৫-৭ জনের বেশি জড়ো হওয়া ঠেকাতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে মাঠে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. ইলিয়াস হোসেন।
তিনি জানিয়েছেন, ‘কোনো জায়গায় অধিক লোক যাতে জড়ো হতে না পারে, ৫-৭ জনের বেশি লোক যাতে জড়ো না হয় এবং জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজন যাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলাফেরা করে- সেটা নিশ্চিত করবে সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনীর কর্মপদ্ধতি নির্ধারণে অনুষ্ঠিত সভা শেষে জেলা প্রশাসক এসব তথ্য জানান।
মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, ‘ইন অ্যাইড টু সিভিল পাওয়ার অনুসারে সেনাবাহিনী যে কাজগুলো করবে, সেই কর্মপরিকল্পনা সভায় আমরা ঠিক করেছি। হোম কোয়ারেন্টিনে যারা আছে, সেখানে অনেকেই কোয়ারেন্টিন মানছে না। আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিয়েছি অনেককে।
এরপরেও অনেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সব প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীকে সরকার মাঠে নামিয়েছে। এখানেও (চট্টগ্রামে) সেনাবাহিনী সেটা করবে। পাশাপাশি আমাদের সিভিল প্রশাসনকে তারা সবধরনের সহায়তা দেবে।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমাদের হোম কোয়ারেন্টিনে আছে ৯৭৩ জন। এ সংখ্যা গত ৩ দিন ধরে একই অবস্থায় আছে। এটা আমাদের জন্য একটা পজিটিভ দিক। নতুন করে কোনো প্রবাসী আমাদের এখানে আসেনি।
আমাদের এখানে আইসোলেশনেও কোনো রোগী নেই। তবে যদি আইসোলেশনের দরকার হয়- ৩টি হাসপাতাল আমরা তৈরি রেখেছি।’ তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমরা ফ্লু কর্নার ওপেন করেছি। জেনারেল হাসপাতালেও ফ্লু কর্নার ওপেন করা হয়েছে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে কমপক্ষে দুইটি আইসিইউ বেড করোনা রোগীর জন্য রাখতে বলা হয়েছে। দু’একটি বেসরকারি হাসপাতালকে পুরোপুরি করোনা বেইজড করতে আমরা কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য আমরা ৫টি ভেন্যু ঠিক করেছি। সিআরবির চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতাল, হালিশহরের পিএইচ আমিন উচ্চ বিদ্যালয়, বহদ্দারহাটের সিডিএ গার্লস স্কুল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ ফজিলাতুন্নেসা হল এবং পটিয়ার মোজাফফরাবাদ স্কুলকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন হিসেবে তৈরি করেছি।
’ জেলা প্রশাসক বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে কোনো রোগীর উপসর্গ দেখা দিলে তিনি প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাবেন। ডাক্তার যদি তাকে নমুনা সংগ্রহ করতে বলেন, বা তাকে আইসোলেশনে পাঠানোর প্রয়োজন মনে করেন- তাহলে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স আমাদের প্রস্তুত রয়েছে। সেই অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ তাকে হাসপাতালের আইসোলেশনে নিয়ে আসবে। সেখানে তার চিকিৎসা হবে।’
এর আগে সোমবার (২৩ মার্চ) বিকেলে ঢাকায় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মঙ্গলবার থেকে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে সেনাবাহিনী স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তায় নিয়োজিত হবে।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে সেনাবাহিনী জেলা ও বিভাগীয় এলাকায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।