নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের জন্য সব ধরনের প্রক্রিয়া গ্রহন করেছে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ প্রাপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনও অংশ নিয়েছেন। বির্তকিত ব্যক্তি দাবি করে তাঁকে রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগে বিবেচনা না করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছে নোবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশন।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে নোবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন লিখিত আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরআগে বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর এই লিখিত আবেদন দায়ের করা হয়।
ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন নোবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রারের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় দাপ্তরিক নথির ডুপ্লিকেট কপি তৈরি, সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী পরিবর্তন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, প্রতারণা এবং নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, আদর্শগত নেতিবাচক কর্মকান্ডসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
নোবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন পলাশ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী রেজিস্ট্রার পদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রেরিস্ট্রার পদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সাচিবিক পদ হিসেবে বিবেচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বহিঃস্থ অন্যান্য অফিসের সাথে সার্বক্ষনিক রেজিস্ট্রারকে যোগাযোগ ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হয়। নোবিপ্রবির রেজিস্ট্রার পদে স্বল্প সময়ের মধ্যে নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আইনের তোয়াক্কা না করে অনৈতিক সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বির্তকিত ব্যক্তি ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ বিবেচনার পায়তারা করছে কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও আদর্শগত বিভিন্ন নেতিবাচক কার্যকলাপের অভিযোগ ওঠে। যার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
এসব বির্তকিত কর্মকান্ডের পরও মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে রেজিস্ট্রার পদে বিবেচনা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউই তাঁকে মেনে নিবে না। তাই বির্তকিত ব্যক্তি হিসেবে মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে রেজিস্ট্রার পদে বিবেচনা না করার দাবি জানান এই দুই কর্মকর্তাসহ অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতারা।
এদিকে, শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে নোবিপ্রবি’র সেকশন অফিসার পদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য ৬৩জন আবেদনকারীকে নির্বাচন করা হয়। আবেদনকারীদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের অভিযোগ, সেকশন অফিসার পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সেন্ডিকেট অসাধু উপায়ে অর্থ আদায়ের মাধ্যমে নিয়োগের লক্ষ্যে নিজেদের পছন্দের চাকুরী প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন। এতে প্রকৃত মেধার মূল্যায়ন হয়নি। বঞ্চিত হয়েছেন মেধাবীরা। এই মৌখিক পরীক্ষা বাতিলপূর্বক লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্রগুলো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পুনঃমূল্যায়নের দাবি জানান সেকশন অফিসার পদে চাকুরী প্রার্থী আবেদনকারীরা।
অভিযুক্ত ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের মন্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে কল করলে তিনি মোবাইলে এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুল বাকীর মুঠোফোনে কল করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ফলে এসব বিষয়ে মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অফিসার্স এসোসিয়েশনের লিখিত আবেদন এবং রেজিস্ট্রার ও সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ সংক্রান্ত অভিয়োগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টা ৪৬ মিনিটে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দিদারুল আলমের মুঠোফোনেও একাধিক বার কল করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাঁর মন্তব্যও জানা যায়নি।