• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৩০ মার্চ, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

পশ্চিমবঙ্গে কেউ অনাহারে থাকবে না, ঘোষণা মমতার

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

তিনি বসে থাকবেন না, বারবার এমন কথা বলেছেন। করোনা থেকে রাজ্যের মানুষকে বাঁচাতে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি প্রশাসনিক স্তকে তাঁর আপ্রাণ চেষ্টা নজর কাড়ছে সকলের। বলছিলাম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা

সমস্ত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে তিনি যে গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছেন, তার প্রমাণ মিলল সোমবার জেলাপ্র ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স থেকেই। জানিয়ে দিলেন, ‘কেউ যেন এ রাজ্যে অনাহারে না থাকে। কোনও কার্পণ্য করবেন না, রেশন কার্ড না থাকলেও খাবার দেবেন সবাইকে। মানুষ বাঁচলে, পয়সা আসবে।’

ইন্ডিয়া টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু তাই নয়, এদিন ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিমার পরিমাণ ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ করা হয়েছে। বিমার আওতায় আনা হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদেরও। সেইসঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামোও করোনার জন্য সরকার ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন। সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদেরও সরকার ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আশঙ্কার সুরেই তিনি বলেন, ‘আগামী দু সপ্তাহ খুব জরুরি। এই সময়টা এমার্জেন্সি। আমাদের ২৪*৭ কাজ করতে হবে।’ তিনি বিমার আওতায় এনেছেন পুলিশ, নমুনা সংগ্রহকারী ক্যুরিয়র সার্ভিসের কর্মীদেরও। জানিয়েছেন, ৩০০ ভেন্টিলেটরের অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। তা পাওয়া গিয়েছে। আরও ৩০০ অর্ডার দেওয়া হল।

তবে, এদিনের মমতার বৈঠককে অনেকেই বেনজির বলছেন। একজন মুখ্যমন্ত্রী এভাবে জেলাপ্রশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করে গোটা রাজ্যের মানুষকে তা লাইভ দেখিয়ে উদ্দীপ্ত করছেন, তা এক কথায় নজিরবিহীন। রীতিমতো আবেগি হয়ে পড়েন তিনি। অনেক প্রশাসনিক আধিকারিককেও তাঁর কাছে মৃদু বকুনি খেতে দেখা যায়। কিন্তু গোটাটাই যে তিনি এই মুহূর্তে রাজ্যের জন্য করছেন, বুঝিয়ে দেন প্রতিটি ছত্রে। জানিয়ে দেন, এ রাজ্যে গরিব, ভবঘুরে, বৃদ্ধদের পাশে দাঁড়াতেই হবে। কোনও আপোষ করা হবে না তাঁদের সঙ্গে।

করোনা নিয়ে রাজ্যের জেলাগুলোর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ, সোমবার বৈঠক করেন। নবান্ন থেকে জেলাপ্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন তিনি। জেলাপ্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের লকডাউন নিয়ে মঙ্গলবার পর্যালোচনা বৈঠক করবেন বলে নবান্ন সূত্রের খবর। মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, লকডাউন পরিস্থিতিতে কড়াকড়ি শিথিল করা হবে কি না, তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।

গ্রামের চাষিদের কাছ থেকে সব্জি নিয়ে শহরে কী ভাবে নিয়মিত আনা যায়, সেই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। জেলায় জরুরি ভিত্তিতে কোয়ারান্টিন সেন্টার তৈরি করার জন্য বিয়েবাড়ি, কমিউনিটি হল, সরকারি ও বেসরকারি ভবন চিহ্নিতকরণ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ কতটা হয়েছে, সেই ব্যাপারেও আজকের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গেও করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের জেরে এখন আটকে রয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রুটি-রুজির সন্ধানে আসা শ্রমিকরা। নবান্ন থেকে এ বার এই মর্মে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, রাজ্যের কোনও জেলায় ভিন রাজ্যের কোনও শ্রমিকের যেন থাকাখাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা না-হয়, প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে তা নিশ্চিত করতে হবে। এদিনের বৈঠকেও জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের সেই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।