• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

ভুয়া সনদে ১০ বছর শিক্ষকতা!

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

 রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মোবাসসেরা খাতুন নামের এক নারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া নিবন্ধন সনদে ১০ বছর ধরে চাকরির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মোবাসসেরা খাতুন গোদাগাড়ী উপজেলার রিসিকুল ইউনিয়নের সৈয়দপুর শহীদ মঞ্জু উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। ২০১১ সাল থেকে তিনি কর্মরত। শুরু থেকেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে নিচ্ছেন যাবতীয় সুযোগ সুবিধা।

মোবাসসেরা খাতুনের বিরুদ্ধে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন নম্বর ও প্রত্যয়ন জালিয়াতি করে অবৈধভাবে নিয়োগের অভিযোগ এসেছে শিক্ষা দফতরে। গত ১ আগস্ট লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে সত্যতাও পেয়েছে জেলা শিক্ষা দফতর।

রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন জানান, যেহেতু মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল দফতরের ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কোনো প্রকার রেকর্ড এখানে নেই (ঢাকায় রেকর্ড আছে)। তাই প্রকৃত নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীর রোল নম্বর আমাদের অনলাইন ডাটাবেজের সার্ভার থেকে যাচাইপূর্বক জালিয়াতির সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি আরও জানান, এক লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে নিয়োগকালে ওই শিক্ষকের দাখিল করা নথিতে দেখা গেছে, ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেন। ৪৬ দশমিক ৫০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। কিন্তু যাচাইয়ে ধরা পড়ে ওই সনদধারী প্রকৃত পক্ষে মোবাসসেরা খাতুন নন। সেটি রোজি খাতুনের। সনদ জালিয়াতি করে মোবাসসেরা খাতুন নিয়োগ নিয়েছেন। তার এই কাণ্ডে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির যোগসাজস আছে। রহস্যজনক কারণে অডিটেও আপত্তি ওঠেনি।

নিয়োগকালীন প্রধান শিক্ষক খোশ মোহাম্মদ বলেন, ওই নিয়োগে তার কোনো হাত ছিল না। সব দায়দায়িত্ব নিয়োগ কমিটিরই। সম্প্রতি তিনি জালিয়াতির বিষয়টি শুনেছেন। আগে টেরই পাননি এত বড় জালিয়াতি। তবে অভিযোগ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি মোবাসসেরা খাতুন।

বর্তমান প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলাম বলেন, তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন ২০১৩ সালে। কিন্তু মোবাসসেরা খাতুন নিয়োগ পেয়েছেন তারও দুই বছর আগে। কাজেই বিষয়টি তার জানার কথা নয়। ২০১৮ সালের অডিটেও ওই শিক্ষকের জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়েনি।

আঞ্চলিক শিক্ষা দফতরের উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী জানান, একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির বিষয়টির প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে। পূর্ণাঙ্গ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। পরিপূর্ণ সত্যতা মিললে আমাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।