকা, বাংলাদেশ, আজকের পত্রিকা, আন্তর্জাতিক, অর্থনীতি, খেলা, বিনোদন, ফিচার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চলচ্চিত্র, ঢালিউড, বলিউড, হলিউড, বাংলা গান, মঞ্চ, টেলিভিশন, নকশা, ছুটির দিনে, আনন্দ, অন্য আলো, সাহিত্য, বন্ধুসভা,কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, অটোমোবাইল, মহাকাশ, গেমস, মাল্টিমিডিয়া, রাজনীতি, সরকার, অপরাধ, আইন ও বিচার, পরিবেশ, দুর্ঘটনা, সংসদ, রাজধানী, শেয়ার বাজার, বাণিজ্য, পোশাক শিল্প, ক্রিকেট, ফুটবল, লাইভ স্কোর, Editor, সম্পাদক, এ জেড এম মাইনুল ইসলাম পলাশ, A Z M Mainul Islam Palash, Brahmanbaria, Brahmanbaria Protidin, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিদিন, Bandarban, Bandarban Protidin, বান্দরবন, বান্দরবন প্রতিদিন, Barguna, Barguna Protidin, বরগুনা, বরগুনা প্রতিদিন, Barisal, Barisal Protidin, বরিশাল, বরিশাল প্রতিদিন, Bagerhat, Bagerhat Protidin, বাগেরহাট, বাগেরহাট প্রতিদিন, Bhola, Bhola Protidin, ভোলা, ভোলা প্রতিদিন, Bogra, Bogra Protidin, বগুড়া, বগুড়া প্রতিদিন, Chandpur, Chandpur Protidin, চাঁদপুর, চাঁদপুর প্রতিদিন, Chittagong, Chittagong Protidin, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম প্রতিদিন, Chuadanga, Chuadanga Protidin, চুয়াডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা প্রতিদিন, Comilla, Comilla Protidin, কুমিল্লা, কুমিল্লা প্রতিদিন, Cox's Bazar, Cox's Bazar Protidin, কক্সবাজার, কক্সবাজার প্রতিদিন, Dhaka, Dhaka Protidin, ঢাকা, ঢাকা প্রতিদিন, Dinajpur, Dinajpur Protidin, দিনাজপুর, দিনাজপুর প্রতিদিন, Faridpur , Faridpur Protidin, ফরিদপুর, ফরিদপুর প্রতিদিন, Feni, Feni Protidin, ফেনী, ফেনী প্রতিদিন, Gaibandha, Gaibandha Protidin, গাইবান্ধা, গাইবান্ধা প্রতিদিন, Gazipur, Gazipur Protidin, গাজীপুর, গাজীপুর প্রতিদিন, Gopalganj, Gopalganj Protidin, গোপালগঞ্জ, গোপালগঞ্জ প্রতিদিন, Habiganj, Habiganj Protidin, হবিগঞ্জ, হবিগঞ্জ প্রতিদিন, Jaipurhat, Jaipurhat Protidin, জয়পুরহাট, জয়পুরহাট প্রতিদিন, Jamalpur, Jamalpur Protidin, জামালপুর, জামালপুর প্রতিদিন, Jessore, Jessore Protidin, যশোর, যশোর প্রতিদিন, Jhalakathi, Jhalakathi Protidin, ঝালকাঠী, ঝালকাঠী প্রতিদিন, Jhinaidah, Jhinaidah Protidin, ঝিনাইদাহ, ঝিনাইদাহ প্রতিদিন, Khagrachari, Khagrachari Protidin, খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি প্রতিদিন, Khulna, Khulna Protidin, খুলনা, খুলনা প্রতিদিন, Kishoreganj, Kishoreganj Protidin, কিশোরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ প্রতিদিন, Kurigram, Kurigram Protidin, কুড়িগ্রাম, কুড়িগ্রাম