গাজীপুরের শ্রীপুরে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে অপু দেওয়ান (১৪) নামে এক শিশুশ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার ভোরে পৌরসভার বৈরাগীর চালা এলাকার আনোয়ারা মান্নান টেক্সটাইল কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
অপু দেওয়ান মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের পূর্ব শিয়ালদি গ্রামের পলাশ দেওয়ানের ছেলে। সে মা-বাবার সঙ্গে কেওয়া দক্ষিণখণ্ড গ্রামে ভাড়া থেকে ওই কারখানায় রিং সেকশনে কাজ করত।
নিহতের সহকর্মীরা জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ১০টা থেকে অপু দেওয়ানসহ তারা কয়েকজন শিশুশ্রমিক কাজ করছিল। শনিবার ভোর ৬টায় তাদের ছুটি হওয়ার কথা ছিল।
ছুটি হওয়ার ২০ মিনিট আগে ‘দুষ্টুমির ছলে’ অপুর পায়ুপথে মেশিনের পাইপ দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে দেয় সহকর্মী রাজু।
এ সময় অপুর পেট ফুলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যায় সে।
অভিযুক্ত রাজু দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থানার মধ্যপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ জনাব আলীর ছেলে। সে অপুর সঙ্গে একই কারখানায় কাজ করে। রাজুকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
নিহতের মা জোসনা খাতুন জানান, চার মাস আগে অপু ওই কারখানায় সাড়ে চার হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেয়। সকালে ডিউটি শেষে সহকর্মী রাজু তার পায়ুপথে হাওয়া মেশিনের পাইপ ঢুকিয়ে দেয়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং পেট ফুলে যায়।
অপুর সহকর্মী আশিকুর জানায়, তাদের ছুটির কয়েক মিনিট আগে রাজু অপুর পায়ুপথে হাওয়া মেশিনের নল দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে দেয়। এতে তার পেট ফুলে ব্যথা শুরু হলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, সকাল ৭টার দিকে পেট ফোলা অবস্থায় ওই শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে।
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কারখানার অ্যাডমিন ম্যানেজার জাকারিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত শিশু রাজুকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।