• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৫ মে, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

গণপরিবহন ছাড়াই যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে শপিংমল ও বিপণি-বিতান। এতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে মানুষের উপস্থিতি বেড়েই চলছে। পাশাপাশি বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট হচ্ছে। বিশেষ করে ইফতারের আগ মুহূর্তে যখন অফিস-আদালত ছুটি হয় তখন থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বুধবার (৫ মে) রাজধানীর মহাখালী, বনানী, মিরপুর, গাবতলী, কল্যাণপুর, শ্যামলী, আসাদগেট, ধানমন্ডি, কাওরান বাজার, পান্থপথ, শুক্রাবাদ, সাইন্সল্যাব, কলাবাগান, নিউমার্কেটসহ বেশ কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্য। সঙ্গে মোটরসাইকেলের পরিমাণও ছিল চোখে পড়ার মতো।

এসব সড়কে থাকা চেকপোস্টগুলোতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের চেকের বিষয়ে বেশ নমনীয় অবস্থানে দেখা গেছে। তবে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে দুজন নিয়ে চলাচলকারী চালকদের থামিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখা হয়।

পথচারী ও যানবাহন চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ মানুষের গন্তব্য এখন শপিংমল ও পথের পাশের দোকান। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই কেনাকাটার জন্য রাজধানীবাসী উন্মুখ হয়ে পড়ছেন। এ কারণেই মূলত সড়কে চলাচল বেড়েছে। এতে সড়কে বিভিন্ন যান বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশার আধিক্য রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এসব অঞ্চলের সড়ক দুপুর থেকেই প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানে পরিপূর্ণ। কোনো কোনো সড়কে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকে থাকছে যানবাহন। এছাড়া এসব এলাকায় ফুটপাতে বসেছে পোশাকসহ নানা পণ্যের ভাসমান দোকান। এসব দোকানে ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই কেনাকাটা করছেন।

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ সামনে রেখে মানুষ ফুটপাতের ভাসমান দোকান ও শপিংমলগুলোতে কেনাকাটায় ব্যস্ত। এ কারণেই সড়কে বেশি মানুষের উপস্থিতি। সড়কে উপস্থিতি বাড়লে যানবাহনও বাড়বে। যানবাহনের সংখ্যা বাড়লে জট সৃষ্টি স্বাভাবিক।

সড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত গাড়ির আনাগোনা অনেক বেশি ছিল। এতে কিছু কিছু সড়কে খণ্ড খণ্ড জ্যামের সৃষ্টি হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির পরিমাণ বাড়তে থাকে।

রাজধানীর পান্থপথে যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক শাহীন আলম বলেন, সকাল থেকে ১৫ জন যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছি। এদের মধ্যে ১২ জনই শপিংমলে গিয়েছিলেন। দুপুরের আগে যানজট না থাকলেও দুপুরের পর রাস্তায় অনেক গাড়ি বের হওয়ার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। ধানমন্ডি-নিউমার্কেট এলাকার রাস্তায় দুপুরের দিকে আধাঘণ্টার বেশি সময় ধরে যাত্রী নিয়ে যানজটে বসে থাকতে হয়। বিকেলের পর তীব্র যানজট শুরু হয়।

এদিকে ফার্মগেট থেকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত কয়েকটি পুলিশ চেকপোস্টে কর্মরত মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শপিংমলকেন্দ্রিক মানুষজনের কারণে রাস্তায় যাত্রী এবং গাড়ির চাপ অনেক বেশি। ফলে এত মানুষের মুভমেন্ট পাস চেক করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে তাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য গাড়ির চালক এবং যাত্রীদের বোঝানো হচ্ছে। তবে মানুষ আগের চেয়ে বেশি মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সড়কে চলাচল করছে।

মতিঝিলে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করা রফিকুল ইসলাম বলেন, ইফতারের আগ মুহূর্তে দু-তিনদিন ধরে যানজটে রাস্তায় চলাচলে খুব সমস্যা হচ্ছে। বাস চলছে না, এতেই যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে বাস চলাচল করলে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে ঢাকা মহানগরসহ সব জেলা শহরে বৃহস্পতিবার (৬ মে) সকাল থেকে গণপরিবহন চলবে বলে জানিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। বুধবার সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৬ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকা মহানগরসহ সব জেলা শহরের মধ্যে গণপরিবহন চলাচল করবে। মালিক সমিতি বা পরিবহন কোম্পানির নেতাদের কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রী গাড়িতে উঠতে পারবেন না এবং গাড়ির স্টাফদের জন্য মালিককে মাস্ক সরবরাহ করতে হবে। গাড়িতে সিটের অর্ধেক যাত্রী বহন করতে হবে। অর্থাৎ দুই সিটে এক যাত্রী বসবে। এছাড়া লকডাউনে মালিক-শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এক্ষেত্রে রুট মালিক সমিতি বা পরিবহন কোম্পানির জিপির নামে গাড়ি থেকে কোনো অর্থ আদায় করতে পারবে না।