প্রতিদিন, Kushtia, Kushtia Protidin, কুষ্টিয়া, কুষ্টিয়া প্রতিদিন, Lakshmipur, Lakshmipur Protidin, লক্ষ্মীপুর, লক্ষ্মীপুর প্রতিদিন, Lalmonirhat, Lalmonirhat Protidin, লালমনিরহাট, লালমনিরহাট প্রতিদিন, Madaripur, Madaripur Protidin, মাদারীপুর, মাদারীপুর প্রতিদিন, Magura, Magura Protidin, মাগুরা, মাগুরা প্রতিদিন, Manikganj, Manikganj Protidin, মানিকগঞ্জ, মানিকগঞ্জ প্রতিদিন, Meherpur, Meherpur Protidin, মেহেরপুর, মেহেরপুর প্রতিদিন, Moulvibazar, Moulvibazar Protidin, মৌলভীবাজার, মৌলভীবাজার প্রতিদিন, Munshiganj, Munshiganj Protidin, মুন্সীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ প্রতিদিন, Mymensingh, Mymensingh Protidin, ময়মনসিংহ, ময়মনসিংহ প্রতিদিন, Naogaon, Naogaon Protidin, নওগাঁ, নওগাঁ প্রতিদিন, Narayanganj, Narayanganj Protidin, নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন, Narsingdi, Narsingdi Protidin, নরসিংদী, নরসিংদী প্রতিদিন, Natore , Natore Protidin, নাটোর, নাটোর প্রতিদিন, Nawabgonj, Nawabgonj Protidin, নওয়াবগঞ্জ, নওয়াবগঞ্জ প্রতিদিন, Netrokona, Netrokona Protidin, নেত্রকোনা, নেত্রকোনা প্রতিদিন, Nilphamari, Nilphamari Protidin, নীলফামারী, নীলফামারী প্রতিদিন, Noakhali, Noakhali Protidin, নোয়াখালী, নোয়াখালী প্রতিদিন, Norai, Norai Protidin, নড়াইল, নড়াইল প্রতিদিন, Pabna, Pabna Protidin, পাবনা, পাবনা প্রতিদিন, Panchagarh, Panchagarh Protidin, পঞ্চগড়, পঞ্চগড় প্রতিদিন, Patuakhali, Patuakhali Protidin, পটুয়াখালী, পটুয়াখালী প্রতিদিন, Pirojpur, Pirojpur Protidin, পিরোজপুর, পিরোজপুর প্রতিদিন, Rajbari, Rajbari Protidin, রাজবাড়ী, রাজবাড়ী প্রতিদিন, Rajshahi , Rajshahi Protidin, রাজশাহী, রাজশাহী প্রতিদিন, Rangamati, Rangamati Protidin, রাঙ্গামাটি, রাঙ্গামাটি প্রতিদিন, Rangpur, Rangpur Protidin, রংপুর, রংপুর প্রতিদিন, Satkhira, Satkhira Protidin, সাতক্ষীরা, সাতক্ষীরা প্রতিদিন, Shariyatpur, Shariyatpur Protidin, শরীয়তপুর, শরীয়তপুর প্রতিদিন, Sherpur, Sherpur Protidin, শেরপুর, শেরপুর প্রতিদিন, Sirajgonj, Sirajgonj Protidin, সিরাজগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ প্রতিদিন, Sunamganj, Sunamganj Protidin, সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ প্রতিদিন, Sylhet, Sylhet Protidin, সিলেট, সিলেট প্রতিদিন, Tangail, Tangail Protidin, টাঙ্গাইল, টাঙ্গাইল প্রতিদিন, Thakurgaon, Thakurgaon Protidin, ঠাকুরগাঁও, ঠাকুরগাঁও প্রতিদিন, ক্রাইম প্রতিদিন, ক্রাইম, প্রতিদিন, Crime, Protidin, অপরাধ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, অমুবাচা, crimeprotidin

