• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৩ এপ্রিল, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

লকডাউনের খবরে ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

করোনা পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় আগামী সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশে লকডাউন দিচ্ছে সরকার। শনিবার সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, মহামারি সামাল দিতে আবারও ‘লকডাউনের’ ঘোষণা আসছে। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার থেকে সারা দেশে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

ওবায়দুল কাদেরের এ ঘোষণার পরই রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন মানুষ। বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনালে টিকিট কিনতে ভিড় জমিয়েছেন তারা। অনেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে ইতোমধ্যে রওনাও দিয়েছেন। তবে গণপরিবহণে অর্ধেক যাত্রী বহনের নির্দেশনা থাকায় অনেক যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন।

রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, গাবতলী বাস টার্মিনালসহ ঢাকার বিভিন্ন বাস কাউন্টারে দেখা গেছে যাত্রীদের ব্যাপক ভিড়। যাত্রীদের চাপে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানকার বাস কাউন্টারের দায়িত্বরতরা। 

সায়েদাবাদের হানিফ ও শ্যামলী কাউন্টারের দায়িত্বরতা বলেন, লকডাউনের খবর শুনেই শনিবার দুপুর থেকে যাত্রীরা ফোন দিয়ে টিকিট বুকিং নেওয়া শুরু করেছেন। যাত্রীদের ফোনের চাপে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই রোববার রাত পর্যন্ত সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। কাউন্টারের ব্যবস্থাপকদের ভাষ্য, তারা ঈদের ছুটিতেও এত চাপে পড়েন না, লকডাউনের খবরে যাত্রীদের যতটা চাপ সামলাতে হচ্ছে তাদের।

একই অবস্থা মহাখালী বাস টার্মিনালেও। সেখানকার কয়েকটি কাউন্টারের টিকিট বিক্রির দায়িত্বরতরা বলেন, হঠাৎ করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ায় বাস অর্ধেক আসনে যাত্রী বহনের নির্দেশনা রয়েছে। এ কারণে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে অনেক। এখন লকডাউন ঘোষণায় যাত্রীদের চাপ আরও বেড়েছে। আগামীকালও (রোববার) যাত্রীর চাপ অনেক বেশি বাড়তে পারে।

লঞ্চঘাটেও একই অবস্থা। বিআইডব্লিউটিএ'র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, লকডাউনের কারণে সোমবার সকাল ৬টা থেকে সারা দেশের সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান বন্ধ থাকবে। তবে মালবাহী জাহাজ চলাচল করবে। 

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লকডাউনের খবর শুনেই টার্মিনালে যাত্রীরা ভিড় জমিয়েছেন। বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যাওয়া এসব যাত্রীদের চাপ সামলানো দায় হয়ে পড়েছে। 

লকডাউনের খবরে রেল স্টেশন, বিমানবন্দরেও একই অবস্থা। হঠাৎ করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি কারণে গত চার দিন ধ‌রে ১০৪‌টি আন্তঃনগর ট্রেনসহ সক যাত্রীবা‌হী ট্রেনে ৫০ শতাংশ যাত্রী চলাচল কর‌ছে। কাউন্টার ও অনলাই‌নে ৫০ শতাংশ টি‌কিট বি‌ক্রি হ‌চ্ছে। শনিবার লকডাউনের ঘোষণা আসার পর লকডাউন চলাকালে মালবা‌হী ছাড়া যাত্রীবাহী সব ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। শ‌নিবার বিকা‌লে রেলমন্ত্রী যুগান্তরকে বলেন, লকডাউ‌নে পূ‌র্বের মতো সব যাত্রীবা‌হী ট্রেন চলাচল বন্ধ থা‌কবে। কো‌নো যাত্রীবা‌হী ট্রেন চলাচল কর‌বে না। ত‌বে মালবা‌হী ট্রেন চলাচল কর‌বে। বি‌শেষ প‌রি‌স্থি‌তিতে শুধুমাত্র ত্রাণ কিংবা যে কো‌নো দুর্যোগ মোকাবিলায় বি‌শেষ ট্রেন চালা‌নো হ‌বে। এ জন্য‌ বি‌শেষ ট্রেন প্রস্তুত রাখা হ‌বে।

এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল অব্যাহত থাকবে।সরকার থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এখনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। সরকারের লকডাউন বিধির ওপর ভিত্তি করে বিমান কর্তৃপক্ষ নোটিশ জারি করবে।

সিভিল এভিয়েশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহেল কামরুজ্জামান শনিবার বলেন, লকডাউনের গেজেট প্রকাশের পর সোমবার সিভিল এভিয়েশন থেকে ফ্লাইট বন্ধের গেজেট প্রকাশ হতে পারে। তিনি বলেন, শনিবার রাত পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধের কোনো গেজেট প্রকাশ হয়নি। সেটি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তমাত্র।