• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

এমপিদের হুঁশিয়ারি প্রধানমন্ত্রীর

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

তৃণমূলে নেতা-কর্মীদের ওপর এমপিদের ‘খবরদারি’ করতে নিষেধ করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় এমপিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নানা সমীকরণে এমপি মনোনয়ন দেওয়া হয়। তারা দলের মনোনয়নে এমপি হন। এমপি হয়েই দলকে তার ইচ্ছামতো পরিচালনায় মরিয়া হয়ে ওঠেন কেউ কেউ। এটা চলবে না। দল চলবে নিজস্ব গতিতে। নিজস্ব বলয় ভারী করতে দলের ভিতরে উপদল তৈরি করবেন না। দীর্ঘ এক বছর পর গতকাল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এমপিদের এমন হুঁশিয়ারি দেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া বৈঠক টানা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে অর্ধশত নেতা অংশ নেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই মাদারীপুরের তিন কেন্দ্রীয় নেতা প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বাহাসে জড়ান। সভায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তৃণমূলে দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর এমপিদের কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাবে ক্ষুব্ধ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, তৃণমূলের দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের দূরে ঠেলে দেন। আবার সব কর্তৃত্ব নিতে কেউ কেউ উপজেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান। সবকিছু এমপিদের নিতে হবে কেন? দলের ওপর এমপিদের এমন খবরদারি চলবে না। দল চলবে নিজস্ব গতিতে। এমপি দলকে সহযোগিতা করবেন। কোনো বাড়াবাড়ি বরদাশত করা হবে না। কে কোথায় কী করছেন, আমার কাছে সব তথ্য আছে। সে বিবেচনায় আগামীতে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।
বৈঠকসূত্র জানান, কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদকদের রিপোর্টে কমপক্ষে ২০-২৫টি জেলায় এমপিদের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের দূরত্ব, কোন্দল-উপদল গঠন করার প্রসঙ্গ উঠে আসে। সম্প্রতি তৃণমূল থেকে আসা বেশ কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় সভানেত্রী বিষয়টি নিয়ে নেতাদের স্পষ্ট বার্তা দেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এমপিদের আলাদা বলয় তৈরি না করার নির্দেশ দেন। সম্প্রতি বিভিন্ন জেলায় বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়েছে। দলীয় সভানেত্রীর কাছে এসব তথ্য আছে বলে তিনি জানান। অনেক এমপির বিরুদ্ধে এলাকার নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনেও বিষয়টি উঠে এসেছে।

বৈঠকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল  ইসলাম শিমুল এমপির দ্বন্দ্ব নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। দীর্ঘদিন দুই নেতা দুই মেরুতে অবস্থান করছেন। এর আগে সভাপতি আবদুল কুদ্দুস অভিযোগ করেছিলেন সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল তাকে নাটোর শহরে ঢুকতে দেন না। এ ছাড়া শিমুলের সঙ্গে জেলার অন্য এমপিদেরও সম্পর্ক ভালো নয় বলে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামালের রিপোর্টে উঠে আসে। পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপির একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও আলোচনা হয়। একই ভাবে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী কোন্দলের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়। ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, মাদারীপুর কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার জেলা। এখানেই কোন্দল বেশি। নবগঠিত উপজেলা ডাসারে জেলা আওয়ামী লীগ একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে। এ কমিটিতে স্থানীয় এমপি ও দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের লোক না থাকায় তিনি নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। দলীয় কোন্দল নিরসনে দলীয় প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন মির্জা আজম। এ সময় দলের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ কোনো কমিটি দেননি বলে দলীয় প্রধানকে জানান। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান অভিযোগ করেন, ‘আমি মাদারীপুর সদরের এমপি, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য। সদরে দলের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। আমাকে দাওয়াত করা হয় না।’ এ সময় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মাদারীপুরে দলের একজন নেতার স্মরণসভায় নাছিমকে প্রধান অতিথি করার কার্ড দলীয় সভানেত্রীকে দেখান শাজাহান খান। একই সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনে তাকে ভাগ দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ করেন দলের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য।

