• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২ জানুয়ারী, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

‘বদনাম’ঘোচাতে নারায়ণগঞ্জে ৪৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা বদলি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জ পুলিশের ‘বদনাম’ঘোচাতে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। এ জন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে ৪৮ জনকে রদবদল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের মধ্যে গত ১ বছরে সৃষ্টি হওয়া ‘পুলিশ আতঙ্ক’ মিটিয়ে ফেলতেও কাজ করবেন নয়া পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম- এমনটাই জানিয়েছেন জেলা পুলিশের একাধিক সূত্র।

ইতিমধ্যেই জেলার একই স্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ৪৮ জনকে রদবদল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছেন, জেলায় সব প্রকার পুলিশি হয়রানি থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্ত করতে এবং জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগের প্রতি আস্থা রেখেই এই রদবল। প্রথমেই নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে এবং পর্যায়ক্রমে জেলার সব প্রকার অপরাধ মুক্ত করার কাজে হাত দিতে যাচ্ছেন নতুন পুলিশ সুপার। তবে এই রদবদলকে স্বাভাবিক রুটিন ওয়ার্ক বলে দাবি করেছেন এসপি জায়েদুল আলম।

জানা গেছে, গত ২ দিনে জেলার ৭ থানার ১ জন পরিদর্শক, ২২ জন এসআই ও এএসআই এবং ২৫ কনস্টেবলসহ মোট ৪৮ জনকে বদলি করা হয়েছে।

এর মধ্যে সোনারগাঁ থানার ১৪ জন, রূপগঞ্জে ১৪ জন, ফতুল্লায় ৭ জন, সিদ্ধিরগঞ্জে ১ জন, সদরে ২ জন এবং বন্দরে ৩ জন ও আড়াইহাজারে ৭ জনকে বদলি করা হয়েছে। তবে জেলার বাইরে ও জেলার অভ্যন্তরে কত জনকে বদলি করা হয়েছে সে বিষয়টি জানা যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানান, বিগত ১ বছরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ-প্রশাসনে অনেকটাই ছিল একনায়কতন্ত্র । কোনো কোনো পুলিশ সদস্য ছিলেন লাগামহীন ঘোড়া মতো।

সূত্র জানান, গত ১ বছরে অনেক কিছুই করা হয়েছে যা নিয়ম নীতির বাইরে ছিল। কিন্তু পুলিশের দায়িত্বশীল অনেক কর্মকর্তারা ছিলেন নির্বিকার। কার্যালয় থেকে পুলিশ সুপারের শহরে আগমন মানে ছিল পুরো নগরবাসীরকে কয়েক ঘণ্টার যানজটে রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।

এদিকে পুলিশের রদবদল ও ভাবমূর্তি প্রসঙ্গে নতুন এসপি জায়েদুল আলম যুগান্তরকে জানান, এই বদলি পুলিশের চলমান প্রক্রিয়া। কিছু ইউনিটে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি লোকবল রয়েছে আর কিছু ইউনিটে লোকবল কম। তাই এক ইউনিট থেকে অন্য ইউনিটে ঘাটতি পূরণ করা হচ্ছে।

জেলা পুলিশের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে এসপি জায়েদুল আলম বলেন, আমি পাশের জেলাতেই পুলিশ সুপার থাকার ফলে অনেক কিছুই জেনেছে, শুনেছি। তবে বিষয়টি হচ্ছে, আগে নিজের ঘর সোজা করতে হবে। যদি কোনো পুলিশ কর্মকর্তা কারো কাছ থেকে ঘুষ খায়, আমাদের তথ্য দিন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিব।

নারায়ণগঞ্জ পুলিশের সোর্স বা ক্যাশিয়ার নামে কোনো শব্দ থাকবে না উল্লেখ করে এসপি জায়েদুল বলেন, পুলিশ সোর্সকে তো কারো চেনারই কথা নয়। তাহলে সে আর সোর্স থাকলো কি করে। কেউ যদি পুলিশ সোর্স পরিচয়ে অপকর্ম করে, তাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে।

এসপি বলেন, আমি এখানে সততা নিয়ে কাজ করতে চাই। ন্যায়ের পক্ষে থেকে কাজ করবো। নীতি, নৈতিকতা, চেতনা না থাকলে কাজ করা যায় না। আমি কারো তদবির শুনি না। শুনলেও সেই কাজ করি না।