• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২০ আগস্ট, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

নামে সোনার দোকান, নেপথ্যে সুদ আর চোরাই সোনার কারবার!

এনামুল হক, মোংলা

চোখ ধাঁধানো ডেকারেশন। সবাই জানে জুয়েলার্স দোকান। অথচ দোকানের এই ঝলকানীর পিছনে চলছে চোরাই স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়, চড়া সুদে জমজমাট স্বর্ণ বন্ধকীর ব্যবসা। নীতিমালা নেই, বৈধতা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন, এতে অনেকেই হচ্ছেন প্রতারিত।

মোংলা পৌর শহরের ঠাকুরানী খালের ব্রীজ থেকে মাদ্রাসা রোডে প্রবেশ করতেই রাস্তার দুই পাশ রয়েছে অনেকগুলো জুয়েলার্স প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে কয়েকটি দোকানীর বিরুদ্ধে রয়েছে এমন নানা অভিযোগ। ওইসব দোকানগুলোতে জুয়েলার্স’র সাইন বোর্ড থাকলেও কোন কোন দোকানে নেই কোন সোনা। মুলত স্বর্ণের দোকানের সাইন বোর্ড দিয়ে কয়েকটি দোকানী সুযোগ বুঝে চোরাই স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় আর চড়া সুদে টাকা লাগানোর কাজ করে যাচ্ছেন। বিপদের মুহুর্তে কেউ কেউ ওইসব দোকোনে স্বর্ণ বন্ধক রাখলে নিদির্ষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে ফেরত দেয়া হয়না তাদের বন্ধকী সোনা। আবার কারো কারো সাথে রয়েছে চোরাই গ্রুপের কানেকশন। অর্ধেক মুল্যে চোরাই সোনা কিনে তারা দিনে রাতে বনে যান লাখ লাখ টাকার মালিক। 

মোংলার দিগরাজ এলাকার বাসিন্দা নুরুল হকের বাড়ী থেকে খোয়া যাওয়া স্বর্ণ কেনার দায়ে গেল বুধবার থানায় অভিযোগ দেয়া হয় ‘মা কল্পনা জুয়েলার্স’র মালিক সুজন চন্দের নামে। পরে পুলিশের সহায়তায় দু’পক্ষের সমঝোতায় সুজন চন্দ এক ভরি দুই আনা ওজনের ওই স্বর্ণ ফেরত দেন। এই রকম চোরাই স্বর্ণ কেনাসহ সুদে টাকা লাগানোর একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, তিনি খুব সমস্যায় পড়ে স্বর্ণ বন্ধক রেখে কিছু টাকা নেন। তিন মাসের মধ্যে ওই টাকা সুদ সমেত ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তিনি নিদির্ষ্ট সময়ে টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। পরে মা কল্পনা জুয়েলার্সের মালিক সুজন চন্দ ও তার বাবা বৈদ্যনাথ চন্দ তার বন্ধকী সোনা ফেরত দেননি। 

চোরাই স্বর্ণ কেনা আর সুদের ব্যবসার কোন অনুমোদন আছে কিনা এমন সব বিষয়ে জানতে চাইলে সুজন চন্দ বলেন, নিয়ম তো নেই তারপরও কিনেছি, অনেকেই তো কিনেন।

তবে মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: ইকবাল বাহার চৌধুরী ক্রাইম প্রতিদিনকে বলেন, এমন কিছু কিছু অভিযোগ তারা পেয়েছেন। তবে ক্যাশমেমো কিংবা বৈধ কাগজপত্র এবং নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি ছাড়া এভাবে স্বর্ণ কেনা তো সম্পূর্ণ বেআইনি। যারা এমন কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

তিনি আরো বলেন, শীঘ্র্ই সকল জুয়েলার্স দোকানীকে ডেকে তাদের ওইসব নিয়ম বর্হিভূত বেচা-কেনা আর সুদের কারবার বন্ধে কঠোর নির্দেশ দেয়া হবে।