• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১১ অক্টোবর, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

বিয়ে জালিয়াতিতে ফেঁসে গেলেন নাসির-তামিমা

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

বিতর্কই যেন ক্রিকেটার নাসির হোসেনের পছন্দ। একের পর এক নারী ঘটিত কেলেঙ্কারিতে ক্যারিয়ার শেষ হতে চলেছে তার। তবুও যেন সেখান থেকে বেরোতে পারছেন না তিনি। তাইতো ক্রিকেটারদের ‘ব্যাড বয়’ তকমাটি যেন একদম ঘায়ে মেখে নিয়েছেন নাসির। কিছু দিন আগে হুমায়রা সুবাহ নামে এক মডেলের সঙ্গে যা হয়েছে সেটা না হয় না-ই বললাম। তবে সব ভুলে বাংলাদেশের ফিনিশার হিসেবে খ্যাত নাসির হোসেন সম্প্রতি বিয়ে করেছেন এটা যেন এক ধরনের স্বস্তি ছিলো ক্রিকেট ভক্তদের কাছে। যদিও সেই স্বস্তিকে হারাম করে আবারো সমালোচনার জন্ম দিলেন সেই ব্যাড বয় নাসির।

এবার নাসিরের বিয়ে ঘিরে সৃষ্ট হয়েছে নতুন বিতর্ক। তামিমা সুলতানা নামে যে নারীর সাথে তার বিয়ে হয়েছে তিনি নাকি ১১ বছরের সংসার ফেলে গাঁটছড়া বেঁধেছেন এই ক্রিকেটারের সাথে। এমনকি ডিভোর্সও দেননি পূর্বের স্বামীকে। সে ঘরে রয়েছে তার ৮ বছর বয়সী এক কন্যাও। এমনও শোনা যায় ওই সংসার ছাড়াও অন্য জায়গায় ৬ মাস সংসার করেছেন নাসিরের স্ত্রী তামিমা। এটা নিয়ে ব্যাপক সালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়ায়। সে সময় নাসির ও তামিমা সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে নাসির জানান,  তিনি সব কিছু যেনেই তামিমাকে বিয়ে করেছেন। তবে  তামিমা আগের স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়েই বিয়ে করেছেন একথা সত্যিই নয়। তামিমার আগের স্বামী রাকিবকে ডিভোর্স দেয়ার পরেই তাদের বিয়ে হয়েছে। এ সময় তারা কিছু নথিপত্র দেখান। কিন্তু তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব নথিপত্র ভোয়া বলে দাবি করেন এবং আদালতে মামলা করেন। এরপর সেই মামলার তদন্তের ভার পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। পিবিআইর তদন্তে এবার বেরে এসছে থলের বিড়াল।

নাসির-তামিমার পরকীয়া ‘ব্যাভিচার’, বিয়েতে যত জালিয়াতি
২০১৬ সাল। তখনও কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মি রাকিব হাসানের স্ত্রী। তামিমা কাজ করতেন সৌদিয়া এয়ারলাইন্সে। সে সুবাদে বেশিরভাগ সময় বিদেশেই থাকতে হতো তাকে। ওই সময় ফেসবুকে পরিচয় হয় ক্রিকেটার নাসির হোসেনের সঙ্গে। এরপর থেকে প্রায়ই কথা হতো দুজনের। ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি তামিমা বাংলাদেশে এসে গুলশান-২ এর একটি রেস্তোরাঁয় দেখা করেন নাসিরের সঙ্গে। এরপর দুজনই নিয়মিত কথাবার্তা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে নাসির-তামিমার মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের আগে তারা বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকবার দেখা করেন। পিবিআইর তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। পিবিআইয়ের কাছে নাসির ও তামিমা- দুজনই জবানবন্দি দেন।

