• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৮ মে, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

করোনায় মৃত্যু : জায়গা নেই খিলগাঁওয়ে, এবার দাফন রায়েরবাজারে

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়াদের জন্য নির্ধারিত খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে দাফনের জায়গা নেই। এমন পরিস্থিতিতে মারা যাওয়া করোনা রোগীদের দাফন করা হচ্ছে রায়েরবাজার বসিলা কবরস্থানে। রাজধানীর খিলগাঁওয়ে শুধু আক্রান্তদেরই নয়, আক্রান্ত সন্দেহে যারা মারা যাচ্ছেন তাদেরও এখানে কবর দেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এসব লাশ পরিবহন ও দাফনের দায়িত্বে আছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আল-মারকাজুল ইসলামী। তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নেওয়া হয় কবরস্থানে।

খিলগাঁও কবরস্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখানে এ পর্যন্ত দাফন হয়েছে ১৯১ লাশ। এদের কেউ করোনা পজিটিভ ছিলেন, কাউকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে দাফন করা হয়েছে। এ কবরস্থানের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই ৯ নম্বর লাইন ধরে সোজা দক্ষিণে ঝিলপাড়ের কাছে ঝোপের আড়ালে নির্ধারণ করা হয়েছে করোনায় মৃতদের জায়গা। অন্যান্য কবর থেকে একটু আলাদাভাবে রাখা। এসব কবর খননের জন্য দায়িত্বে ছিলেন চারজন।

কবরগুলোর একপাশে আগে থেকে বাঁশ কেটে সাজিয়ে রাখা হতো। দাফন করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে প্রতিটি কবরের মাঝখানে বাঁশ কেটে বাতা করে নাম্বারিং করে দেওয়া হয়েছে। জায়গার সংকটের কারণে গত ৩০ এপ্রিল থেকে করোনা আক্রান্তে মারা যাওয়াদের দাফন শুরু হয়েছে রায়ের বাজার বসিলা কবরস্থানে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দুটি অ্যাম্বুলেন্সে করে করোনা রোগীর লাশ কবরস্থানে নিয়ে আসা হয়। অ্যাম্বুলেন্স দুটি কবরস্থানের এক প্রান্তে পার্ক করে রাখা হয়।

এক অ্যাম্বুলেন্সে বহন করা হয় দাফনের দায়িত্বে থাকা ১০ স্বেচ্ছাসেবককে। তারা প্রত্যেকে ব্যক্তিগত সুরক্ষার সরঞ্জাম (পিপিই) পরা। অপর অ্যাম্বুলেন্সে বহন করা হয় লাশ। তারা একটি স্ট্রেচারে করে সাদা কাফনে মোড়ানো লাশ নামান। এরপর কবরস্থানের ইমামসহ ১০/১২ জনের উপস্থিতিতে জানাজা নামাজ পড়ানো হয়। জানাজা শেষে স্ট্রেচারে করে তারা লাশ কবরের কাছে আনেন। এরপর পিপিই পরা চারজন মিলে লাশ কবরে নামান। কবরে দেহ নামানোর পর মাটি দেওয়া হয়। সব শেষে যারা দাফনে অংশ নেন তারা কবরস্থানের নির্দিষ্ট একটি স্থানে গিয়ে পিপিই খুলে ফেলেন। সবাই নিজেদের গামবুট আর শরীর জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করে নেন। এরপর পিপিইগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে নষ্ট করে দেন। দাফন কাজ শেষে তারা মৃতের জন্য হাত তুলে দোয়াও করেন।

গত ২৫ মার্চ খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া প্রথমবারের মতো এক ব্যক্তিকে দাফন করা হয়।

খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানের মোহরার জানান, করোনায় যাদের দাফন হতো, তাদের বিষয়ে এক দুই ঘণ্টা আগে তাদের জানানো হয়। এরপর তারা কবরের অন্যান্য জিনিসপত্র প্রস্তুত করে রাখতেন। এরপর কবরস্থানের মসজিদের ইমাম দিয়ে জানাজা পড়ান। জানাজার সময় প্রত্যেকে নিজের সুরক্ষার জন্য মুখে মাস্ক পরে থাকেন। দাফন শেষে প্রত্যেকে হাত-পা ভালোভাবে ধুয়ে ফেলেন।

তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে কিছু জায়গায় পানি জমে গেছে, ঝিলের পানি উঠে এসেছে। আবার জায়গা সংকটের কারণে খিলগাঁও কবরস্থানে এখন কোনো লাশ দাফন হচ্ছে না। সব লাশ দাফন হচ্ছে রায়ের বাজারে।