ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে আইন করে মুসলিম নারীদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হলেও করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর দেশটির নাগরিকরা এখন মুখ ঢেকে চলাফেরা করতে বাধ্য হচ্ছেন!
এমনকি মুখোশ না পরে বা মুখ না ঢেকে চলাফেরা করলে ১৫০ ইউরো জরিমানার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৪৬৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৯১ জন।
সম্প্রতি ফ্রান্সের বিখ্যাত ‘প্যারিস ফ্যাশন সপ্তাহ’- এ মডেলরা মুখোশ পরেই অংশগ্রহণ করেন। মডেলদের পরিহিত মুখোশগুলো দেখতে অনেকটাই হিজাবের মতোই ছিল।
শুধু ফ্রান্সেই নয়, বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় নারী মডেল থেকে শুরু করে সবাই মুখোশ পরছেন। নিরাপত্তার বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রেখেই তারা এ মুখোশ পড়ছেন।
প্যারিসের ওই ফ্যাশন সপ্তাহ নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিবিসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ওই প্রতিবেদনটি টুইটারে শেয়ার করেন নামিরা ইসলাম নামের এক নারী। টুইটার হ্যান্ডেলে ওই নারী নিজেকে বাঙালি মুসলিম আইনজীবী ও গ্রাফিক ডিজাইনার বলে উল্লেখ করেছেন।
নামিরা ইসলাম বলেন, এবং যেখানে আমাকে বলা হয়েছিল, উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপরাধ ও নিরাপত্তা হুমকির জন্য তোমার মুখ ঢেকে (পর্দা) রাখ।’
ফ্রান্সের হিজাব নিষিদ্ধের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে টুইটবার্তার কমেন্টবক্সে তিনি আরও লেখেন- ফ্রান্স হলো সেই দেশ যারা মুখের ওড়নার (হিজাব) ওপর প্রথম নিষেধাজ্ঞার প্রবর্তন করেছিল।
নামিরা ইসলাম জানান, ‘প্রকাশ্য স্থানে মুখ গোপন করা’ হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লড গুয়ান্ট।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ফ্রান্স যখন প্রথম ‘মুখ ঢাকা পোষাক’ নিষিদ্ধ করে তখন তা ইউরোপে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করে। ইউরোপে ফ্রান্সই ছিল প্রথম দেশ যারা এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়।
ফ্রান্সে কেবল বোরকা নয়, মুখ ঢাকা যে কোনো পোশাক, মুখোশ, বালাক্লাভা, হেলমেট বা হুড – যা পরিচয় গোপন রাখতে সহায়তা করে, তা নিষিদ্ধ।
২০১৯ সালের ১৬ মে ফ্রান্সের সংসদ অধিবেশনে স্কুল শিক্ষার্থীদের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।