বরগুনার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাড়ে ২৭ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ

বরগুনার পাথরঘাটা জেলেদের ভিজিএফ সাড়ে ২৭ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির তদন্তে গেলে তার পথরোধ করে বিক্ষোভ করে ওই চেয়ারম্যানের বিচার চেয়ে স্লোগাণ দিতে থাকে এলাকাবাসী।

এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নে। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে উপস্থিত ছিলেন পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) রনজিৎ মিস্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাকচিড়া ইউনিয়নের কার্ডধারী ৫৫০ জন জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ এর ৪৪ টন চাল গ্রহণ করে কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু। তা থেকে সে সাড়ে ১৬ মেট্রিকটন চাল জেলেদের মাঝে বিতরন করেছে বাকি সাড়ে ২৭ মেট্রিকটন চাল সে আতœসাত করেছে। কাকচিড়া ইউনিয়নের কার্ডধারী ৫৫০ জন জেলেকে দুমাসের জন্য ৮০ কেজী করে বিতরণ করার কথা কিন্তু চেয়ারম্যান ট্যাগ অফিসারকে না জানিয়ে তার অনুপস্থিতিতে প্রতি জেলেকে ৩০ কেজী করে সাড়ে ১৬ মেট্রিকটন বিতরণ করেছে। বাকি সাড়ে ২৭টন চাল সে আত্মসাত করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি সদস্য জানান, কোন ধরনের মিটিং ছাড়াই একক সিদ্ধান্তে চেয়ারম্যান পরিষদ পরিচালনা করে। আমরা যখন পরিষদে আসি তখন আমাদের সামনে সাদা রেজুলেশনের খাতায় সাক্ষর করাতে বাধ্য করেন।

মহিলা ইউপি সদস্য সোনিয়া আক্তার, সালমা ও মিলন জানান, হঠাৎ করে রাতে চেয়ারম্যান ফোন দিয়ে বলে আপনি ৪০ জনের নামের তালিকা দেন সকালে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ করবো। তখন কোন মতে তাকে নামের তালিকা দেই। কিন্তু পরদিন সকাল ৭ টায় পরিষদে এসে দেখি চাল বিতরণ করা শেষ।
 
স্থানীয় আলম পহলান জানান, শুধু ভিজিএফের চাল নয়, কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদে যত ধরনের সহায়তা আসে তার সবক্ষেত্রেই দুর্নীতি করে এই চেয়ারম্যান। এর বিরুদ্ধে এর আগেও বহুবার পত্র পত্রিকায় ও টিভিতে নিউজ হয়েছে।

ভিজিএফ চাল বিতরণে দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তা রনজিৎ মিস্ত্রী জানান, চাল বিতরণের কোন খবর আমার কাছে নেই। যেখানে চাল বিতরণের একদিন আগে আমাকে পরিষদ থেকে অবহিত করার কথা। সেখানে আমাকে না জানিয়ে আমার অনুপস্থিতিতে ৪৪ মেট্রিকটন চাল বিতরণ হয়েছে, যা অনিয়ম।

অভিযুক্ত কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু জানান, আমি ১৪৬৬ বস্তা চাল পেয়েছি যা ১৪৬৬ জনকেই বিতরণ করা হয়েছে। ৫৫০ জনের জন্য বরাদ্দকৃত চাল ১৪৬৬ জনকে বিতরণের নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
 
পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু চাল বিতরণ ব্যপকভাবে অনিয়ম করেছে। তার এলাকায় বরাদ্দকৃত ৪৪ মেট্রিকটন চালের মধ্যে মাত্র সাড়ে ১৬ মেট্রিকটন চাল বিতরণের সঠিক প্রমাণ দিতে পেরেছে। বাকি সাড়ে ২৭ মেট্রিকটন চাল বিতরণের কোন সঠিক প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।