• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১৬ এপ্রিল, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

কিশোরগঞ্জে শিশুর পায়ুপথে গরম ডিম ঢুকিয়ে নির্যাতন!

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের গুনধর ইউনিয়নে ১০ বছরের এক শিশুকে দোকান ঘরের আড়ার সঙ্গে উল্টো করে বেঁধে পায়ুপথে গরম ডিম ঢুকিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিশুটিকে নির্যাতন করেছে গুনধর বাজারের মো. মানিক হোসেন (২৪) নামে এক দোকানদার। এর আগে শিশুটির মুখে একের পর এক গরম আলু ঢুকিয়ে গামছা দিয়ে নাক-মুখ বেঁধে বেদম পিটানো হয়। 

গত সোমবার (১৩ এপ্রিল) রাতে গুনধর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তবে শিশুটিকে মেরে ফেলার ভয় দেখানোয় ঘটনার জানাজানি হয় বুধবার রাতে।

নির্যাতিত শিশুটির নাম শাহনূর। সে গুনধর সাহেব বাড়ির সাখাওয়াত মিয়ার ছেলে। নির্যাতনকারী মানিক একই গ্রামের খাঁ হাটির মৃত আবদুল আওয়াল এর ছেলে।

এলাকাবাসী জানায়, বাবার সঙ্গে শিশুটির মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় ৮ বছর আগে। এর পর থেকেই শিশুটির মা তার আরো দুই সন্তানকে নিয়ে বিধবা বৃদ্ধ মায়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। শিশু শাহনূর তা নানির বাড়িতে থেকে ওই দোকানদারের ফুট-ফরমায়েশ করত। বিনিময়ে মাঝেমধ্যে খাবার পেত। সোমবার রাতে শিশুটিকে পচা ভাত খেতে দেওয়া হয়। দুর্গন্ধযুক্ত ভাত না খেয়ে ফেলে দেওয়ায় মানিক হোসেন শিশুটির ওপর অমানুষিক এ নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের একপর্যায়ে শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাকে মাথায় পানি ঢেলে কিছুটা সুস্থ করে বলে দেওয়া হয় এই ঘটনা কাউকে জানানো হলে মেরে বস্তায় ভরে তাকে নদীতে ফেলে দেওয়া হবে। এতে এ ঘটনা ভয়ে কাউকে জানায়নি শিশুটি। বুধবার বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি পরিবারের লোকজনকে জানায় সে। লোমহর্ষক এই ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় তোলপাড় চলছে। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতিত শিশুটির নানির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটি বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। শিশুটির নানি রুমু বেগম (৭০) শিশুর শরীরের নির্যাতনের অবস্থা এ প্রতিবেদককে দেখান। গরম ডিমের নির্যাতনে শিশুটির পায়ুপথের আশপাশের চামড়া ঝলসে গেছে। পায়ুপথে সৃষ্টি হয়েছে  ক্ষতের। তিনি জানান, শিশুটিকে কিশোরগঞ্জে সৈয়দ নজরুল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। করোনার কারণে তার ভর্তি নেওয়া হয়নি। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে নির্যাতনকারী মানিক হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিশুটি আমার দোকানের টাকা চুরি করেছিল। এর জন্য কয়েকটি ছেলে তাকে এই শাস্তি দিয়েছে। আমি শুধু তাকে কয়েকটি চড় দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় লিখবেন না। আমি শিশুটির পরিবারকে ওষুধপত্র কিনে দেব।

করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম জানান, এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে থানায় কেউ যায়নি। তবু ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনা সত্য হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।