মানুষের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন প্রকৃতি ও পরিবেশ। কিন্তু প্রতিনিয়ত মানুষ এ পরিবেশকে নানাভাবে দূষিত করে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছে। ঠিক খাল কেটে কুমির আনার মতো, পরিবেশের ক্ষতি করে মানুষ নিজেই তার চরম ক্ষতি করছে। বিশ্বজুড়ে এখন পরিবেশ দূষণের মাত্রা ভয়াবহ। এর ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে বহুমুখী দুর্যোগ-দুর্ভোগ নেমে আসছে দেশে দেশে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ক্রমেই কঠিন, ব্যয়বহুল, অস্বাস্থ্যকর এবং দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। পরিবর্তন ঘটছে প্রাকৃতিক পরিবেশের। বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে আবহাওয়ার ভয়াবহ বৈরিতা। এতে কোথাও অস্বাভাবিক বন্যা, কোথাও দাবদাহ আবার কোনো দেশ ভ‚মিকম্পে হচ্ছে বিপর্যস্ত। সামগ্রিকভাবে আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৬ষ্ঠ। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসমূহ মোকাবিলায় প্রস্তুতি-ব্যবস্থাপনা দুর্বল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে আছে।

আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে- যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে স্মরণকালের ভয়াবহ দাবানল ‘হিট ডোম’ দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে কোথাও কোথাও বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, তুষারঝড় হচ্ছে। চীন-ভারত-নেপাল-পাকিস্তানে আকস্মিক বন্যা-ভূমিধস, ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল তামিলনাড়–তে অস্বাভাবিক তাপদাহ। ভারতের কেরালা-মহারাষ্ট্রে প্রলয়ঙ্করী বন্যা, সউদী আরবে আকস্মিক অতিবৃষ্টি-বন্যা ছাড়াও মরুদেশটিতে তুষারপাত হয়েছে। সাম্প্রতিক এসব অস্বাভাবিক দুর্যোগের ঘটনার মধ্যদিয়ে আবহাওয়া-জলবায়ুর একের পর এক চরম বৈরী আচরণ ফুটে উঠেছে। এসব ভয়ঙ্কর আগামীর অশনি সঙ্কেত দিচ্ছে। বিজ্ঞানীদের ভাবিয়ে তুলেছে। বিজ্ঞানীরা বর্তমান অবস্থাকে ‘আবহাওয়া-জলবায়ুর অবনতিশীল সহিংস রূপ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তবে ‘চরম-ভাবাপন্ন আবহাওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক পূর্বাভাস দিতে আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা ব্যর্থ হয়েছেন’- একথা আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান বিজ্ঞানীরা এখন স্বীকার করছেন।

পরিবেশবিদের মতে, আবহাওয়ার এই বিরূপ প্রভাবের ফলে বাংলাদেশও এখন ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে। প্রকৃতির বৈরী আচরণে এরই মধ্যে অতিবৃষ্টি খরা-অনাবৃষ্টি, ঢল-বন্যা, দাবানল, হিটস্টোকে ফসলের জমি পুড়ে যাওয়া, বজ্রপাত-বজ্রঝড় ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস পাহাড়ধস জনস্বাস্থ্যহানি প্রাণ-প্রকৃতির ক্ষয়ক্ষতি ফল-ফসলে বিপর্যয় সমুদ্রসৈকতে খাদ সৃষ্টি জোয়ারের তীব্রতা কৃষিজমিতে লবণাক্ততার আগ্রাসন, নদীভাঙন এসব দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। আবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘন ঘন মৃদু ভ‚মিকম্পও বড় ভ‚মিকম্পের ইশারা করছে।

বিশিষ্ট জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আইনুন নিশাত বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বের খামখেয়ালির খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উঞ্চতার ফলে বাংলাদেশের প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। সময়ের সাথে সাথে দুর্যোগের প্যাটার্ন বদলাচ্ছে। গত বছর তিস্তা, বহ্মপুত্র নদীর পানির উচ্চতা ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছিল। এরপর আবার তীব্র খরা দেখা যায় দেশের অন্য অঞ্চলগুলোতে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমনের ওপর সমান জোর দিতে হবে। দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা বৃদ্ধি, ফান্ড তৈরি, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবেশ বিপর্যয় রোধের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করলে দ্বীপগুলো মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক শেখ আনোয়ার বলেন, আবহাওয়ার এই বিপর্যয়ের ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবন দারুণভাবে বিপর্যস্ত। এটি প্রকৃতির জন্যও ভীষণ হুমকিস্বরূপ। প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট ঝুঁকিগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে ভূমিক্ষয়, ভূমিকম্প, পানি এবং ভ‚মির লবণাক্ততা, দূষণ এবং আর্সেনিক দূষণ নিয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসসহ উপক‚লীয় এলাকায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে গলে যাচ্ছে পর্বত শিখরের বরফ আর মেরু অঞ্চলের হিমবাহ। ফলে সমুদ্রের পানির স্তর আরও উপরে উঠে আসতে শুরু করেছে। সমুদ্রের নোনা পানি প্লাবিত করছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সব মিলিয়ে দেশ ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে।

