চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বলাখাল ওলিউল্ল্যাহ সর্দার বাড়ির মৃত হাবিবউল্ল্যাহ মুন্সীর স্ত্রী রহিমা বেগম। যার বয়স এখন প্রায় ১২৫ বছর। ৫০ বছর পূর্বে স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি।
চার ছেলে চার মেয়েসহ বড় একটি পরিবারের দায়িত্বে ছিলেন রহিমা। কিন্তু যখন শতায়ু পার করেন তখন থেকেই আস্তে আস্তে পরিবারের লোকজন আলাদা হয়ে যান। কিন্তু বৃদ্ধা রহিমার বয়স যত বাড়ছে ততই যেন তিনি ছেলেদের বোঝা হয়ে উঠছেন। সন্তানদের পরিবারের মাঝে দেখা দেয় ভাগভাটোয়ারা নিয়ে দূরত্ব। সবাই এখন আলাদা সংসার করছেন। বর্তমানে দুই ছেলের মধ্যে সম্পত্তির জটিলতা দেখা দেওয়ায় রহিমার জীবনেও দেখা দিয়েছে বাঁচার জটিলতা।
বৃদ্ধার দুই মেয়ে শাহিদা ও নূরজাহান বেগম বলেন, আমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে জায়গা জমির বিরোধে মাকে নিয়ে এক প্রকার টানাহেঁচড়া শুরু হয়েছে। তার সেবা করার মতো যেন কারও সময় নেই। তারা এখন মামলায় জড়িয়ে মায়ের থাকার মতো পরিবেশ নেই বললেই চলে।
খলিলুর রহমানের বড়মেয়ে রাজিয়া সুলতানা বলেন, আমার জেঠা আবুল বাসার কৌশলে দাদির কাছ থেকে প্রায় ১৩ শতাংশ জায়গা লিখে নেন। আমার বাবা খলিলুর রহমান পরিবারের ছোটছেলে হিসেবে দাদার ঘর পেয়ে মেরামত করেছেন। কিন্তু গত মাসে আমার জেঠা আবুল বাসার ও তার ছেলে নুরে আলম জোরপূর্বক দাদার দেওয়া ঘর উচ্ছেদ করে সেখানে নতুন ঘর তৈরি করে দখল করেছেন। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার বসার পরেও তারা বলেন আমরা নাকি কোনো জায়গাজমি পাব না। তাই বাধ্য হয়ে থানায় ঘর উচ্ছেদের অভিযোগ দায়ের করেছি।
বৃদ্ধা রহিমার বড়ছেলে আবুল বাসার বলেন, বৃদ্ধ মা আমার ঘরে থাকেন, তা সবাই জানে। মায়ের নিজ অংশ থেকে কিছু সম্পত্তি আমাকে দান করেছেন। আমার ভাই খলিলুর রহমান মায়ের কোনো খোঁজখবর নেন না।
স্থানীয় কাউন্সিলর মাঈনুদ্দিন মিজি বলেন, এই পরিবারের ১২৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা মায়ের সন্তানরা যে যার মতো জীবনযাপন করছেন। দুই ভাইয়ের জটিলতার কারণে বৃদ্বা মায়ের সেবা কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। খলিলুর রহমানের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা তার বৃদ্ধা দাদির সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করেছে তা বিবেকবান কেউ মেনে নিতে পারে না। রহিমা বৃদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন কিনা আমি সঠিক জানি না। যদি না পেয়ে থাকেন আমি মেয়রের সঙ্গে কথা বলে অবশ্যই ব্যবস্থা করব। আমি বৃদ্ধার ছেলেদের বসার আহবান জানিয়েছি। দেখা যাক কী করা যায়।