• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১১ জুলাই, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

সংস্কৃতিসেবীদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দুর্ভোগে পড়া সংস্কৃতিসেবীদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। এ পর্যন্ত সারা দেশের সাত হাজার ৫৬০ জন শিল্পী-সংস্কৃতিসেবীকে পাঁচ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। আরো প্রায় দুই হাজার ৫০০ জনকে অনুদান দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। বাড়তি বই কেনার মাধ্যমে প্রকাশনাশিল্পেও সরকার সহযোগিতা করেছে। এ ছাড়া বেসরকারি পাঠাগারগুলোকে সরকারি অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

সাক্ষাৎকারে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মানুষ নানা ধরনের দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। শিল্পী-সংস্কৃতিসেবীরাও দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। সৃজনশীল প্রকাশনা ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এ বছর বেসরকারি লাইব্রেরিগুলোর জন্য বাড়তি বই কেনার মাধ্যমে তাদেরও সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জানান, করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া অসচ্ছল সাত হাজার ৫৬০ জন শিল্পী-সংস্কৃতিসেবীকে তিন কোটি ৬৩ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সর্বমোট প্রায় ১০ হাজার শিল্পী-সংস্কৃতিসেবীকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হবে।

সরকার সংস্কৃতিসেবীদের যে সহায়তা দিয়েছে, তা এককালীন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তিন-চার মাস ধরে মানুষ কর্মহীন হয়ে দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। সে ক্ষেত্রে অসচ্ছল শিল্পী-সংস্কৃতিসেবীদের মাসিক ভাতা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের আছে কি না, জানতে চাইলে কে এম খালিদ বলেন, ‘গত অর্থবছরে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত তিন হাজার ৪২৭ জন অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবীকে সর্বমোট পাঁচ কোটি ৮১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এগুলো নিয়মিত মাসিক ভাতা হিসেবে দেওয়া হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে আরো যাঁরা সংকটে পড়েছেন তাঁদেরও নিয়মিত ভাতার আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’

প্রতিমন্ত্রী জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে সৃজনশীল প্রকাশনাব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে গত অর্থবছরে বেসরকারি পাঠাগারগুলোর জন্য যে বই কেনা হয়েছে, তা বিগত বছরের চেয়ে প্রায় এক কোটি টাকার বেশি। এটা প্রকাশনা খাতের জন্য একটি প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে।

বেসরকারি পাঠাগারগুলোর জন্য সরকার যে বই ও আর্থিক অনুদান দেয় সে ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জানান, অনিয়ম বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রথমবারের মতো বেসরকারি পাঠাগারের অনুদানের আবেদন অনলাইনে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে দিয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। ফলে প্রায় এক হাজার ৪০০ আবেদন জমা হলেও ৭০০টি আবেদন বাতিল হয়েছে। ৭০০ পাঠাগারকে অনুদান দেওয়া হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো টাকা প্রতিটি পাঠাগারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশের উপজেলা পর্যায়ে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর অংশ হিসেবে ১০০টি উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য ডিজাইন (নকশা) চূড়ান্ত হয়েছে। এখন ডিপিপি প্রণয়ের কাজ চলছে। আমাদের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পানাম নগরী সংরক্ষণের জন্য কাজ শুরু হচ্ছে। রাজধানীর ঐতিহাসিক ভবন রোজ গার্ডেনকে নগর জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলার কাজও চলছে। হাতিরঝিলে অপেরা হাউস নির্মাণের যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তাও এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’