• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২৭ আগস্ট, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

অধ্যক্ষের মুখের ভাষা এমন, ভাবা যায়!

শীর্ষ কাগজ

দীর্ঘকাল ধরেই দেশের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে আছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। আর সেই কলেজের প্রধান ব্যক্তি অর্থাৎ অধ্যক্ষের মুখের ভাষা এমন? সাম্প্রতিক সময়ে ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপকে ঘিরে এ আলোচনা সর্বত্র। সর্বত্র সমালোচনার ঝড় বইছিলো। যদিও মাঝে হেলেনা, পরী, পিয়াসাদের ভীড়ে আলোচনা-সমালোচনাটি অনেকটাই চাপা পড়ে গিয়েছিলো কিন্তু সর্বশেষ গত ১০ আগস্ট হাইকোর্টে এক রিট মামলার শুনানিতে আদালতের বিরূপ মন্তব্যের পর আবারোও এটি আলোচনায় এসেছে। ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের ফোনালাপ বা মুখের ভাষা এটি- কারোই যেন বিশ্বাস হচ্ছিলো না। এমনকি দেশের সর্বোচ্চ আদালত, হাইকোর্টের কাছেও অবিশ্বাস্য ঠেকছিলো। এর কারণেই আদালত এমন মন্তব্য করেছেন, ‘ফোনালাপের অডিও’ ক্লিপের বক্তব্য সত্য হয়ে থাকলে তা খুবই নিন্দনীয় ও অপ্রত্যাশিত। আদালত বলেছেন, একটি কলেজের অধ্যক্ষের কাছ থেকে কেউ এ ধরনের কথা আশা করেন না। 

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের ওপর ওই শুনানি হয়। বর্তমানে ফোনালাপটি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত চলছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১০ আগস্টের শুনানি শেষে আদালত বলেন, ‘আমরা আশা করবো মন্ত্রণালয় ৩০ আগস্টের মধ্যেই তদন্ত শেষ করবে। আদালতের এই অভিপ্রায় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেবেন। আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হলো।’ 
 
ফাঁস হওয়া ওই ফোনালাপের অডিওটি মাত্র ৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের। এই সময়টুকুর মধ্যেই তিনি যেসব গালি এবং ভাষা ব্যবহার করেছেন তাতে যে কারোই অবাক হবার কথা! 
অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ও ভিএনএসসির অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর মধ্যে চলা ওই কথোপকথন পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
কামরুন নাহার : লকডাউনের মধ্যে আমি অফিস করি কি না করি কার বাপের কী? কোন্ শূয়োরের বাচ্চার কি যায় আসে
টিপু : না ...
কামরুন নাহার : কোনো শূয়োরের বাচ্চার যায় আসে কিছু? যদি আমি অফিস না করি? আমি এটা জানতে চাই, কোন খানকির পোলার কী যায় আসে
টিপু : এইডি তো আপনার জিবির (গভর্নিং বডি) লোক।
কামরুন নাহার : কোন খানকির পোলার কী যায় আসে আমি রাজনীতি করা মেয়ে আমি কিন্তু ভদ্র না।
টিপু : না...
কামরুন নাহার : আমি বলে দিলাম, আমি শিক্ষক। আমি প্রিন্সিপাল। আমি সেই দিকটায় আলাদা পরিচয়।
টিপু : এইডি তো আপনের...
কামরুন নাহার : কোনো খানকির পোলা যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু তার গোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়ব।
টিপু : না, আপনের বোধহয় ওই যে জিবির মেম্বারে এইগুলা ছড়ায় কি না দেখেন।
কামরুন নাহার : কোন মেম্বার আর কোন মার ভাতার আমার দেখার কিন্তু বিষয় না। কোনো শূয়োরের বাচ্চা যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু ওর পেছনে লাগব (৪০ সেকেন্ডের জায়গাটা অস্পষ্ট)। আমি শুধু ভিকারুন্নিসা না, আমি দেশছাড়া করব।
টিপু : ঠিক আছে আপা। এইটা ভালো।
কামরুন নাহার : এবং আমি অনেক সহ্য করেছি। এই কালকে সচিবের (শিক্ষা সচিব) কাছে বলে এসেছি। সচিব বলেছে মন্ত্রী তোমাকে খুব ভালোবাসে। তুমি এই জায়গায় থাকবা। আমি বলেছি, স্যার (৫২-৫৪ সেকেন্ড বোঝা যাচ্ছে না)। তুমি এইখানে থাকবা, তুমি যোগ্য, মন্ত্রী তোমাকে পছন্দ করেছে।
টিপু : আইচ্ছা।
কামরুন নাহার : আর কোনো শূয়োরের বাচ্চা তদন্ত কমিটি করলে আমি কিন্তু দা দিয়ে কোপাবো তারে সোজা কথা।
টিপু : হা হা হা।
কামরুন নাহার : আমার দল আছে। আমার বাহিনী আছে। আমার ছাত্রলীগ আছে, যুবলীগ আছে, আমার যুব মহিলা লীগ আছে।
টিপু : আফনে আবার...
