• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৯ জুলাই, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

ঢামেক মর্গে লাশের সারি, স্বজনদের আহাজারি!

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া ৫২টি মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আনা হয়েছে। এদিকে স্বজন হারানোর বেদনায় ভারী হয়ে উঠেছে কারখানা এলাকা। কারখানা থেকে লাশ বের করার সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যায় কান্নার রোল। স্বজনদের আহাজারিতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের ঢামেক হাসপাতাল মর্গে নিয়ে আসে। এর আগে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স ও দুটি ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে একে একে মরদেহগুলো ঢামেক মর্গে আনা হয়। প্যাকেটে ভরা মৃতদেহগুলো এক এক করে বের করে মর্গে হিমঘরে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঢামেক হাসপাতাল মর্গের মর্গ সরকারী সেকান্দার জানান, অ্যাম্বুলেন্স থেকে ৪৯টি মরদেহ নামানো হয়েছে। মরদেহ আনার ব্যাপারে ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতদের বেশিরভাগই শিশু। আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এর আগে নারায়ণগঞ্জে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন ৪৯ মৃতদেহ উদ্ধার তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা ৪৯ জনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠিয়েছি।

বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় এ আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। রাত ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস জানায়, সাত তলা ভবনের ছয় তলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ভবনে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ছয়তলা ভবনের চতুর্থতলা পর্যন্ত প্রবেশ করা গেছে। সেখান থেকেই এতোগুলো মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছয়তলা কারখানা ভবনের ওপরের দুই ফ্লোরে এখনো আগুন জ্বলছে। সেখানে আগুন নেভানোর কাজ চলছে এখনো। ধ্বংসস্তুপে তল্লাশিও এখনো শেষ হয়নি। আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনটিতে ১০০০-১২০০ শ্রমিক কাজ করতেন।

স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এত শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আগুন লাগার পরও কর্তৃপক্ষ গেটের তালা না খোলায় বের হতে পারেননি শ্রমিকরা। ছাদে এবং বিভিন্ন ফ্লোরে গিয়ে বাঁচার জন্য আশ্রয় নেন তারা। কিন্তু বের হতে না তাদের মৃত্যু হয়।