• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৪ অক্টোবর, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি করেছে স্থানীয় একদল যুবক। ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা। গত ২ সেপ্টেম্বর উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার ৩২ দিন পর রোববার (৪ অক্টোবর) বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এদিন সকাল থেকে ভিডিওটি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত রহিম নামে এক যুবককে আটক করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর তিনেক আগে ভুক্তভোগী গৃহবধূর বিয়ে হয়। স্বামী তাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করতে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। মাদক ব্যবসায়ী স্থানীয় দেলোয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তার নেতৃত্বে এলাকার, রহিম, বাদল, কালাম ও তাদের সহযোগীরা স্বামীসহ ওই গৃহবধূঁকে অনৈতিক কাজ করেছে বলে অভিযোগ এনে নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা।

ঘটনার ৩২ দিন পর রোববার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এক মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধিক্কার জানিয়ে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।

ভুক্তভোগী গৃহবধূর বাবা জানান, আমি নিরীহ লোক। সন্ত্রাসীদের ভয়ে কোনো কথা বলার সাহস পাই না। আমি শুধু আল্লাহর কাছে বিচার চাই।

এ জঘন্য ঘটনার সাথে জড়িতদের রাতের মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান একলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফিরোজ আলম ভুঁইয়া।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে এবং নির্যাতিতা পরিবারকে আইনি সহযোগিতা দিতে জেলা পুলিশের ৫টি ইউনিট মাঠে কাজ করছে।এ ঘটনায় এক জনকে আটক করা হয়েছে।

ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, ওই গৃহবধূ নিজের সম্ভ্রম রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু নির্যাতনকারী কয়েকজন বখাটে যুবক ও কিশোর তার পোশাক কেড়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু একটা বলতে থাকে। তিনি প্রাণপণে সম্ভ্রম রক্ষার চেষ্টা করেন এবং হামলাকারী কিশোরদের ‘বাবা’ ডাকেন এবং তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু, তারা ভিডিও ধারণ বন্ধ করেনি। বরং এক যুবক কয়েকবার তার মুখমণ্ডলে লাথি মারে ও পা দিয়ে মুখসহ শরীর মাড়িয়ে দেয়। এরপর তার শরীরে একটা লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝেই আঘাত করতে থাকে। এবং তর নগ্ন ছবি ধারণের চেষ্টা চালায়। এ সময় ঘটনটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার উল্লাস প্রকাশ করে ‘ফেসবুক’ ‘ফেসবুক’ বলে চেঁচায় আরেক কিশোর।

নির্যাতনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হচ্ছেনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা  একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন, ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। ভয়ে গণধর্ষিতার পরিবার এ নিয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করে।