• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১৬ জানুয়ারী, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

সারা দিন খাদ্য গুদামে ধান নিয়ে অপেক্ষার পর ফিরে গেলেন কৃষক

বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি

বরগুনার বামনায় চলতি আমন মৌসুমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ শুরু করে উপজেলা খাদ্য অধিদফতর। শুরুতে সঠিকভাবে ধান ক্রয় হলেও বর্তমানে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষকরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দোষ চাপাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভারত সফর ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছুটিতে থাকার।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বামনা খাদ্য গুদামে মো. শাহজাহান পাহলান নামে ডৌয়াতলা ইউনিয়নের কৃষি কার্ডধারী ও ধান বিক্রয় করার জন্য নির্বাচিত একজন কৃষক প্রায় ৪৮ মণ ধান নিয়ে বামনা খাদ্য গুদামে আসেন। সারা দিন ধান নিয়ে অপেক্ষা করার পর সন্ধ্যার সময় গুদাম কর্তৃপক্ষ আজ কোনো ধান কেনা হবে না বলে জানায়।

এ ব্যাপারে কৃষক শাহজাহান পাহলান আজ সন্ধ্যায় বামনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ধান বিক্রি না করার ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষক শাহজাহান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ৪৮ মণ ধান নিয়ে বামনা খাদ্য গুদামে যান। দুপুরের দিকে কয়েকজন যুবলীগকর্মী ওই ধান বিক্রিতে বাঁধা দেন। এ ঘটনা দেখে আরও কয়েকজন কৃষক ধান বিক্রি করতে না পেরে চলে যান।

এ দিকে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজেন্দ্র নাথ শীল খাদ্য গুদামে গিয়ে কোনো ধান পরীক্ষা না করে জানান, এই ধান আমন নয় সবাই ধান নিয়ে বাড়িতে চলে যান। এ ঘটনায় বুকাবুনিয়া থেকে আগত কয়েকজন কৃষক ধান বিক্রি না করে চলে যান।

কৃষক শাহজাহান পাহলান এর প্রতিবাদ করেন। ধান নিয়ে তিনি সন্ধ্যা পর্যন্ত খাদ্য গুদামে অপেক্ষা করেন। সন্ধ্যায় গুদাম কর্মকর্তা তাকে জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তা বামনাতে না থাকার কারণে আজ কোনো ধান ক্রয় করা হবে না।

সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাজেন্দ্রনাথ শীল জানান, কৃষি কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে আমি গুদামে যাই। ধান আমাদের এলাকার নয় এটি মনে হওয়ার কারণে আমি ধান ক্রয় করতে গুদাম কর্মকর্তাকে নিষেধ করি।

বামনা খাদ্য গুদামের শ্রমিক আ. সালাম বলেন, কৃষি কর্মকর্তার প্রতিনিধি রাজেন্দ্রনাথ শীল কোনো ধানের বস্তা না দেখেই গেটে বসেই বলেন এই ধান বামনার নয়। এটি ক্রয় করা হবে না।

এ ব্যাপারে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মহিমা আক্তার বলেন, কৃষকরা আজ যে ধান গুদামে বিক্রি করতে নিয়ে এসেছে তা মানসম্মত। এই ধান ক্রয়যোগ্য। তবে কর্মকর্তারা না থাকার কারণে আজ ধান ক্রয় সম্ভব নয়।

সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাজেন্দ্রনাথ শীল ধান ক্রয় করতে বাধা দেয়ার কারণে কৃষক খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ওমর ফারুকে অবহিত করলে তার নির্দেশে অবশেষে ধান মজুদ রাখতে বাধ্য হয় গুদাম কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. এনামুল ইসলাম বলেন, আমি বর্তমানে খুলনাতে অবস্থান করছি। ওই কৃষকের ধান গুদাম কর্মকর্তার দায়িত্বে মজুদ রাখতে বলেছি। রোববার এসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।