• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২৮ নভেম্বর, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

মোসলেম ও সোহান হত্যার ঘটনায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিং

হেলাল উদ্দীন

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের কৃষক মোসলেম আলী বিশ্বাসকে হত্যা ও সাতক্ষীরা সদরের হাওয়ালখালিতে ১৫ দিন বয়সী শিশু সোহানকে হত্যা করে লাশ সেফটি ট্যাংকিতে ফেলে লাশ গুম করার চেষ্টার ঘটনায় প্রেস ব্রিফিং করা হয়েছে। 

শনিবার দুপুরে আড়াইটায় পুলিশ লাইনে এ ব্রিফিং করেন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান ও সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহ্ উদ্দিন।পুলিশ সুপার বলেন, কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের কৃষক মোসলেম আলী বিশ্বাসের ছোট জামাতা দেয়াড়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। তার বিএড সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় সম্প্রতি তদন্ত হয়। এতে সে মাদ্রাসা সুপারের উপর ক্ষুব্ধ ছিল। এ জন্য সে সুপারকে হত্যার জন্য এক লাখ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করে। একইসাথে তার ভাতিজা হাবিবুরকে ওই মাদ্রাসার পিওন পদে চাকুরি দেওয়ার জন্য বলে দোষ সুপারের ঘাড়ে চাপাতে শ্বশুরকে ২৫ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে নতুন বাড়িতে সে ও ভাতিজা হাবিবুর বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার পর জবাই করে ফেলে রাখ। মাদ্রাসা সুপারকে ফাঁসাতে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। 

পুলিশ আবুল কালাম ও হাবিবুরকে গ্রেপ্তারের পর তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি হত্যাকান্ড ব্যবহৃত ছুরি, হ্যান্ড গ্লোবসসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে। কালামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে হাবিবুরকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাদি হয়ে ২৬ নভেম্বর থানায় কারো নাম উল্লেখ না করে একটি মামলা দায়ের করেছে।পুলিশ সুপার আরো জানান, সদর উপজেলার হাওয়ালখালিতে বৃহষ্পতিবার দুপুরে ১৫ দিনের শিশু সোহান মায়ের কোল থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর শনিবার ভোর শিশুটির নানার বাড়ির সেফটি ট্যাংকি থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। 

শিশুটির মা ও বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান, যে শিশুটি খুবই অসুস্থ ছিল। সে জন্ডিস, রিকট, নিউমোনিয়া ও হার্টের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিল। এ সমস্ত কারণ ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনের যোগসাজশে শিশু হত্যা এবং মরদেহ গুমের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

তিনি আরো জানান, শিশুটির বাবা সোহাগ হোসেন শিশুটিকে মেরে তাদের বাড়ির সামনের সেফটি ট্যাংকির ভিতরে মরদেহটি ফেলে দেয়। আর এ কাজ সহযোগিতা করে তার মা ফাতেমা খাতুন। পুলিশ বিষয়টি জানার পর শনিবার ভোরে মরদেহটি উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার করা হয় শিশুটির বাবা ও মাকে। তবে শিশুটির মা অসুস্থ থাকায় তাকে পুলিশ পাহারায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক হানিফ বাদি হয়ে শনিবার ফাতেমা ও সোহাগের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ফাতেমা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজী হয়েছে।