• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

পুলিশের হাতে মানবকণ্ঠের সাংবাদিক লাঞ্ছনার অভিযোগ

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পুলিশের হাতে সাভারে কর্মরত এক সাংবাদিক লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ বলছে, একে অপরের মধ্যে নিছক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার  রাত ১২টার দিকে উপজেলার দড়গ্রাম ইউনিয়নের সাফুল্লি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নির্যাতিত ওই সাংবাদিক গভীর রাতে বাসায় ফেরেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম সাব্বির দৈনিক মানবকণ্ঠের সাভার সংবাদদাতা ও অনলাইন রাইজিং বিডির প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত। তিনি ঢাকার ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে।
 
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিয়া উজ্জ্বল। এছাড়া অভিযুক্ত আরও দুই পুলিশ সদস্যের পরিচয় জানা যায়নি।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাব্বির জানান, গতকাল সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় বন্ধু মাহবুবের বাসায় বেড়াতে যান তিনি। কয়েকজন মিলে রাত ১২টার দিকে বন্ধুর বাড়ির পাশেই দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। কিছু দূরে বন্ধু মাহবুবের এক স্বজনকে পুলিশ জোর পূর্বক থানায় নিয়ে যাচ্ছে দেখে বিষয়টি জানতে এগিয়ে যান সাব্বির। এ সময় এএসআই মিয়া উজ্জ্বল তার ওপর ক্ষেপে যান।

সাব্বিরের অভিযোগ, ‘পুলিশের ওই কর্মকর্তা আমার কাছে জানতে চান- ওই দৌড়াস কেন? পরে আমি উনাকে বলি- আপনি তুই তুকারি করে বলছেন কেন? এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন- পোশাক পরা আমাকে তুই বললি কেন? আসামি ছিনিয়ে নিতে চাস তুই? বলেই আমাকে ধাক্কা দিতে থাকেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বারবার সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও আমার শরীরে হাত তুলেন। আমাকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় দ্রুত এক কনস্টেবল ছুটে এসে আমার পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে আটক করে সিএনজিতে তুলে থানায় ওসির কাছে নিয়ে যান। পরে অবশ্য ওসি পুরো বিষয় শুনে নিজে দুঃখ প্রকাশ করেন। ওসি আশরাফ সাহেব পরে নিজের গাড়িতে আমাকে বাসায় পৌঁছে দেন।’
 
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের কর্মচারী মাহবুব আলমের অভিযোগ, ‘আরিফ গতকাল আমার এলাকায় ওরশ দেখতে এসেছিল। তখন আমার এক আত্মীয়কে পুলিশ টেনে-হ্যাঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা ওই দিকেই ছিলাম। কৌতূহলবশত আমরা এগিয়ে যাই যে, একটা মানুষকে ওইভাবে কেন নিয়ে যাচ্ছে। আমরা ওনাকে জিজ্ঞেস করছি, ওনাকে ওইভাবে কেন নিয়ে যাচ্ছেন। এরপরই ওরা আমাদের সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করছে। চারজন পুলিশ ছিল। পরে ওই এএসআই বলছে, অয় (আরিফ) আসামি ছিনতাই করতে আসছে, অরে নিয়া চল।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাটুরিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিয়া উজ্জ্বল বলেন, ‘রাত ১২টা বাজে ওয়ারেন্টের আসামি ধরতে গেছিলাম। অন্ধকারতো কিছুইতো দেখা যায় না। ওই সময় তো ও (সাংবাদিক) দৌড়ায় আসতেছে। আমি বলছি, দৌড়ায় আসতেছেন কেন আপনি? মানে আমি যে পোশাক পরা নাকি দেখাও যায় না। আমাকে বলছে তুই কেডা? আমি বললাম, আমিতো পুলিশ আসামি ধরতে আসছি। ওনি বলেন- আসামিটা ছাইরা দে তুই। এরকম একটু কথাবার্তা হইছে পরে বলছি চলেন থানায় যাই। পরে ওসির গাড়িতে করে রাতে বাসায় দিয়া আসছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাটুরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, রাত তখন ১২টা বাজে। সে (সাংবাদিক) ভাবছে আসামিরে জোর করে ধরে নিয়া আসতেছে, তখন একটু দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হইছে। আমি যতটুকু পারছি দুজনের সাথে কথা বলে বিষয়টা সলভ করার চেষ্টা করেছি।

মারধর ও লাঞ্ছিত করার বিষয়ে বলেন, ‘আসলেতো ওই রকম না। দুপক্ষ দুইভাবে বলতেছে আর কি।’