জানা যায়, ব্যবসায়ী রাকিব-তামিমা ও তার পরিবারসহ ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত উত্তরার ৯নং সেক্টরের একাধিক বাসায় একসঙ্গে ছিলেন। ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে রাকিবের ভাড়া বাসা, হোটেল ও আত্মীয়-স্বজনের বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় ছিলেন তামিমা। যদিও তামিমার দাবি, তিনি রাকিবকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ডিভোর্স দিয়েছেন।
পিবিআইয়ের কাছে জবানবন্দিতে তামিমা বলেন, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে হোটেল লা মেরিডিয়ানে রাকিবের সঙ্গে তার অনেকবার দেখা হয়েছে। এছাড়াও ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই হোটেল লা মেরিডিয়ানের রিজারভেশন রুম নম্বর ১০১৭-তে রাকিব ‘অ্যাকমপ্যানিং গেস্ট’ হিসেবে তার (তামিমা) সঙ্গে একদিন ছিলেন।

এদিকে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ শেষ হয় তামিমার পাসপোর্টের মেয়াদ। পরে নবায়নের সময় স্বামীর নাম রাকিব হাসানই উল্লেখ করেন তামিমা। ২০১৬ সালে ডিভোর্স হয়ে থাকলে স্বামীর নাম রাকিব হাসান লেখার আইনগত বৈধতা নেই বলে জানায় পিবিআই। 


এছাড়া চাকরির সমস্ত নথি, মেডিকেল কার্ড, সৌদি আইডি কার্ড, লাইসেন্স, আইডেনটিফিকেশন কার্ড- সব জায়গাতেই স্বামীর নাম রাকিব হাসান ব্যবহার করেছেন তামিমা।
পিবিআইকে দেয়া জবানবন্দিতে নাসির জানান, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে নাসিরের সঙ্গে পরিচয় হলেও তামিমা ওই বছরের শেষ দিকে রাকিবের সঙ্গে তামিমার বিয়ের বিষয়টি তাকে জানান। বিয়ের বিষয়ে তামিমা অস্বস্তিবোধ করতেন। চেষ্টা করতেন এড়িয়ে যাওয়ার। পরে ২০২০ সালের শেষের দিকে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের হাভেলি রেস্তোরাঁয় ২০ লাখ ১০০ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে করেন নাসির-তামিমা। নাসির ও তামিমা বিয়েতে বড় ধরনের জালিয়াতি করেছেন, যা পিবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। মুসলিম বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন বিধিমালা ২০০৯-এর ২৫ ধারা মোতাবেক, বিয়ে ও তালাক যে স্থানে সম্পন্ন হয়েছে সেই স্থানের নাম উল্লেখ করতে হয়।  কিন্তু তদন্তে নেমে পিবিআই পেয়েছে, নাসির ও তামিমার বিয়ে হয়েছে ঢাকার উত্তরায়। কিন্তু তাদের কাবিননামায় ‘বিবাহ কার্যনিষ্পন্ন স্থান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ঘারিন্দা ইউনিয়ন কাজী অফিস টাঙ্গাইল সদর। টাঙ্গাইলের ৩নং ঘারিন্দা ইউনিয়নের নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী দেলোয়ার হোসাইন এই বিয়ে নিষ্পন্ন করেন। পিবিআইকে দেয়া জবানবন্দিতে নাসির আরও জানান, সব জেনেই তামিমাকে তিনি বিয়ে করেছেন। বিয়ের আগে তামিমার স্বামী রাকিবের সঙ্গে তার (নাসির) কখনো দেখা বা কথা হয়নি। তবে ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাকিবের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে একবার কথা হয়েছে বলে জানান নাসির।

এদিকে রাকিবের সঙ্গে তামিমার তালাক নোটিশ নিয়েও করা হয়েছে জালিয়াতি। তালাক নোটিশ দিলেও তামিমা ও তার মা সুমি ছিলেন রাকিবের বাসায়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মির বিয়ে অবৈধ উল্লেখ করে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তালাক যথাযথ হয়নি জেনেও নাসির বিয়ে করেছেন তামিমাকে। তামিমা রাকিবকে তালাক দেননি। আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিশও পাননি। তামিমা উল্টো জালিয়াতি করে ডাকবিভাগের তালাকের নোটিশ তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেয়ার ফলে তামিমা তাম্মী এখনও রাকিবের স্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন। দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তাম্মীর বিয়ে অবৈধ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এরআগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালতে তাম্মির সাবেক স্বামী মো. রাকিব হাসান মামলাটি করেন। পরে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে নথি পর্যালোচনা শেষে মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। 

