প্রেম’ আর ‘ধর্ষণ’- দুটি বহুল পরিচিত শব্দ। ‘প্রেম’ প্রাচীন আর ‘ধর্ষণ’ সাম্প্রতিক সবচেয়ে আলোচিত। দুই শব্দের মধ্যে মিল থাকলেও রয়েছে অনেক গরমিল।
প্রেমঃ নারী-পুরুষ উভয়ের সম্মতিতে যেটা ঘটে সেটার নাম প্রেম। যাকে বর্তমান যুগে ভালবাসাও বলা হয়!
ধর্ষণঃ নারীর অসম্মতিতে জোর-জবরদস্তিমূলক যে যৌনাচার ঘটে সেটা ধর্ষণ।
অর্থাৎ নারীর সম্মতিতে দেহভোগ করলে প্রেম-ভালোবাসা। কিন্তু জোরপূর্বক ভোগ করলে ধর্ষণ! ঠিক বর্তমান চিত্র এমনটাই।
প্রেম চলে প্রকাশ্যে। ধর্ষণ চুপিসারে, অতি গোপনে। প্রেম থেকেই অনেকটা ধর্ষণের উৎপত্তি। ধর্ষণের জন্য আইন-শাস্তি থাকলেও প্রেমের বিরুদ্ধে কোন আইন বা শাস্তি নাই। পর নারী-পুরুষ মেলামেশাতো দূরের কথা, অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তাও হারাম করেছে ইসলাম।
দেশে ৫% ধর্ষণের তুলনায় ৯৫% প্রেম ভালোবাসার নামে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। অথচ তারাই ধর্ষকের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়! আর যেসব নারী তাদের দেহকে পাবলিক করে দিয়েছে তারাও গলা ফাটায় টকশোতে। মিছিল করে রাস্তায়।
প্রেম-ভালোবাসার নামে যে ধর্ষণ চলছে তাকে রোমান্টিকতা, আধুনিকতা, রুমডেট, লিটনের ফ্লাট, লং ড্রাইভ, ডিজে পার্টি, নাইট পার্টি ইত্যাদি নাম দিয়েছে শয়তানরা!
আজকালকার পোলাপানরা প্রেম, রিলেশন, পার্কে ঘোরা, রুম ডেট ঠিকই করে। পার্কের চিপায় চাপায়ও কিন্তু প্রেম ভালোবাসার আড়ালে ধর্ষণ হচ্ছে। খালি পার্থক্য হলো- একটা উভয়ের ইচ্ছায়। আরেকটা একজনের ইচ্ছায়।
দুইটাই মারাত্মক ও জঘন্য। ইসলামে তো অবশ্যই হারাম। বিয়ে বহির্ভূত প্রেম-ভালোবাসা বন্ধ করুন। বিয়ে প্রথা সহজ করুন। ছোটকাল থেকে সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় গড়ে তুলুন।
বর্তমানে প্রতিনিয়ত ঘটছে ধর্ষণের ঘটনা। ধর্ষিত হচ্ছে স্কুল-কলেজ, মারাসার ছাত্রী। ৪ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৪০ বছরের মহিলাও বাদ যাচ্ছেনা। খবরের পাতা ধর্ষণের ঘটনায় ভরপুর। অনেক সময় দেখা যায়, প্রেম-ফিরিতি, ফস্টিনস্টির পর গরমিল হলেই অভিযোগ আনা হয় ধর্ষণের। বিশেষ ফায়দা হাসিলের জন্য থানা, আদালতে মামলা করে মেয়ে বা তার স্বজনেরা।
নগ্নতা রোধ না করে কখনো ধর্ষণ রোধ সম্ভব নয়। যেমন ধরুন আপনি একজন নায়িকার ছোট পোশাকে একটা হট আইটেম গান দেখে আপনার যৌনলালসা জেগে উঠল। কিন্তু হাতের কাছে ওই নায়িকাকে পাচ্ছেন না। তখন হাতের কাছে যাকে পাচ্ছেন তাকে দিয়েই আপনার যৌনলালসা পূরণ করছেন। সে ছোট হোক, বড় হোক কিংবা বুড়ো হোক। এর জন্য দায়ী বর্তমান প্রচলিত গানবাজনা, সিনামা হল, নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা।
ফেইসবুক-ইন্টারনেটে ঢুকলে উলঙ্গ মেয়ের ছবি ভুরি ভুরি। পর্ণ সাইট তো আছেই। রাস্তাঘাটে বের হলে মেয়েদের বডি দেখানো পোশাক। এসব কিছু কিন্তু ধর্ষণের প্রজনন কেন্দ্র।
আধুনিকতার নামে বেহায়াপনা, নগ্নতা, অশালীন পোশাক, ইন্টারনেট, পর্ণ, এসব কিছুর নেগেটিভ প্রভাব পড়ছে কোনো একক নিরীহ মেয়ের উপর। ধর্ষিত হচ্ছে আমার মা বোন।
পরিশেষে একটা কথাই বলবো প্রেমের নামে ধর্ষণ কিংবা অসম্মতিতে ধর্ষণ, দুইটাই সমান অপরাধ, খালি পার্থক্য হলো- একটা উভয়ের ইচ্ছায়। আরেকটা একজনের ইচ্ছায়। আসুন এসব পরিহার করি, ইসলামিক জীবন যাপন করি।