• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২৬ এপ্রিল, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসেন, এটাই কী জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অপরাধ?

রুদ্র মিজান

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অপরাধ কী? তিনি দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসেন, এটাই কী তার অপরাধ? মরণঘাতি করোনায় মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মারা যাচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে কীটের অভাবে উপসর্গ দেখা দিলেও পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। দুঃসময়ে এগিয়ে এলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও তার প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কীট আবিষ্কার করলেন তাদের গবেষকরা। আমরা যারা আম জনতা তাকে স্যালুট জানাই। স্যালুট জানাই ড. বিজন কুমার শীলসহ গবেষকদের। কিন্তু আমাদের আমলারা? মনে হচ্ছে, আমলারাই এখন সবচেয়ে বেশি রাজনীতি করেন। রাজনীবিদদের চেয়েও বেশি।

এই সরকারের মন্ত্রী, আমলারা নিশ্চয়ই জানেন, জীবনে অনেক কিছুই হওয়া যায় কিন্তু একজন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সবাই হতে পারে না। তিনি হতে পারতেন দেশসেরা সার্জন। হতে পারতেন চিকিৎসা সামগ্রীর শীর্ষ ব্যবসায়ী। মন্ত্রী হওযার প্রস্তাবতো ফিরিয়ে দিয়েছেন সেই কবেই। আজীবন দেশ ও দেশের মানুষের জন্য যুদ্ধ করছেন তিনি। তাইতো রণাঙ্গনের ফিল্ড হাসপাতালকে নিয়ে আসেন স্বাধীন দেশে। যার পরিবর্তিত নাম গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এর প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ যখন মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাচ্ছেন তখন তাকে নানাভাবে অসহযোগিতা করা হচ্ছে। অথচ এই আবিষ্কার আমাদের সবার গৌরবের। দেশের-দশের। এটা নিয়ে যখন নোংরা রাজনীতি হয়, তখন বুঝতে বাকী নেই কতোটা নোংরা হয়ে গেছি আমরা।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টেস্টিং কীট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আসেননি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোনও প্রতিনিধি। আসেননি ওষুধ প্রশাসনের কোনও কর্মকর্তাও। যদিও এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণস্বাস্থ্যের টেস্টিং কীট চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের কথা ছিল। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তিনিও কোনও উত্তর দেননি। ফলে এখন তারা এসব কীট নিজ উদ্যোগে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছে পৌঁছে দেবেন।

শনিবার  ওই অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধির কাছে কীট হস্তান্তর করা হয়। বেলা ১২টার দিকে ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে কীট হস্তান্তর অনুষ্ঠান হয়।  

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্কিন সংস্থা সিডিসি’র কাছে কিট হস্তান্তর করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে কিট পরীক্ষা ও মতামতের জন্য নমুনা পাঠানো হবে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আজ কিছু কীট আমরা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) দিয়ে দেবো। বাকিদের রোববার সরকারিভাবে সবার অফিসে পৌঁছে দেবো। আর্মি প্যাথলজি ল্যাবরেটরিকে আমন্ত্রণ করা হয়, কিন্তু তারা অনুমতি পাননি বলে আসতে পারবেন না। কাল তাদের যার যত দরকার দেওয়া হবে।  ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা আশা করছি সরকার এ কীট যাচাই বাছাই করে খুব দ্রুত অনুমোদন দেবে। অনুমোদন প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন শুরু করবো। পর্যায়ক্রমে এক লাখ কীট দেওয়া সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, আমাদের উদ্ভাবন নিয়ে দুই-চার জনের মনে প্রশ্ন, এটা দিয়ে কাজ হবে কিনা। সেইদিনকার ওরস্যালাইন আজকের যুগান্তকারী অবদান। আমরা মনে করি, এরই ধারাবাহিকতায় আজ আপনাদের কাছে এই কিট প্রকাশ করতে যাচ্ছি। এটা খুব সহজে কাজ করবে, এটা পৃথিবীর বিরাট পরিবর্তন আনতে পারে। চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সহজলভ্য করবে।