ধর্ষণ মামলায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় তরুণীকে ধর্ষণ মামলার ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের এসসি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার ইউপি সদস্যের নাম মনোরঞ্জন রায় (৫৫)। তিনি গড়েয়া ইউনিয়নের গড়েয়া গোপালপুর গ্রামের প্রয়াত দিগেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে এবং গড়েয়া ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

গতকাল শনিবার ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন রায়, তার স্ত্রী সোমারী রায় (৪৮), ছেলে চন্দন রায় (২৬), মেয়ে মালা রাণী (৩০), জামাই সৌখিন রায় (৩৫) ও মেয়ে কৃত্তিকা রাণীকে (২২) আসামি করা হয়।

ওসি তানভিরুল ইসলাম বলেন, ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন রায়ের ছেলে চন্দন রায়ের সঙ্গে মামলার বাদীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মামলার বাদী ও চন্দন রায় সম্পর্কে খালাতো ভাইবোন। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন সময় চন্দন রায় ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। এতে ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

মামলায় বলা হয়, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ওই তরুণী ইউপি সদস্যের ছেলে চন্দন রায়কে বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে তিনি বাচ্চা নষ্ট করার জন্য মোবাইলে মেসেজ দেন। গত ৮ জুন বিকেলে কৌশলে চন্দন রায় ওই তরুণীকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন রায় ও তার পরিবারের লোকজন তরুণীকে মারপিট করে এবং বাচ্চা নষ্ট করার জন্য জোরপূর্বক ওষুধ খাওয়ায়। এ ছাড়া ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন রায় ওই তরুণীর গলায় ধারাল অস্ত্র ঠেকিয়ে জোরপূর্বক একটি ৩০০ টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন।

ওসি তানভিরুল ইসলাম আরও বলেন, খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে অসুস্থ অবস্থায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রিপোর্টে দেখা যায়, ভুক্তভোগী তরুণীর বাচ্চা নষ্ট হয়নি। তিনি ১১ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

ওসি বলেন, এ মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে, আজ রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তার ইউপি সদস্য মনোরঞ্জন রায়কে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।