অবৈধ বৈবাহিক সম্পর্ক, আইনে যে শাস্তি
মুসলিম আইন অনুযায়ী, ‘ নাসির হোসেন ও কেবিন ক্রু তামিমার এ রকম বিয়ে বৈধ বলে গণ্য হবে না। এই বিয়ে বাতিল বা অবৈধ বিবাহ বলে গণ্য হবে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ‘অন্য কারো সঙ্গে বিয়ে করতে চাইলে প্রথমে তাকে ডিভোর্স নিতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট সময় অতিক্রমের পর সেই নারী বিয়ে করতে পারবে। চাইলেই ডিভোর্সের পরদিনই বিয়ে করতে পারবে না। এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’

১৮৬০-এর ৪৯৩ থেকে ৪৯৮ ধারা পর্যন্ত এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এ আইনের ৪৯৪ ধারা অনুসারে, স্বামী বা স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় পুনরায় বিয়ে করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উক্ত ধারা মোতাবেক, স্বামী বা স্ত্রী বর্তমান থাকাবস্থায় পুনরায় বিয়ে করলে, তা সম্পূর্ণ বাতিল বলে গণ্য হবে এবং এই অপরাধ প্রমাণিত হলে, প্রতারণাকারী স্বামী বা স্ত্রী ৭ বছর পর্যন্ত কারাদ- এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে। তবে, এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। যদি স্বামী বা স্ত্রী ৭ বছর পর্যন্ত নিরুদ্দেশ থাকেন এবং জীবিত আছে মর্মে কোন তথ্য না-পাওয়া যায়। এমন পরিস্থিতিতে পুনরায় বিয়ে করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। এছাড়া কোন স্বামী বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগণের অনুমতি নিয়ে বিশেষ কোন কারণ দেখিয়ে বিশেষ কোন পরিস্থিতিতে সালিসি পরিষদের কাছে আবেদন করলে সালিসি পরিষদ তা যাচাই সাপেক্ষে, পরবর্তী বিয়ের অনুমতি দিতে পারে। সেক্ষেত্রে পুনরায় বিয়ে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।

আগের বিয়ের কথা গোপন রেখে, প্রতারণার মাধ্যমে যদি পুনরায় বিয়ে করে তবে যাকে প্রতারণা করে বিয়ে করা হল- তিনি অভিযোগ করলে তা ৪৯৫ ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে। আবার কেউ জেনে শুনে, অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করলে উক্ত বিয়ে দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা মোতাবেক সম্পূর্ণ বাতিল বিয়ে। এক্ষেত্রে, তা দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা মোতাবেক ব্যভিচার হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অপরাধ প্রমাণ হলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হতে পারে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, সাধারণতঃ ডিভোর্স কার্যকর হতে ৩ মাস সময় লাগে। তাই শুধু ডিভোর্স দিলেই হবে না। ডিভোর্স কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত পুনরায় বিয়ে করার সুযোগ নেই। 

বৌ-শাশুড়িসহ জেলে যেতে পারেন নাসির
ব্যবসায়ী রাকিব হাসানের সঙ্গে বিবাহ থাকাবস্থায় তার কেবিন ক্রু স্ত্রী তামিমাকে ক্রিকেটার নাসির হোসাইন বিয়ে করার অভিযোগের মামলায় দাখিলকৃত প্রতিবেদনে প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারা আছে। সেক্ষেত্রে আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক জামিন মঞ্জুর করতে পারেন আবার নামঞ্জুর করে কারাগারেও পাঠাতে পারেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দাখিলকৃত প্রতিবেদন অনুযায়ী তামিমার মা সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে সর্বাধিক ছয়টি ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার কথা বলেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। ধারাগুলো হলো- বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮, ৪৭১, ৪৯৪, ৪৯৭, ৪৯৮ ও ৫০০ ধারা। যে ধারাগুলোর সর্বোচ্চ শাস্তি ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। তার মধ্যে ৪৬৮, ৪৯৪ ও ৪৯৭ ধারা জামিন অযোগ্য।

