• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

চালু হতে যাচ্ছে ৫জি, বাড়বে সুযোগ-সুবিধা

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

পঞ্চম প্রজন্মের ওয়্যারলেস সিস্টেম বা ৫জি মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা চালু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। প্রাথমিকভাবে রাজধানী ঢাকার প্রায় ২০০টি স্থানে এই সেবা পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। দেশে ৫জি সেবা চালু হলে শিক্ষা, চিকিৎসা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ৫জি সেবা দিতে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিটককে ২ হাজার ১৪৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই অর্থ রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত কোম্পানিটি তাদের নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নে ব্যয় করবে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীনে এ প্রকল্পটি শুরু হয়েছে। আগামী ২০২৩ সালের নভেম্বরের মধ্যে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড এটি বাস্তবায়ন করবে।
 
অবশ্য প্রকল্প শেষ হলেই যে ৫জি নেটওয়ার্ক চালু হবে, বিষয়টি এমন নয়। বর্তমানে দেশে কার্যরত ২জি, ৩জি ও ৪জি সেবার অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ চলছে। ৫জি তথা পঞ্চম প্রজন্মের এই সেবা চালুর প্রস্তুতি হিসেবে বেশ কিছু যন্ত্রপাতিও স্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আবার ৫জি নেটওয়ার্ক সেবা পেতে হলে ৫জি সমর্থন করে এমন মোবাইল ফোনেরও দরকার হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষা, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, ব্যাংকিং ও যোগাযোগের সব মাধ্যমে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

৫জি নেটওয়ার্ক সেবা বিশ্বের বেশ কিছু বড় দেশে ইতোমধ্যে চালু রয়েছে। যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, যুক্তরাজ্য, স্পেন, সুইজারল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো এই সেবা দিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে এই সেবাকে আরো কীভাবে উন্নত করা যায়, সেটি নিয়েও কাজ করছে দেশগুলো। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরো অনেক দেশ এই সেবার সঙ্গে যুক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মোবাইল ফোনের পঞ্চম জেনারেশন ইন্টারনেটকে সংক্ষেপে বলা হয় ফাইভজি বা ৫জি। ৪জির তুলনায় অনেক দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট থেকে তথ্য ডাউনলোড-আপলোড করা যায় এই ৫জি সেবায়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ৪জি নেটওয়ার্কের চেয়ে প্রায় ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি গতি দিতে পারে ৫জি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত একটি পরীক্ষা চালানো হয়। এতে ৫জির গতি উঠেছিল ৪ দশমিক ১৭ জিবিপিএস।
 
অনেক হাই ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা হয়ে থাকে ৫জি মোবাইল নেটওয়ার্কে। এর মাধ্যমে একই সঙ্গে একই সময়ে অনেক মোবাইল ফোনে দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। অনেক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা হবে এই ৫জি ব্যবহারের ফলে। মানুষ ও ডিভাইসের মধ্যে তৈরি হবে জিরো ডিসটেন্স কানেক্টিভিটি। এতে প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো যেমন সমৃদ্ধ হবে, তেমনি সহজ হয়ে যাবে প্রযুক্তিনির্ভর অনেক কাজ।

বলা হচ্ছে, ৫জি নেটওয়ার্ক সেবা চালু হলে দেশের চিকিৎসা ও শিক্ষা খাতে উন্নয়ন ঘটবে। পাওয়া যাবে উন্নত টেলিমেডিসিন সেবা। এতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও সহজেই উন্নত চিকিৎসা সেবার সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে। এমনকি দেশের চিকিৎসকের পাশাপাশি বিদেশের অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেও পরামর্শ করা যাবে। ৫জি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস করতে পারবে দেশের প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরাও। অর্থাৎ হাতে মুঠোয় চলে আসবে বিশ্বের নামিদামী সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্লাস।

এর মাধ্যমে দূর হবে প্রযুক্তিগত বৈষম্য। ৫জি নেটওয়ার্কে গেমিংয়ে কোনো প্রকার ল্যাগ ছাড়াই খেলা যাবে। বাফারিং ছাড়াই অনলাইনে হাই রেজ্যুলেউশন বা ৪০০ ভিডিও দেখা যাবে। একই সঙ্গে ডিস্টার্ব ছাড়াই আরো উন্নত ও স্বচ্ছভাবে ভিডিও কল করা যাবে। এ ছাড়া চালকবিহীন গাড়ি, লাইভ ম্যাপ এবং ট্রাফিক তথ্য জানার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে এই ৫জি নেটওয়ার্ক সেবা।