• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১৩ জুলাই, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

লকডাউনে মানুষের পাশে নেই জনপ্রতিনিধিরা!

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সারাদেশে দ্বিতীয় দফার ‘কঠোর লকডাউন’ জারি করা হয়েছে। শুধু জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব অফিস আদালত ও সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। টানা দুই সপ্তাহের এ লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন চাঁদপুরের দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকের ঘরে নেই ঠিকমতো তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা। বাধ্য হয়েই বিধিনিষেধ অমান্য করে কাজের সন্ধানে বেড় হচ্ছেন তারা।

এছাড়া চরম অসহায়ত্বের মধ্যে রয়েছেন নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। তাদের লোকলজ্জায় সরকারি সহায়তা নিতেও পারছেন না। আর দেয়ালে ঠেকেছে মাঝারি মানের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পিঠ। তবুও সরকারি নির্দেশনা মেনে তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখছেন।

বিগত বছর লকডাউনে সরকারি সহযোগিতাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিকরা অসহায় মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীদেরই মাঠে বেশি সক্রিয় দেখা গেছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী তৎপরতা ছিল। কিন্তু এবার কারো তৎপরতা খুব একটা দেখা।

এমনকি মানুষকে সচেতন করতেও নেই কোনো বেসরকারি উদ্যোগ। রাজনীতিক দলগুলো তাদের কর্মীদের পাশে দাঁড়াতেও দেখা যায়নি। টানা দুই সপ্তাহের লকডাউন বাস্তবায়নে শুধু জেলা প্রশাসন ও পুলিশই তৎপর ছিলো। ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনকে বেগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে চলমান কঠোর বিধিনিষেধে এখন পর্যন্ত বেসরকারি কোনো উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা- এনজিও, চাঁদপুরে ত্রাণ বা অন্য কোনো সহযোগিতা নিয়ে কর্মহীন দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। উল্টো তাদের দেওয়া ঋণের কিস্তির টাকা আদায়ে ব্যস্ত। এমন অভিযোগ করেছেন ঋণগ্রস্ত মানুষেরা।

তবে প্রতিবারের ন্যায় এবারও ব্যতিক্রম ছিলো চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক। সাবেক জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানের মতো বর্তমান জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশও খাদ্য সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে রয়েছেন। লকডাউন চলাকালিন প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার শত শত মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে খাদ্য সহায় প্রদান করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, হটলাইনে ফোন কলের মাধ্যমেও ঘরে বসে সহায়তা পেয়েছেন দরিদ্র মানুষেরা। তৃতীয় লিঙ্গ, হরিজন, শ্রমিক, জেলে, চালকসহ নানা সম্প্রদায় ও পেশার মানুষকে আলাদা আলাদাভাবে ডেকে এনে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৭কেজি করে দিয়েছেন।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা উপহার এবং মুঠোফোনে বিশেষ নম্বরে যারা কল করেছেন, এমন মানুষদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা। এই পর্যন্ত চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার পরিবারকে এমন খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসক, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্বচ্ছল বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থাকে অনুরোধ জানান।

এদিকে, চাঁদপুরে দেশের প্রথম সারির বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা-এনজিও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে তাদের আর্থিক সহায়তা অর্থাৎ ঋণ দানে বিশেষ ভূমিকা পালন করলেও করোনার এই দুঃসময়ে কর্মহীন হয়ে পড়া অতি দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে কোনো ধরনের সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়ায়নি।

এই নিয়ে ঋণ নেয়া অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষুদ্র ব্যবসায় জন্যে তারা বিভিন্ন এনজিও থেবে ঋণ নিয়েছে। লকডাউনে কাজ না থাকলেও এনজিওগুলো প্রতিনিয়ত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে চাপ দিচ্ছে। তাদের দাবী লকডাউন চলাকালে যাতে এনজিওগুলো কিস্তি আদায় বন্ধ রাখে, সে জন্যে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন।