• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৩১ মার্চ, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

পাকিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮০০ ছাড়িয়েছে

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মারণ করোনাভাইরাস থেকে রেহাই মেলেনি প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানেরও। প্রতিনিয়তই দেশটিতে এর সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত ১৮শ’ ছাড়িয়েছে আক্রান্তের সংখ্য।

আজ মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) পর্যন্ত দেশটিতে ১৮৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছে; মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। আর চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছে ৭৬ জন। আরও ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল বিভিন্ন হাসপাতালে।

পাকিস্তানের স্বাস্থ্যসেবা মন্ত্রণালয়ের করোনাভাইরাস সম্পর্কিত ওয়েবসাইটের আপডেটে দেখা গেছে, দেশটির বৃহত্তম প্রদেশ পাঞ্জাবে সর্বাধিক ৬৫২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

এছাড়াও সিন্ধু প্রদেশে সর্বাধিক ৬২৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। সেইসাথে খাইবার-পাখতুনখোয়ায় ২২১জন, বেলুচিস্তানে ১৫৩ জন, গিলগিট-বাল্টিস্তান ১৪৮জন, ইসলামাবাদ ৫৫৮ জন এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে ৬ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। ওয়েবসাইটে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪৮ জন  নতুন আক্রান্তের কথা জানানো হয়েছে।

করোনা থাবায় যেখানে বিশ্ব স্তব্ধ, সেখানে পাকিস্তানের মানুষ হাঁটছে উল্টো পথে। এই মুহূর্তে করোনা সংকটে এক ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন পাকিস্তান।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পাকিস্তানের চিকিৎসকরা করোনা আতঙ্কের মধ্যে রোগী দেখা ছেড়ে দিয়ে দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এরমধ্যে দেশটির আলেমরা এখনো মসজিদ বন্ধ রাখছেন না, এমনকি সেখানের মা-বাবারাও কোয়ারেন্টাইন মানতে নারাজ। তারা সন্তানদের নির্বিঘ্নে বাইরে যেতে দিচ্ছেন, ফলে ক্রিকেট খেলায় ও রাস্তাঘাটে হইহুল্লোডড়ে মাতছে শিশুরা।

পৃথিবীর ৫ম জনবহুল এই দেশে করোনা নিয়ে নিয়ম-নীতির কোনও তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। যার ফলে দ্রুতই করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঘটছে দেশটিতে। নড়বড়ে অর্থনীতির পাকিস্তান এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ২২ কোটি জনসংখ্যার এই দেশ এখনো পর্যান্ত বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ ও জনস্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারেনি। যে দেশে এখনো জলাতঙ্ক ও শিশু-ব্যাধি পোলিও মহামারী, তার মধ্যে করোনা প্রতিরোধ নিয়ে কোনও মাথা ব্যথা নেই তাদের।

দেশটিরে আলেম সমাজ করোনা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইমরান সরকারের কোনও নির্দেশনা মানছে না। পাকিস্তানের মসজিদগুলো করোনা বিষয়ক নির্দেশনা প্রত্যাখান করেছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ ও রাজ্য প্রশাসনের আহ্বান মেনে নেয়নি। তিনি লকডাউন ঘোষণা করতে চাননি। তিনি জানান, লকডাউন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেবে। আমি বরং আহ্বান জানাবো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ চালিয়ে যাওয়ার। কেন না, এদেশের মিলস-ফাক্টরিই অর্থনীতির মেরুদণ্ড।

তবে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই বেগতিক হওয়ায় অবশেষে ইমরানের উল্টো সুরে অ্যাকশনে নেমেছে দেশটির আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এই সিদ্ধান্তে আসতে বেশ দেরি হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে চিকিৎসক ও নার্সরা কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। একই সঙ্গে আলেম সমাজও ক্ষেপে উঠেছে ইমরান সরকারের উপর। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘোষণা দেওয়া জুমার নামাজ সীমিত করার বিষয়টি মেনে নেয়নি দেশটির আলেম সমাজ।

দেশটির কয়েকজন ধর্মীয় নেতা জনগণকে মসজিদে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। এমন কিছু ভিডিও এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। আলেমদের দাবি, আমরা করোনাভাইরাসের কারণে শুক্রবারের নামাজ বাদ দিতে পারি না। জুমার দিনে মানুষের সৃষ্টিকর্তার নিকট ক্ষমা চাওয়া প্রয়োজন। তাই আগের তুলনায় আরও বেশি সংখ্যক মানুষের শুক্রবারের নামাজে অংশ নেওয়া উচিৎ। যাতে সৃষ্টিকর্তা মরণব্যধি থেকে আমাদের রক্ষা করেন।