• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৬ জুলাই, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

মেয়ের মুখে অক্সিজেন লাগিয়ে ১৩ দিন ধরে ঘুরছেন বাবা

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

অটোরিকশার মধ‌্যে বাবা-মেয়ে বসা। বাবার হাতে একটি অক্সিজেন  সিলিন্ডার। মেয়ের মুখে অক্সিজেনের নল লাগানো। আরেকটি সিলিন্ডার পায়ের নিচে রাখা। মুখে লাগানো অক্সিজেন কখন না জানি শেষ হয়ে যায়- এ অনিশ্চয়তার মধ্যে এবং মৃত্যু ভয় নিয়ে গত ১৩ দিন ধরে মেয়েকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল ঘুরছেন খুলনার শেখ ওয়াহিদ আলী।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) দুপুরে শেখ ওয়াহিদ আলী বলেন, ‘মেয়ের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাইনি। আর রিপোর্ট ছাড়া তাকে কোনো হাসপাতালে ভর্তি নিতে কিংবা কোনো চিকিৎসক চেম্বারেও চিকিৎসা দিতে রাজি হয়নি। সবাই বলছেন, আগে রিপোর্ট, পরে চিকিৎসা।’
 
কলেজ পড়ুয়া মেয়ে শেখ রাইসা তাহসিন অর্পিতার চিকিৎসা করাতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান, অর্পিতার জ্বর, গায়ে ব্যথা এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।  

খুলনার করোনা হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে অসহায় বাবা ওয়াহিদ আলী বলছিলেন, ‘এখানে করোনা পরীক্ষার জন্য মেয়ের নমুনা দিয়েছিলাম ২৯ জুন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা। কিন্তু ৮ দিন হয়ে গেছে, রিপোর্ট পাইনি। যোগাযোগ করছি রোজ। কবে রিপোর্ট দিতে পারবে তারা তার কোনো নিশ্চয়তা দিচ্ছে না।’ পরে আবারও ৫ জুলাই করোনার পরীক্ষার জন‌্য নমুনা দেওয়া হয়েছে।

অর্পিতার বাবা জানান, আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেছি, চিকিৎসকের চেম্বারে যাচ্ছি। কিন্তু তারা করোনার রিপোর্ট ছাড়া চিকিৎসা দিতে রাজি হচ্ছেন না। কিন্তু মেয়ের খুব শ্বাসকষ্ট হওয়ায় অটোরিকশাতে একটি অতিরিক্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট দিলো না। মেয়েকে নিয়ে এখন কী করবো?

অর্পিতার বড় ভাই জসিম বলেন, আমার বোনকে চিকিৎসার জন্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। করোনার রিপোর্ট ছাড়া সেখানকার ডাক্তাররা রোগী দেখতে চাচ্ছেন না। আবু নাসের হাসপাতালে নতুন একটা ইউনিট চালু হয়েছে। সেখানে গেলাম, তারাও বলছে, রিপোর্ট ছাড়া ভর্তি নেবে না।

তিনি বলেন, চিকিৎসা না পেয়ে আমার বোন আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, অক্সিজেন লেভেল কমে যাচ্ছে, বুকে ব্যথা হচ্ছে, বমি হচ্ছে। এখানে ডাক্তাররা বলছেন, বেড নেই, ভর্তি রাখা যাবে না। করোনা হাসপাতালে আবারও নমুনা দিলাম। তবে কবে রিপোর্ট পাব তা বলতে পারছি না। খুব অসহায় লাগছে নিজেদের। বোন আমার কষ্ট পাচ্ছে, আর কিছুই করতে পারছি না।