কামরুন নাহার : কিন্তু কিচ্ছু লাগবে না। কাপড় খুইলা রাস্তার মধ্যে পিটাব।
টিপু : আফনে আবার আগের চরিত্রে চইলা যাবেন মুকুল আফা। হা হা...
কামরুন নাহার : হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ যাব। যাব। আমি কিন্তু একদম, আমি কিন্তু গুলি করা মানুষ। রিভলবার নিয়া ব্যাগের মধ্যে হাঁটা মানুষ। আমার পিস্তল বালিশের নিচে থাকত। সারারাত পিস্তল আমার বালিশের নিচে থাকত। আমি কিন্তু...
টিপু : আমি নাজমারে (যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার) ফোন করে কইতাসি মুকুল আফা চেইতা গেসে তুমি থামাও। তোমার জিএস রে (হাসি)।
কামরুন নাহার : হ্যাঁ। নাজমা আমারে বলসে। যে কেউ তরে ডিস্টার্ব করলে আমারে খালি বলিস। আমার নাজমাও লাগবে না। নাজমার গ্র“পের শুধু মেয়ে কালকে আমারে পরশু দিন অফিসে বসছি পরে আমারে বলতেছে আপা। আসবেন আমরা কাপড় খুইলা রাস্তার মধ্যে রাইখা পিটাব তারে। তার এত দুঃসাহস আপনার বিরুদ্ধে কথা বলে, আর আপনাকে ডিস্টার্ব করে। ঘরের থেকে টাইনা বাইর কইরা রাস্তার মধ্যে পিটাইয়া কাপড় খুইলা ফেলাব। আমার সম্পর্কে লেখে, আমার ঢাকা পতেঙ্গা ফেয়ারেল গলিতে চাইনিজ খাবার খাওয়াইসি। আর আমার সম্পর্কে লেখে, প্রিন্সিপাল অফিস করে না। কোন কুত্তার বাচ্চার মায়ের কোন ক্ষতি করছি আমি। আমি আমার অফিস করি সচিবকে বইলা। করোনার মধ্যে, করোনার মধ্যে এই। করোনার মধ্যে আমার বারান্দার অফিসে আমি দরজা খুলে বসে থাকি, আমার চেয়ার টেবিল নিয়ে। আমি অফিসে গিয়ে রাউন্ড দিয়ে চলে আসি কর্মচারীরা ঠিকমতো আছে কি না। করোনার মধ্যে অফিসের নিয়ম নাই। আমাকে নিষেধ করছে সারা বাংলাদেশ যে করোনার মধ্যে তোমরা করোনার মধ্যে লকডাউনের বিশেষ করে অফিস খোলা রাখবে না তাহলে করোনা ছড়াইবে। কোন কুত্তার বাচ্চার কী যায় আস্তে কোন শূয়োরের বাচ্চার কী যায় আস্তে আমি অফিসে না গেলে মাগীর বাচ্চারা শূয়োরের বাচ্চারা কি আমার ঘাটায়া মজা পায়? কুত্তার বাচ্চারা কোন শূয়োরের বাচ্চারা চায় যে আমি অফিসে বইসা অফিস করি, তাদের অফ করেন। মাগীর ঘরের মাগী শূয়োরের বাচ্চা।
টিপু : ঠিক আছে আপা।
কামরুন নাহার : আমি রাজনীতি করা মেয়ে।
টিপু : আমি তো আছি আফনে এত...
