• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ১০ নভেম্বর, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

‘বকশিস কম পেয়ে’ অক্সিজেন খুলে নেওয়ায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু!

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

পঞ্চাশ টাকা বকশিস কম দেওয়ায় অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ায় বিকাশ চন্দ্র (১৭) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। 

মঙ্গলবার রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের তৃতীয়তলায় সার্জারি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। 

এদিকে এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা চড়াও হলে আনসাররা এগিয়ে আসেন। এ সময় আসাদুজ্জামান দুলু নামে অভিযুক্ত ওই কর্মচারী পালিয়ে যায়।

বুধবার সকালে সদর থানার ওসি সেলিম রেজা এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বকশিস কম দেওয়ায় হাসপাতালের খণ্ডকালীন কর্মচারী এ অপরাধ করেছে। স্কুলছাত্রের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শজিমেকের উপপরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, জরুরি বিভাগের একজন মেডিকেল অফিসারের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। অভিযোগের সততা পেলে খণ্ডকালীন কর্মচারী দুলুর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, মৃত বিকাশ চন্দ্র গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুটিমারী গ্রামের বিশু চন্দ্র কর্মচারের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। সংসারে অভাবের কারণে বিকাশ লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করত। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সে বাইসাইকেলে বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ওই ছাত্র মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। তাকে প্রথমে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাত ১০টার দিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

বিকাশের কাকা শচীন চন্দ্র কর্মকার জানান, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কাজ শেষে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অক্সিজেনসহ ভাতিজাকে তৃতীয়তলায় সার্জারি বিভাগে নেওয়া হয়। ট্রলি বহনকারী হাসপাতালের কর্মচারী আসাদুজ্জামান দুলু বেডে পৌঁছে দেওয়ার পর ২০০ টাকা বকশিস দাবি করে। বিকাশের বাবা ১৫০ টাকা দিলে দুলু আরও ৫০ টাকার জন্য বাকবিতণ্ডা শুরু করে।

টাকা দিতে না পারায় ক্ষুব্ধ দুলু বিকাশের অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলে। তাকে মাস্ক লাগাতে অনুরোধ করলে সে অস্বীকৃতি জানায়। বাধ্য হয়ে নিজেরা মাস্ক লাগালোর চেষ্টা করেন। এ সময় নাক-মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে বিকাশ মারা যায়। চিকিৎসক এসে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এ সময় রোগীর লোকজন ওই দুলুর ওপর চড়াও হলে কর্তব্যরত আনসারদের সহযোগিতায় সে পালিয়ে যায়। বিকাশের কাকা শচীন চন্দ্র কর্মকার এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। 

সিলিমপুর মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শামিম হোসেন জানান, রোগী মারা যাওয়ার পর হাসপাতালে উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন তারা তৃতীয়তলায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এর আগেই অভিযুক্ত কর্মচারী পালিয়ে যায়। মৃত স্কুলছাত্র বিকাশের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

সদর থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, এ ঘটনায় মামলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।