পরিবেশের বিরূপ প্রভাবের ফলে দেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের চিত্র আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদনে উঠে এসছে। নিম্নে তা তুলে ধরা হলো।

চট্টগ্রাম থেকে শফিউল আলম জানান,বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাবে রুদ্ররূপ নিয়েছে আবহাওয়া-জলবায়ু। জোয়ারের তীব্রতায় বিস্তীর্ণ জনবসতি তলিয়ে যাওয়া, চট্টগ্রাম মহানগরীর ‘নাভি’ আগ্রাবাদ-হালিশহর এলাকা নিয়মিত সামুদ্রিক জোয়ারে ডুব-ভাসি, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপ, দক্ষিণের ভোলা ও দক্ষিণ-পশ্চিমের সাতক্ষীরা জেলাসহ উপক‚লীয় অনেক এলাকা সমুদ্রগ্রাসে হুমকির মুখে থাকা, সুন্দরবনের প্রাণ সুন্দরী গাছের আগা-মরা রোগ (টপ ডাইয়িং), দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বকোণে কক্সবাজারসহ অনেক জেলায় আবাদী জমিতে লবণাক্ততার মারাত্মক আগ্রাসন, নদীভাঙন ও বাস্তুহারাদের মিছিল ক্রমাগত দীর্ঘ হচ্ছে।

বাংলাদেশেও ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রতি মাস, বছরের গড় তাপমাত্রার হিসাবে। যেমন গত জুন (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়) মাসে সারা দেশে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে শূন্য দশমিক তিন এবং শূন্য দশমিক এক ডিগ্রি সে. বেশি ছিল। এর আগের মাস, বছরজুড়ে পারদ ছিল ঊর্ধ্বে। এর ফলে বেড়ে গেছে বৃষ্টিপাত। আবার বৃষ্টিপাতেও ব্যাপক অসঙ্গতি হচ্ছে। অন্যদিকে মরুময়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে দেশের উত্তরাঞ্চল।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) জলবায়ু ও পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. মো. রিয়াজ আখতার মল্লিক এক গবেষণায় জানান, বাংলাদেশে গত ৫০ বছরে বৃষ্টিপাতের পারিমাণ বেড়ে গেছে। যা বার্ষিক গড়ে অন্তত ২৫০ মিলিমিটার। সীমিত জায়গা বা এলাকায় হঠাৎ ও স্বল্প সময়কালীন অতিবর্ষণের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে বেড়ে যাচ্ছে জনদুর্ভোগ। ঢাকা, চট্টগ্রামের মতো বড় শহর-নগরে পানিবদ্ধতার এটি প্রধান দিক।

আবহাওয়া-জলবায়ুর আবহমানকালের চিরচেনা রূপ ও বৈশিষ্ট্য বদলে যাচ্ছে। চিরায়ত ষড়ঋতুর আদি চরিত্র পাল্টে যাচ্ছে। পঞ্জিকার ছকে ‘বর্ষা’য় বৃষ্টি ঝরে কম। অথচ প্রাক-বর্ষা ও বর্ষাত্তোর ‘অকালে’ অঝোর বর্ষণে দীর্ঘায়িত হচ্ছে বর্ষাকাল। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ঘন ঘন প্রবল সামুদ্রিক জোয়ারে ও অতিবর্ষণে ভাসছে। ছোট ছোট জলোচ্ছ¡াসের প্রকোপ বাড়ছে। বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য থাকায় গ্রীষ্মের খরতাপ যেন মরুর আগুনের হলকা। অসহনীয় ‘গরমকাল’ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। কিন্তু ‘শীতকাল’র স্থায়িত্ব অল্প কিছুদিন। শরৎ, হেমন্ত ও বসন্ত পঞ্জিকার পাতায় থাকলেও আলাদা করে চেনা যায় না, জনজীবনে তেমন অনুভ‚তি জাগায় না। এককালে মানুষের বান্ধব যে আবহাওয়া-জলবায়ু, তা এখন জটিল সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ধকলে হ্রাস পাচ্ছে মানবসম্পদের উৎপাদনশীলতা।