কামরুন নাহার : আমি কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারে আসছি বলে কিন্তু...
টিপু : আফনের চাইর নাম্বার গেইটের অপজিটে হইল আমার বাসা। এত চিন্তা করেন ক্যান? আমার দুই মিনিট লাগব যদি বসুন্ধরা...।
কামরুন নাহার : আমি কোনো চিন্তা করি না। কারণ আমি নিজেই শক্তিশালী। কোনো খানকি মাগীর কথায় আমি চলি না। কোনো শূয়োরের বাচ্চার কথায় আমি চলি না। আমি নিজেই কিন্তু শক্তিশালী। দলটার আমি প্রেসিডেন্ট ছিলাম। মনে রাইখেন এই দলটা এখন সরকারে। যতদিন এই দলটা আছে ততদিন আমার পাওয়ার আছে। আমি কিন্তু কুত্তার বাচ্চাদের লেংটা করে রাস্তার মইধ্যে পিটাইতে পারব। আমার লাগবে না আমার দলের মেয়েদের ডাকলে দলের ছেলেও লাগব না। মেয়েরাই ওর চুল-দাড়ি ছিঁইড়া প্যান্ট খুলে নামাইয়া দিবে। আমার সম্পর্কে টু করার সাহস যেন না পায়। আমি কিন্তু কোনো অন্যায়ের সাথে বসবাস করি না এইডা মনে রাইখেন।
টিপু : তয় নাসির [গভর্নিং বডির নির্বাচিত সদস্য সিদ্দিকী নাসির উদ্দিন (মাধ্যমিক)]  যে...
কামরুন নাহার : আমার নামে যে লেখে কুত্তার বাচ্চারে আমি অনেক সহ্য করছি।
টিপু : তয় নাসির যে...
কামরুন নাহার : সচিব স্যারকে বলছি অসভ্যরা আমার পেছনে লাগে, আমারে আপনি ঢাকা বোর্ডে পোস্টিং দিয়ে দেন। স্যার বলছে, মন্ত্রী তোমাকে পছন্দ করে। আমারে যদি ধরতে গেলে থাকতেই হবে তাহলে কুত্তার বাচ্চাদের সাথে লইড়াই আমি থাকব।
টিপু : না... নাসির যে এত চিল্লাচিল্লি করল আপনি নাসিররে কিছু কইলেন না ক্যান?
কামরুন নাহার : কোনো নাসির-পাসিররে আমি চিনি না। নাসিররে কী বলব সেটা আমি বুঝি। কোনো কুত্তার বাচ্চা যেন আমার পেছনে লাগে না আপনি নিষেধ কইরে দিয়েন। আপনার সম্পর্কে যারাই বলবে নিষেধ করে দিয়েন।
টিপু : না, তা তো বলবই। আফনে রোববারে ইস্কুলে আইলে আমারে একটু ফোন কইরেন।
কামরুন নাহার : স্কুল করব কি না করব তা আমার এষতিয়ার, আমি বসব কি না বসব। আমি সচিবকে বলছি, সচিব স্যার আমি বাসায় বসে অফিস করি। বলে, যে বাসাটা দেয়া হইসে বাসায় বইসা অফিস করবা। যখন সুবিধা অফিসে যাবা এখন করোনার মধ্যে। তুমি এই নিয়া চিন্তা কইরো না। আমরা অফিস করি না মাসে একবার-দুবার আসি জরুরি মিটিং থাকলে। আর কুত্তার বাচ্চারা সারাক্ষণ কয় আমি অফিসে যাই না, অফিসে যাই না।
ফাঁস হওয়া এই অডিও কথোপকথনকে ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দীর্ঘদিনের সুনাম ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অনেক শিক্ষক, অভিভাবক, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। এ প্রসঙ্গে গভর্নিং বোর্ডের একাধিক সদস্য বলেন, এই অধ্যক্ষ এ বছরের প্রথম দিন যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি প্রতিষ্ঠানে আসেননি বললেই চলে। কেউ যদি তাকে প্রতিষ্ঠানে আসার বিষয়ে অনুরোধ করেন, তিনি (কামরুন নাহার) সবাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তিনি শুধু শিক্ষক নন, বড় রাজনীতিক এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মন্ত্রী, সচিবালয় এবং সরকারের শীর্ষপর্যায় পর্যন্ত তার পক্ষে আছে বলেও দাবি করেন।
