• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

অবশেষে ‘আন্দোলনে’ নামছেন রিটেনে উত্তীর্ণ প্রাথমিক শিক্ষকরা

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০১৮-এর চূড়ান্ত ফলাফলে যারা উত্তীর্ণ হতে পারেননি (লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ) তারা প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ চান। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন অনুত্তীর্ণ আবেদনকারীরা।

এ লক্ষ্য আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি (রোববার) ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (২০১৮) প্যানেল বাস্তবায়ন কেন্দ্রীয় কমিটি’ চাঁদপুর জেলার পক্ষ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে।

মানববন্ধনের ব্যানারে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মুজিবর্ষের কথা বিবেচনা করে হলেও যেনো সবাইকে প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) গত বছরের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ ৫ জন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রথম ধাপে ২৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মে, তৃতীয় ধাপে ২১ জুন এবং চতুর্থ ধাপে ২৮ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, ৫৫ হাজার ২৯৫ জন প্রার্থী পাস করেছেন।

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এসব প্রার্থীদের গত বছরের ৬ অক্টোবর থেকে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। মাসব্যাপী সারাদেশের সব জেলায় মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষ হলে নিয়োগের জন্য ১৮ হাজার ১৪৭ জন শিক্ষককে চূড়ান্ত করা হয়।

কিন্তু নতুন শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটার বাস্তবায়ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় ইতিমধ্যে ২৪ জেলায় শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত করেছেন আদালত।

এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, স্থগিতাদেশ জারি হওয়া জেলাগুলো ছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮’ পরীক্ষায় নির্বাচিতদের নিয়োগ আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। তবে যেসব জেলায় নিয়োগের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে, সেসব জেলায় এ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হবে।

সূত্র জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিতদের ২০ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে ডাকযোগে নিয়োগপত্র পাঠানো হয়েছে। কোনো প্রার্থীর নিয়োগপত্র জারি না হলে তাদের তালিকা ২০ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাতে বলা হয়েছে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের। ১৬ ফেব্রুয়ারি নতুন শিক্ষকদের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করতে হবে। ১৭ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হবে। আর ১৯ ফেব্রুয়ারি নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের পদায়নের আদেশ জারি করা হবে।

ডিপিইর সহকারী পরিচালক মো. আতিক এস বি সাত্তার বলেন, নিয়োগবিধি অনুসরণ করে এবং কোটার শর্ত পূরণ করেই সব সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ফল প্রকাশ ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিয়োগবিধির কোনো ধরনের লঙ্ঘন হয়নি। এ-সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের কাছে সব তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। তিনি আশা করেন নওগাঁ জেলার বিষয়ে আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে অন্য সব জেলায় নিয়োগে স্থগিতাদেশও আপিল বিভাগে বাতিল হবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮’ পরীক্ষায় নির্বাচিতদের নিয়োগে কোনো ধরনের জটিলতা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন।

২৮ জানুয়ারি সচিবালয়ে নিয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ নওগাঁ জেলায় সহকারী শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ বাতিল করেন। ফলে ওই জেলায় নিয়োগে আর কোনো বাধাই থাকছে না। দেশের আরো ২৪ জেলায় স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। সেগুলোর ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগে আবেদন করতে আমাদের আইনজীবীকে বলা হয়েছে।

সচিব বলেন, নিয়োগবিধি অনুসরণ করে এবং কোটার শর্ত পূরণ করেই সব সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ফল প্রকাশ ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিয়োগবিধির কোনো ধরনের লঙ্ঘন হয়নি। এ সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের কাছে সব তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। আমি আশা করি নওগাঁ জেলার বিষয়ে আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে অন্য সব জেলায় নিয়োগে স্থগিতাদেশও আপিল বিভাগে বাতিল হবে।

আকরাম আল হোসেন বলেন, সব নিয়ম অনুসরণ করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। নারী কোটায় ৬০ শতাংশ, পোষ্য ২০ ও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২০ শতাংশ অনুসরণ করা হয়েছে। তবে যেসব জেলায় পর্যান্ত নারী প্রার্থী পাওয়া যায়নি সেখানে অন্যান্য কোটার মাধ্যমে পূরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, চূড়ান্ত ফলে যারা যোগ্য হয়েছেন তাদের সবাইকে নিয়োগ দেয়া হবে। কাউকে বাদ দেয়া হবে না। তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।