বাংলাদেশ শুধুই নয়। মারাত্মক বৈরীরূপ ধারণ করা আবহাওয়া-জলবায়ুর কবলে দেশে দেশে দুর্যোগ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার অনেক দেশে খরা, অতিবৃষ্টি, বন্যা, ভূমিধস, দাবানল, ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডোর মতো বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগের মাত্রা বেড়েই চলেছে। বিজ্ঞানীরা বারবার সতর্ক করছেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়া হলে চরম আবহাওয়ার কবলে পড়বে পৃথিবী। যা এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। তবে জার্মানির ভয়াবহ বন্যা, উত্তর আমেরিকার হিট ডোম, যা স্মরণকালের ভয়াবহ দাবানলসহ বিশে^র দেশে দেশে ঘটমান নজিরবিহীন ও চরম দুর্যোগ সম্পর্কে পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন শীর্ষ জলবায়ু বিজ্ঞানীরা। তবে তারা কয়েক দশক যাবৎ সতর্ক করে আসছেন দ্রæতগতিতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে ব্যাপক বৃষ্টিপাত এবং আরও মারাত্মক ধরনের দাবানল ও তাবদাহের সৃষ্টি হবে।

কক্সবাজার থেকে শামসুল হক শারেক জানান, আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে সাগরে পানি বেড়েছে অস্বাভাবিক। এতে কক্সবাজার উপক‚লে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে দেখা দিয়েছে ভাঙন। আর এই ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে চলছে জোয়ার-ভাটা। কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া ও টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা পূর্ণিমায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলকার প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অর্ধশতাধিক পয়েন্টের ভাঙা দিয়ে সাগরের পানি ঢুকে সেখানে চলছে জোয়ার-ভাটা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে এই বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মসজিদ-মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চকরিয়ার মাতামুহুরি নদীতে পানি বেড়ে দু’ক‚ল উপচে জনদুর্ভোগ বাড়িয়েছে। জোয়ারের সাময় সাগরের পানিতে প্রতিদিন ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে- দেশের গর্ব ৮০ কিমি. দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বিভিন্ন স্থান। কক্সবাজার সৈকতে ভাঙন, ঝুঁকিতে বিদ্যুৎ লাইন ও ঝাউবাগান। সাগরে লঘুচাপ কেটে যাওয়ায় এখন কোনো সতর্ক সংকেত নেই। তবে সাগর এখনো উত্তাল রয়েছে। পূর্ণিমার জোয়ারে গত কয়দিনে সাগরে বেশ পানি বেড়েছে এবং কুতুবদিয়া ও টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকেছে। একইভাবে কক্সবাজার সৈকতের ঝাউবাগানের বিরাট অংশ জোয়ারের পানিতে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে তিনদিন ধরে ডুবে আছে কুতুবদিয়ার বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ তিন কি.মি. এলাকা। বালুর বস্তা দিয়ে জোয়ারের পানি ঠেকাতে চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় তিন-চার ফুট বেড়েছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে লোকালয়। উপক‚লীয় সাত ইউনিয়নের দুই লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে আতঙ্কও বাড়ছে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিবছর ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটি কোটি টাকা বরাদ্দে উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখলেও জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে স্থায়ীভাবে টেকসই কোনো ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্থায়ী প্রকল্প গ্রহণ করার কারণে নদীর ভাঙনের তীব্রতায় তা বছরের মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, মাতামুহুরী নদীর ভাঙন প্রতিরোধে একাধিক টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঊর্ধ্বতন দফতরে ইতোপূর্বে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