গভর্নিং বডির নির্বাচিত সদস্য সিদ্দিকী নাসির উদ্দিন (মাধ্যমিক) বলেন, ‘এ বছরের জানুয়ারির প্রথম দিন যোগদান করেছেন কামরুন নাহার। তিনি শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানবিমুখ। করোনাকালে অনেক শিক্ষার্থীর বাবা-মা এবং অভিভাবক মারা গেছেন। অনেক শিক্ষার্থী আছে কেউ ফুল ফ্রি বা হাফ ফ্রির আবেদন করে। সেগুলোর কোনো সুরাহা করতে অভিভাবকরা অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। গত ছয় মাসে অধ্যক্ষ কোনো প্ল্যান করেননি। অভিভাবকরা আমাদের কাছে নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে আসে। আমরা অধ্যক্ষকে বললে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন। এর আগে তিনি অনেকের সঙ্গেই খারাপ ব্যবহার করেছেন। আমরা বিষয়টি গভর্নিং বোর্ডের সভাপতি ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমানকে জানিয়েছি। তিনি বলেছেন, অডিওটি নিয়ে শিক্ষা সচিবের সঙ্গে কথা বলবেন। সভাপতি যা বলবেন আমরা তাই মেনে নেব।’
অভিভাবক আতিকুর রহমান দর্জী বলেন, ‘ভিকারুননিসা নূন স্কুলের মতো স্বনামধন্য একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের ভাষা এটা হতে পারে না। আমরা সাধারণ অভিভাবকরা অডিওতে তার ভাষা শুনে খুবই মর্মাহত। তিনি যেভাবে যুবলীগ-ছাত্রলীগ আর মন্ত্রী-সচিবের নামে হুমকি দিয়েছেন, এতে আমরা যারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করি তারা চরমভাবে বিব্রত।’
মীর সাহাবুদ্দিন টিপু বলেন, ‘গত ১০ জুন কামরুন নাহারের সঙ্গে আমার কথা হয়। কিছুক্ষণ ভালোভাবে কথা বলার পরই অধ্যক্ষ এভাবে কথা বলতে শুরু করেন। এর কয়েক দিন পর অধ্যক্ষ নিজেই ১৫ বারের বেশি আমাকে ফোন করেন। তিনি আমাকে প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে অথবা তার বাসায় দেখা করতে বলেন। দুই খানেই সিসিটিভি ক্যামেরা আছে এবং কী থেকে কী হয়, এই ভেবে আমি অপারগতা প্রকাশ করি। কারণ এমনিতেই সবাই বলে আমি আপনাকে শেল্টার দিই। তখন তিনি আমাকে বলেন, তাহলে অন্য কোনো জায়গায় দেখা করি। এরপর অফিসার্স ক্লাবে তার সঙ্গে দেখা হয়।’
অধ্যক্ষের এমন ফোনালাপের ভাষায় ভিকারুননিসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাসহ সবাই বিব্রত। সোশ্যাল মিডিয়ায় বলতে গেলে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে। প্রায় সবার একই প্রশ্ন, দেশের এক নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের ভাষা যদি এমন হয়, শিক্ষার্থীরা ভালো আর কি শিখবে? এ থেকে বোঝা যায় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কতটা অধপতন ঘটেছে ইতিমধ্যে!
এই ফোনালাপকে ইঙ্গিত করে মেহেদী হাসান পলাশ ফেইসবুকে লিখেন, ‘অলিম্পিকে যদি স্লাং ব্যবহারের কোন ইভেন্ট থাকতো, তাহলে বাংলাদেশের বিখ্যাত স্কুলের প্রিন্সিপাল স্বর্ণপদক জয় করতে পারতো সন্দেহ নেই।’
লাইলী ইয়াসমিন লিখেন, ‘গুণে গুণে ২/৪ টা গালির শব্দ শিখেছি, তার একটাও এমন অশ্লীল না, তাতেই আমি কিনা পাওয়ার খিঁচে বেড়াই! হায়রে ভিকারুন্নেসার প্রিন্সিপাল! রাজনীতি করলে যদি এমন গালি দিতে জানতে হয়, তাকে মোটেও শিক্ষকতা পেশায় যাওয়া উচিত হয় নি। দেশের নামকরা একটা শিক্ষালয়! উহ! পুরো অডিওটা শুনে মাথা পাগল পাগল লাগছে! এতো ক্ষমতার উৎস কি রাজনীতি? গালিগুলো জেন্ডার সেন্সেটিভ হলেও কথা ছিল!’