জবাবে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘উনি (শাজাহান খান) দলীয় কর্মসূচি পালন করতে চান না। ডাকলে পাওয়া যায় না। কোনো নেতা মারা গেলে স্মরণ করতে চান না। ছাত্রলীগের সভাপতি বানাতে চান নিজের ছেলেকে। মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বানাতে চান স্ত্রীকে। অন্য সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বে আত্মীয়স্বজনকে চান। উনি আওয়ামী লীগকে পারিবারিক লীগ বানাতে চান।’ এ সময় জবাব দিতে কথা বলা শুরু করেন শাজাহান খান। তবে উভয়কে থামিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। নাছিমের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উনি (শাজাহান খান) জাসদে ছিলেন। তোমরাই তো দলে নিয়ে এসেছ। আমি চেয়েছিলাম উনি জাসদে থেকেই আমার সঙ্গে কাজ করুক। এরপর দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানকে উদ্দেশ করে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনি মুরব্বি। সবাইকে নিয়ে দলটা করবেন। রাজপথে আপনার অনেক অবদান রয়েছে। আমাদের দুঃসময়ে ছিলেন। নৌকা নিয়ে পাঁচবার এমপি হয়েছেন। আপনি কেন ভাগ চাইবেন? সব আপনারই হবে। আপনার করে নিতে হবে। আপনি যদি নাছিম, গোলাপসহ সবাইকে ডাকেন, কেউ আপনাকে ফেলে চলে যেতে পারবে? কেউই উপেক্ষা করতে পারবে না। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ঠাট্টাচ্ছলে বলেন, আগে আপনাকে (শাজাহান খান) আওয়ামী লীগ হতে হবে। পদে থাকলেই হবে না, আওয়ামী লীগকে ধারণ করতে হবে।

নাটোর, পাবনা জেলার কোন্দল নিরসনের জন্য দ্রুত সম্মেলন দিতে নির্দেশনা দেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ৬ নভেম্বর ও পাবনার সম্মেলন ৭ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাকে দ্রত সম্মেলনের তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।

বৈঠকসূত্র আরও জানান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের জেলা সম্মেলন ছাড়া কমিটি ঘোষণার বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, রেওয়াজ অনুযায়ী সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো সম্মেলন ছাড়াই প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করছে। এ কমিটি নিয়ে অর্থনৈতিক মুখরোচক নানা আলোচনাও শোনা যায়। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত।

দলের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও আট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা তাদের রিপোর্ট পেশ করেন। চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক দেশের বাইরে থাকায় এ বিভাগের রিপোর্ট পেশ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুলের প্রসঙ্গ উঠলে তার দেশের বাইরে (বেগমপাড়া) বাড়ি করার প্রসঙ্গটিও আলোচনায় স্থান পায়। এ সময় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের (আওয়ামী লীগের) নামে বিভিন্ন মিথ্যা অপপ্রচার চলছে। এগুলোর সঠিক তথ্য-উপাত্ত দিয়ে জবাব দিতে হবে। আর দেখা যায়, অনেক সময় আমাদের দলের লোকজনও নানা ইস্যুতে বিরোধীদের সঙ্গে সুর মেলান। এতে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হই। এসব করলে চলবে না। মিথ্যাচারের জবাব দিতে হবে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে ষড়যন্ত্র ততই বাড়বে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বিদেশি মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। এ সময় দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদকে এ বিষয়গুলো দেখভালের কথা বলেন তিনি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইতিমধ্যে যাদের ফাঁসি হয়েছে বিদেশে বসবাস করা তাদের সন্তান, বিএনপি ও জামায়াত নেতারা, ব্যারিস্টার রাজ্জাক বিদেশে বসে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সরকারের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

টাকা বিনিয়োগ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে, আলজাজিরা ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাকে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশে কুৎসা রটানো হচ্ছে।

শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী জানান, গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যাইনি করোনার কারণে। এবারও যেতাম না। বেশির ভাগ কার্যক্রম ভার্চুয়ালিই হবে। তবু যাচ্ছি কারণ সেখানে একসঙ্গে অনেক দেশের সরকারপ্রধান উপস্থিত থাকবেন। সরকারের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চলছে সেসবের জবাব দিতে যাচ্ছি।

সভায় বিভিন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় চিঠি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ায় পাবনার একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করা ২০ জন নেতাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানান, বিদ্রোহীদের নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। যারা অতীতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বা দলের প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছেন তাদের দল থেকে একেবারে বহিষ্কার না করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেমন তাকে ভবিষ্যতে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়া বা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে না রাখা ইত্যাদি।

সভার সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক সচরাচর চার মাস বা দুই মাস পর করতাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সেগুলো সময়মতো করতে পারিনি। এখন করোনা কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া আমি গতবার জাতিসংঘের অধিবেশনে যেতে পারিনি। এবার যাচ্ছি। তাই মনে করলাম একটা সভা করি। প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, ১৫ আগস্টে নিহতসহ আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। রীতি অনুযায়ী এরপর সভায় শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।

বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তী (দ্বাদশ) নির্বাচনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। দলের বিভিন্ন উপকমিটির সেমিনারের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচনের যে ইশতেহার হবে, সেখানে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে সেগুলো আপডেট করার জন্য উপকমিটিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় কী কী অন্তর্ভুক্ত করা হবে তা তুলে ধরা।