সিলেট থেকে ফয়সাল আমীন জানান, নদনদী ভাঙন অনিবার্য হয়ে উঠেছে সিলেটে। ভয়াবহ নদী ভাঙনের শিকার সিলেটের সীমান্ত এলাকা জকিগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজারের সুরমা, কুশিয়ারা নদী তীরের হাজার হাজার মানুষ। মৌসুমে নতুন করে ভাঙনের কবলে পড়ে ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন তারা। সুরমা কুশিয়ারার মিলনস্থল সিলেটের সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জের নদীভাঙন যেন কমছেই না। সুরমা নদীতে ভাঙতে শুরু হয়েছে, উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নের মৌলভীরচক, চিনিরচক, হাজিগঞ্জ নোয়াগ্রাম, আইওর এলাকার বিভিন্ন জায়গা।

এ ছাড়াও টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারিপুর, শরিয়তপুর, চাঁদপুর, ল²ীপুর, বরগুনা এসব এলাকায় তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন। টাঙ্গাইল থেকে আতাউর রহমান আজাদ, জানান, জেলায় যমুনা ও ঝিনাই নদীর ভাঙনে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ তিন শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরিভাবে ফেলা জিওব্যাগও যমুনার করাল থাবা থামাতে ব্যর্থ হচ্ছে। যমুনার প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিতে চারটি ও ঝিনাই নদী তীরবর্তী একটি উপজেলায় এরই মধ্যে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী জানান, ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। ক্রমে ক্রমে যমুনা নদী তার যৌবন ফিরে পেয়ে আগ্রাসী রূপ ধারণ করছে। সেই সাথে যমুনা নদীপাড়ের ভাঙন শুরু হয়েছে। জেলার নদী তীরবর্তী পাঁচটি উপজেলার নদীপাড়ে ভাঙনে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের গুনেরগাতী, বেলকুচি, এনায়েতপুর, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী পাচিল শরিফমোড় গ্রাম ও কাজিপুর সদরে আবারও নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

শরীয়তপুর থেকে আলহাজ মো. হাবিবুর রহমান হাবীব জানান, জেলার জাজিরার পাইনপাড়ায় পদ্মা নদীরভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে ১৩টি বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে- চরের ২ হাজার পরিবার ও ৬ হাজার ৬৬৬ বিঘা ফসলি জমি।

মাদারীপুর থেকে আবুল হাসান সোহেল জানান, আড়িয়াল খাঁ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে কালকিনি উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের হোগলপাতিয়া, পূর্ব এনায়েতনগরের মোল্লারহাট, বাশগাড়ি চরদৌলতখান রমজানপুর চরআলিমাবাদ গ্রামসহ সাহেবরামপুর বাজার নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ল²ীপুর থেকে এস এম বাবুল (বাবর) জানান, কমলনগর-রামগতি উপজেলার মেঘনা উপক‚লীয় অঞ্চলে চলতি বর্ষা মৌসুমে নতুন করে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। প্রচন্ড জোয়ারে মেঘনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ থেকে মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, পদ্মা নদীর অব্যাহত ভাঙনে লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলিজমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নিঃস্ব এবং ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছে শতাধিক পরিবার। লৌহজং শতবর্ষী ব্রাহ্মণগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

চাঁদপুর থেকে বি এম হান্নান জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানিপ্রবাহ শহর রক্ষা বাঁধে আঘাত হানছে। সৃষ্ট ঘূর্ণি স্রোতের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে শহররক্ষা বাঁধের মোলহেড।

ফরিদপুর থেকে আনোয়ার জাহিদ জানান, সদর উপজেলা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় চলছে- তীব্র নদীভাঙন। ভাঙন ঠেকানোর উদ্যোগ যতসামান্য। পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্য ফরিদপুর-রাজবাড়ী গোয়ালন্দ পয়েন্টের এবং ফরিদপুর সদর কুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার খুব কাছাকাছি আসছে। নদী ভাঙনের কবলে পরে ফরিদপুর সদর উপজেলার ৫০টি বাড়ি, সদরপুর উপজেলার শতাধিক বিঘা ফসলি জমি, চরভদ্রাসন উপজেলার কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ বাড়ি পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে গেছে।*

নিউজটি শেয়ার করুন

 
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
-->

Shotoborshe Mujib, A Z M Mainul Islam Palash, Crime Protidin Media And Publication