• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১৬ জুন, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

বহিষ্কারের ভয় দেখিয়ে বেতন আদায় সরকারি কলেজের

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

করোনাকালে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো ঢাকার ধামরাইয়েও বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রায় দেড় বছর ধরে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাখা হয়েছে তালাবদ্ধ করে। একদিনের জন্যও লেখাপড়া হয়নি এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ফলে শিক্ষার্থীরা বাসভবনে বসে অলস সময় পার করছে।

এরই মধ্যে সোমবার থেকে হঠাৎ করে বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ দেয় ধামরাইয়ের একমাত্র সরকারি হার্ডিঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পুরো দেড় বছরের বকেয়া বেতন প্রাদনের জন্য চাপ দিচ্ছে তারা। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের হুমকি প্রদান করা হয়।  
 
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুললে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করার এ হুমকি দেয়া হয়। এমন অভিযোগ হার্ডিঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠান প্রধান মো. হযরত আলীর বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনায় ধামরাইজুড়ে যেমন স্বল্প আয়ের অভিভাবকরা বিপাকে পড়েছেন, তেমনি এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড়েরও সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে অভিভাবকদের মাঝে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, করোনার জন্য প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে আমাদের ছেলেমেয়েরা স্মার্ট মোবাইল ফোন, ফেসবুক ও ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের শত শাসন বারণ করেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। ঘরের ভেতর বইয়ের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কই নেই। অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নোটিশ দেয়া হয়েছে বকেয়া সব বেতন পরিশোধ করার জন্য। আমরা প্রতিবাদ জানাতে গেলে উল্টো প্রধান শিক্ষক আমাদের ছেলেমেয়েদের বহিষ্কার করে দেয়ার হুমকি প্রদান করে। আমাদের মাঝে অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ভিক্ষুক, দিনমজুর ও ক্ষেতমজুরসহ অনেক হতদরিদ্র রয়েছে। করোনাকালে ওইসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কোনো কাজ নেই। তারা গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরায় অবস্থা, আবার তার ওপর এ বকেয়া বেতন আদায় যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

৬ষ্ঠ থেকে ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ১৭০ টাকা ও ৮ম থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৯০ টাকা হারে পুরো দেড় বছরের বকেয়া বেতন আদায় করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। 

এ বিষয়ে সরকারি হার্ডিঞ্জ স্কুল ও কলেজের প্রতিষ্ঠানপ্রধান (মেয়াদোত্তীর্ণ) মো. হযরত আলী  শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের কথা অস্বীকার করলেও তিনি বেতন আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, করোনার জন্য সরকার সবধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। এতে আমাদের কিছুই করার নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত থাকতে হলে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই বেতন দিতে হবে। তবে তিনি করোনাকালে বেতন আদায়ে সরকার প্রদত্ত কোনো পরিপত্র দেখাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে সরকারি হার্ডিঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি (পদাধিকার বলে) ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামিউল হক বলেন, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। করোনাকালে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন আদায়ে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানকে সরকার প্রদত্ত পরিপত্র মেনে চলতে হবে।