অন্যদিকে তামিমার বিরুদ্ধে পাঁচটি ধারায় অপরাধ প্রমাণ হওয়ার কথা বলেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। ধারাগুলো হলো- বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮, ৪৭১, ৪৯৪, ৪৯৭ ও ৫০০ ধারা। যে ধারাগুলোর

সর্বোচ্চ শাস্তি ২৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। তার মধ্যে ৪৬৮, ৪৯৪ ও ৪৯৭ জামিন অযোগ্য।
আর নাসিরের বিরুদ্ধে চারটি ধারায় অপরাধ প্রমাণ হওয়ার কথা বলেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। ধারাগুলো হলো- বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৯৪, ৪৯৭, ৪৯৮ ও ৫০০ ধারা। যে ধারাগুলোর সর্বোচ্চ শাস্তি ১৬ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। তার মধ্যে ৪৯৪ ও ৪৯৭ জামিন অযোগ্য।

দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারায় স্বামী বা স্ত্রী বর্তমান থাকাবস্থায় পুনরায় বিবাহ করার অপরাধের জন্য ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, ৪৯৭ ধারায় অপরের স্ত্রী জানার পরও তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ব্যাবিচারের জন্য পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, ৫০০ ধারায় মানহানি ঘটানোর জন্য দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, ৪৬৮ ধারায় প্রতারণার উদ্দেশ্যে জাল নথি তৈরির জন্য সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, ৪৭১ ধারায় কোনো নথি জাল জেনেও তা সত্য বলে ব্যবহারের জন্য দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৪৯৮ ধারায় বিবাহিত নারীকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়া বা আটক রাখার জন্য দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান আছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে তামিমার অপরাধ সম্পর্কে বলা হয়, তামিমা সুলতানা তার মা সুমি আক্তারের সহযোগিতায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া তালাকের নোটিশ তৈরি করেন। এরপর তা বাংলাদেশ ডাক বিভাগে পাঠানো হয়েছে মর্মে ভুয়া রশিদ তৈরি করেন মায়ের সহযোগিতায়। তারপর নোটিশ ও রশিদ সত্য হিসেবে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেন। এরপর বাদী রাকিবের সঙ্গে তার বিয়ে বলবৎ রয়েছে জানার পরও আসামি মো. নাসিরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ও তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন হয়। সর্বশেষ তিনি রাকিবের সঙ্গে তামিমার তালাক, রশিদ ও নাসিরের সঙ্গে বিবাহর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাদির মানহানিতে সহযোগিতা করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে নাসিরের অপরাধ সম্পর্কে বলা হয়, তামিমা সুলতানার সঙ্গে বাদীর বৈবাহিক সম্পর্ক বলবৎ থাকার বিষয়টি জেনে বুঝে তামিমার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে অবন্ধ হন এবং শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। বাদীর স্ত্রী তামিমাকে নিজের হেফাজতে রাখেন এবং সর্বশেষ বাদীর স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী বলে সংবাদ সম্মেলন করে বাদীর মানহানি ঘটান।

তদন্ত প্রতিবেদনে তামিমার মা সুমি আক্তারের অপরাধ সম্পর্কে বলা হয়, মেয়ে তামিমা ও রাকিবের মধ্যে তালাকের নোটিশ জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করান এবং তা সত্য বলে উপস্থাপন করান। এরপর বাদী রাকিবের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে বলবৎ থাকাবস্থায় আসামি মো. নাসিরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করান ও তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করান। সর্বশেষ বাদীর স্ত্রীকে নিজের হেফাজতে রাখেন এবং বাদীর স্ত্রীকে আসামির নাসিরের স্ত্রী বলে সংবাদ সম্মেলন করে বাদীর মানহানি ঘটান।