• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২৩ অক্টোবর, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

আর নামবে না নিচে, আলু ৩৫ টাকা, পেঁয়াজ ৫৫ টাকা

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

দেশে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বেমুখি। সীমিত আয়ের মানুষ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে বিপর্যয়কর অবস্থায় পড়ে গেছে। মাসিক হিসেবে কাটছাঁট করে নিত্যপণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ অর্ধেক পণ্য কিনছেন। বিশেষ করে চাল, পেঁয়াজ আর আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ চরমে। সরকার নানাভাবে চেষ্টা করছে পণ্যগুলোর দাম নিয়ন্ত্রণের। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে আগামী বছর পর্যন্ত আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ কমপক্ষে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কোনো অবস্থাতেই ৫৫ টাকার নিচে নামবে না। তবে আগামী দু’তিনদিনের মধ্যে আলুর দাম খুচরা পর্যায়ে কেজি ৩৫ টাকায় আসবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

ভারত গত ১৪ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই বাংলাদেশে বাড়তে থাকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পেঁয়াজের দাম।

পেঁয়াজের দাম সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের বছরে ৮ থেকে ৯ লাখ টন পেঁয়াজের ঘাটতি থাকে। সেটা সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত আসে। ভারতের পেঁয়াজের বড় অংশ এ সময় আসে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ তাই ইজিপ্ট, তুরস্ক, ইরান, চায়না, মিয়ানমার থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। ফলে আমদানি খরচ পড়ে ৪৫ টাকা কেজি। এরপর ৫ থেকে ৬ টাকা ভ্যাট রয়েছে। ফলে পাইকারিতে কমপক্ষে ৫০ টাকা পড়ে। তাই ৬০ থেকে ৬৫ টাকার নিচে আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারজাত করা যাবে না। আমরা চেষ্টা করছি ৬০ টাকার নিচে রাখতে। যাতে মিনিমাম লাভ করা যায়। আমদানি করা পেঁয়াজ কোনো অবস্থাতে ৫৫ টাকার নিচে খরচ ফেলা যাবে না।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, আগামী তিন বছরের মধ্যে যেন পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হই। ভারত তাদের লোককে না খাইয়ে আমাদের দেবে না। তারপরও ভারতের কাছে আমাদের যেটা দাবি, রফতানি বন্ধের নোটিশ যদি আমরা এক মাস আগে পাই তাহলে আমরা অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করার সুযোগটা পাব। হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়াটা সমস্যা তৈরি করে। তাই আমি হাইকমিশনারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি যে, রফতানি বন্ধের এক মাস আগে যেন আমাদের নোটিশ দেওয়া হয়। ৩০ দিন আগে জানালে বিকল্প বাজার থেকে আনতে সুবিধা হয়।

আলুর বাজারদর বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আলুর দাম কমানোর চেষ্টা চলছে। এটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। এটা কৃষি মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা ইচ্ছে করেই এসেছি যে টিসিবির মাধ্যমে ২৫ টাকা দরে বাজারে আলু ছেড়ে ভোক্তাদের সহযোগিতার জন্য। কৃষি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলুর দামের বিষয়ে। দাম কোল্ডস্টোরেজে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ছিল। সেটা এখন ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেটা ২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আমরা খুব আশাবাদী আগামী দু’তিনদিনের মধ্যে খুচরা পর্যায়ে আলুর দাম ৩৫ টাকায় চলে আসবে।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ঝগড়াঝাটি করে এগোনো যাবে না, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে এগোতে হবে। তিনি অনেক আশা নিয়ে এসেছেন। আমরা চাই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরো ভালো হোক। এখন পৃথিবীটা ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। তিনি (হাইকমিশনার) বলেছেন এক্সপোর্ট আরো পাঁচগুণ হলেও কোনো সমস্যা হবে না। আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যে পার্টনার হতে চাই। প্রাথমিকভাবে অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ছোট ছোট কিছু সমস্যা রয়েছে। খুব শিগগিরই এসব সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে।

এর আগে সকালে ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, এমআরপি তেলের উপর আছে আমরা যেটা বলেছি ওই দামটা যেন ঠিক থাকে তা যেন বাড়তি না হয়। লুজ তেলটার যে দাম সেটার দামটা ২ টাকা কমানোর কথা তারা ঘোষণা করে গেছেন। বিশ্ব বাজারে তেলের দামটা বেড়েছে। আমাদের আমদানি করতে হয় তাই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে গেলে আমরাও সেই পথের পথিক হই, সেখানে সমস্যাটা। তারপরও আমরা চাপ দিয়েছি তারা ২ টাকা করে প্রতি লিটার কমানোর আশ্বাস দিয়ে গেছে।