• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২৮ জুলাই, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

প্রাথমিকের ভবন নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশ!

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

বরগুনার আমতলী উপজেলার বৈঠাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াস ব্লক নিমার্ণে রডের পরিবর্তে বাঁশের কাঞ্চি (টুনি) ব্যবহার করা হয়েছে। এতে নিমার্ণের তিন বছরের মাথায় ওয়াস ব্লক ভেঙ্গে পরেছে। করোনা ভাইরাসের কারনে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।

জানাগেছে, উপজেলা জণস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আমতলীর বৈঠাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াস ব্লক নিমার্ণের জন্য ২০১৫ সালে দরপত্র আহবান করে। ৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই কাজ পায় আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ঠিকাদার নুরজামাল। ব্লক নিমার্ণের শুরুতেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। কাজের শুরুতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এতে বাঁধা দেয় কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বাঁধা উপেক্ষা করে প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদার নুরজামাল কাজ করেন। তার ভয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে কাজ দেখভাল করতে পারেনি। তৎকালিন উপজেলা জণস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল করিমের সাথে আতাত করে ঠিকাদার নিজের ইচ্ছা মাফিক রডের পরিবর্তে বাঁশের কাঞ্চি (টুনি) দিয়ে ওয়াস ব্লক নিমার্ণ করেছে।

২০১৭ সালে ওই কাজ শেষ হয়। ওয়াস ব্লক নির্মাণের তিন বছরের মাথায় লেন্টিন ও ওয়ালে ফাটল ধরে। ওই ফাটল মেরামতের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য এ বছর বিশ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। শনিবার ওই ওয়াস ব্লকের মেরামতের কাজ শুরু করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাজ মিস্ত্রি সুলতান হাওলাদার কাজের শুরু করলেই মুহুর্তের মধ্যে ওয়াস ব্লকের লেন্টিন ও ওয়াল ভেঙ্গে পড়ে। এরপরই লেন্টিন থেকে বেড়িয়ে আসে রডের পরিবর্তে বাঁশের কাঞ্চি। তাৎক্ষনিক রাজ মিস্ত্রি সুলতান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয়দের খবর দেন। প্রধান শিক্ষক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানায়। রবিবার বিকেলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুর রহমান বিদ্যালয় ভাঙ্গা ওয়াস ব্লক পরিদর্শন করেন।

খবর পেয়ে উপজেলা জণস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ তরিকুল ইসলাম ও ঠিকাদার নুরজামাল গিয়ে ভাঙ্গা ওয়াস ব্লক থেকে বাঁশের কাঞ্চির লেন্টিন ও কাঞ্চি সরিয়ে ফেলেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন।

স্থানীয় মুরাদ খান, দেলোয়ার হোসেন ও এনামুল খান বলেন, ঠিকাদার নুরজামাল রডের পরিবর্তে বাঁশের কাঞ্চি দিয়ে ওয়াস ব্লক নিমার্ণ করেছে। ঠিকাদার নুরজামালের বিচার দাবী করছি।

বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোসাঃ সুলতানা রাজিয়া বলেন, ঠিকাদার নুরজামাল ওয়াস ব্লকের কাজের শুরুতেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করেন। ওই সময় আমি নিষেধ করলে আমার সাথে খারাপ আচরন করেন। আমি তার কাজের কোন প্রত্যায়ন দেইনি। এখন দেখছি রডের পরিবর্তে বাঁশ দিয়েছে।

এ বিষয়ে ঠিকাদার নুরজামাল রডের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে ওয়াস ব্লক নিমার্ণের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমাকে ফাসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

আমতলী উপজেলা জণস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মুজিবুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদার রডের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে ওয়াস ব্লক নিমার্ণ করেছে।

আমতলী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।