নীরা হকের প্রশ্ন, ‘ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ তিনি। মোটামুটি গালির অভিধান মুখস্থ উনার। উনার কাছে থেকে আমাদের ছেলে মেয়েরা কি শিখবে? শিক্ষকদের এমন নৈতিক অধঃপতন হলে জাতি যাবে কার কাছে? কার সঙ্গে কি প্রসঙ্গে এমন গালাগালি করেছেন, তা আমাদের জানার দরকার নেই। কিন্তু একজন অধ্যক্ষ হয়ে আপনার মুখের ভাষা এমন কেন?’
এম আল মামুন লিখেন, ‘মমতাময়ী শিক্ষকের স্থানে যখন .............. বসানো হয়, তখন তার চরিত্র আর আলাপচারিতা কেমন হয়; যাদের জানার আগ্রহ ছিলো বা আছে, আজ তাদের জন্য ভিকারুননিসার প্রিন্সিপালের ফোনালাপ প্রকাশ করা হলো।’
উদ্বেগ প্রকাশ করে সাফফাত বিন শামিম লিখেন, ‘বুঝাই যাচ্ছে কামরুন নাহারের পিছনে বড় কোনো ক্ষমতা আছে। শিক্ষক এমন হলে শিক্ষা ব্যবস্থা যে অন্ধকার গর্তে প্রবেশ করবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না!’
নোমান লিখেন, ‘ভিকারুননিসা নূন স্কুলের অধ্যক্ষ তিনি। গালি অভিধান মোটামুটি তার মুখস্থ। তিনি গুলি করতে পারেন, ব্যাগের মধ্যে পিস্তল নিয়া ঘুরে বেড়াতেন। শিক্ষার্থীরা তার কাছ থেকে ‘খুব ভালো’ শিক্ষা পাবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় এতদিন ভিসিরা নিয়োগ পেতেন, এখন স্কুলের অধ্যক্ষরাও পাচ্ছেন। শিক্ষাব্যবস্থা এগিয়ে যাচ্ছে বায়ুগতিতে!’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক মনে করছেন, তার এই ফোনালাপের কারণে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষক সমাজ আজ কলঙ্কিত হয়েছে। তাই তারা কামরুন নাহারের পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছেন।
শহীদ নামে একজন লিখেছেন, যারা গালাগালিতে পিএইচডির সপ্ন দেখছেন তাদের জন্য উপকারই হলো বটে!
খুব ভালো লাগলো! নারীদের এগিয়ে যাওয়া যে এখন শুধু মুখের বুলি নয় তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ নূন কলেজের ম্যাম। শুধু কি পুরুষরাই গালিগালাজ করবে! পুরুষ শাসিত সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার জন্য এরকম করে গালিগালাজ করতে হবে। জয়.. মুকুল
উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের (বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশ) গভর্নর ফিরোজ খান নুনের সহধর্মিনী ভিকার উন নিসা নূন ঢাকায় মেয়েদের একটি আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুরু করার লক্ষ্যে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন ও তার নামানুসারেই স্কুলটির নামকরণ করা হয়েছে। ভিকারুননিসা স্কুলের সাথে ক্ষেত্রবিশেষে উপমহাদেশের ইতিহাসের সংযোগ রয়েছে। স্কুলটি প্রতিষ্ঠার সমসাময়িক সময়ে শিক্ষা বিস্তার ও প্রসারে অবদান হিসেবে নুন পরিবার একটি তহবিল গঠন করেন যা থেকে উ”চশিক্ষা লাভে আগ্রহী তৎকালীন পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে গমনের জন্য বৃত্তিসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দান করা হত। দীর্ঘদিন থেকেই এই স্কুল অ্যান্ড কলেজটি বাংলাদেশের নামকরা স্কুলগুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে আছে।